মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া কর্মকর্তা উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানা গেছে।
গ্রেফতার দুজন হলেন: বিথী হাওয়া ওরফে বিবি হাওয়া (৩৮) ও তার মেয়ে সুরভী সুলতানা (২০)। গত ৭ এপ্রিল প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে মিথ্যা নাটক সাজিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগে দুজনের বিরুদ্ধে নিউমার্কেট থানায় মামলা করেন সৈকত আলী নামের এক দোকানি।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, নিউমার্কেট থানাধীন মিনিতা প্লাজা নামক শপিং সেন্টারে সৈকত আলীর একটি ঘড়ির দোকান রয়েছে। বিথী ও তার মেয়ে সুরভী ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকেলে সৈকতের দোকানে ঘড়ি কিনতে আসেন। এ সময় তাদের সঙ্গে সৈকতের স্ত্রীর পরিচয় হয়। বিথী সৈকতের স্ত্রীকে নিজের মেয়ে বলে সম্বোধন করেন। পরবর্তীতে মোবাইল ফোনে তারা যোগাযোগও করেন।
২০ মার্চ সৈকতের দোকানে বিথী আসেন এবং তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ তাই তার মেয়ে সুরভীকে কাজে নেয়ার প্রস্তাব দেন। সৈকত সুরভীকে কাজে নিলেও তার আচরণ সন্দেহজনক হওয়ার দোকানে আসতে নিষেধ করেন।
কিন্তু নিষেধ করার পরও ২২ মার্চ সুরভী দোকানে আসেন। অসুস্থতার কথা বলে কিছুক্ষণ পর চলে যেতে চাইলে বিকেল ৫টায় সৈকত সুরভীকে বাসে তুলে দেন। ওইদিন রাত ৮টায় বিথী মোবাইল ফোনে সৈকতকে জানান তার মেয়ে সুরভী বাসায় পৌঁছাননি এবং তার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না। কিছু সময় পর বিথী আবার ফোনে সৈকতকে জানান তার মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে এবং মুক্তিপণ হিসেবে ২০ লাখ টাকা দাবি করছে।
আরও পড়ুন: চেক প্রতারণার মামলায় জামালপুরে বিএনপি নেতার কারাদণ্ড
যেহেতু সুরভী তার দোকানে কাজ করতে গিয়ে হারিয়েছেন তাই তার মেয়েকে মুক্তিপণের টাকা দিয়ে উদ্ধার করতে বলেন বিথী। যদিও পরদিন দুপুরে সুরভী সৈকত ও তার স্ত্রীকে জানান তিনি কৌশলে পালিয়ে এসেছেন। এ সময় অপরিচিত ফোন থেকে কল করে সৈকতের স্ত্রীকে জানানো হয় সুরভীর মাকে অপহরণকারীরা আটক করে রেখেছেন এবং সে যদি আসে তাহলে সুরভীর মাকে উদ্ধার করা যাবে।
সৈকতের স্ত্রী ঘটনাস্থলে যেতে না চাইলে তাকে ফোন করে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি দেখানো হয় এবং সেইসঙ্গে ২০ লাখ টাকাও দাবি করা হয়। টাকা না দিলে সৈকতের ব্যবসার ক্ষতি হবে বলে হুমকিও দেয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মামলার পর নিউমার্কেট থানার একটি টিম তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করে। সোমবার সোয়া ১০টায় এলিফ্যান্ট রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিথী ও সুরভীকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুজনই ঘটনার সঙ্গে নিজেদের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছেন।
চক্রটির সঙ্গে জড়িত অন্যদেরও গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছে ডিমএমপি।
]]>