পারিবারিক কলহ, অভাব-অনটন ও মানসিক চাপ থেকে এ ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে আদালতে এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
বুধবার (৯ জুলাই) বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে মুন্সীগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশিকুর রহমানের কাছে শান্তা স্বেচ্ছায় হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।
এর আগে মঙ্গলবার নিহত দুই শিশুর চাচা আলামিন বাদী হয়ে শ্রীনগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) মো. ফিরোজ কবির জানান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিরাজদিখান থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. আমিনুল ইসলাম জিজ্ঞাসাবাদকালে শান্তার কাছ থেকে বারবার ভিন্ন তথ্য পাচ্ছিলেন। প্রথমে স্বামীকে দোষারোপ করলেও তদন্তে বেরিয়ে আসে তিনি-ই খুনের মূল হোতা।
আরও পড়ুন: বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী ২ ভাই নিহত
তদন্তে জানা যায়, দুই বছর আগে শান্তা ও সোহাগের বিয়ে হয়। গর্ভধারণের পর থেকেই শান্তা বেশিরভাগ সময় বাবার বাড়িতে থাকতেন। যমজ সন্তান জন্মের পর স্বামীর বাড়িতে ফেরেন। কিন্তু স্বামীর স্বল্প আয়ে সংসার চালানো, শিশুদের খরচ নিয়ে দাম্পত্য কলহ চরমে পৌঁছায়।
পুলিশ জানায়, শান্তা বেগমের সাথে শিশুদের বাবা মো. সোহাগ শেখকে আটক করে থানায় রাখা হলেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ না থাকায় পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
গত ৭ জুলাই সন্ধ্যায় স্বামীকে খাবার, দুধ ও ওষুধ আনার অনুরোধ করেন শান্তা। এতে ফোনে তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। রাগের বশে শান্তা ঘরে ঘুমন্ত শিশুদের কোলে নিয়ে হেঁটে হেঁটে একপর্যায়ে ঘরের পাশের পুকুরে প্রথমে লামিয়া ও পরে সামিয়াকে ফেলে দেন। পরে নিজেই পরিস্থিতি ধামাচাপা দিতে নানা কৌশল অবলম্বন করেন। ভয় ও অনুশোচনায় দিশেহারা হয়ে স্বামীকে ফাঁসাতে নানা নাটক সাজানোর চেষ্টা করলেও পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে একপর্যায়ে স্বীকার করেন সত্য ঘটনা।
আরও পড়ুন: হবিগঞ্জে স্কুলছাত্র জনি হত্যার আসামি সাজু মিয়ার ওপর আদালতে হামলা
পুলিশ জানায়, শান্তার দেখানো মতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত স্থানে তল্লাাশি চালিয়ে উদ্ধার করা হয়েছে শিশুদের কাপড়সহ বিভিন্ন আলামত। এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।