দেশের শীর্ষস্থানীয় জাতীয় পত্রিকায় বুধবার (১৯ নভেম্বর) প্রকাশিত কিছু খবর নিচে তুলে ধরা হলো।
পত্রিকাগুলো ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড, আওয়ামী লীগের রাজনীতির ভবিষ্যত, ব্যাংক খাত ও রাজধানীজুড়ে চলমান নানা সহিংসতাসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ ছেপেছে।
রাজধানীতে বাড়ছে হত্যাকাণ্ড - দৈনিক ইত্তেফাকের প্রধান সংবাদ এটি।
এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশেই হত্যাকাণ্ড বেড়েছে। চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে রাজধানীতে ১৯৮টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। তবে পুলিশ সদর দফতর বলছে, এই ১০ মাসে রাজধানীতে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে ৩৭১টি। শুধু ঢাকা নয়, গোটা দেশেই হত্যাকাণ্ড বেড়েছে বলে পুলিশ সদর দপ্তরের পরিসংখ্যানে উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে ডিএমপি ও পুলিশ সদর দফতরের দেয়া এই পরিসংখ্যান নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে পত্রিকাটি। প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়েছে, গত কয়েকদিনে কয়েকটি আলোচিত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। রাজনৈতিক নেতারাও হত্যার শিকার হচ্ছেন। হত্যার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে অপরাধীরা অনেক বেশি তৎপর।
অনুশোচনা নেই শেখ হাসিনার - দৈনিক প্রথম আলোর প্রধান সংবাদ এটি।
এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরও ঘৃণা বা বিদ্বেষপূর্ণ (হেইট স্পিচ) বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণার সময় এটি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন ট্রাইব্যুনাল। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি অবজ্ঞাসূচক বা তাচ্ছিল্যপূর্ণ বক্তব্য দিচ্ছেন, এটিও ঘোষিত রায়ে বলা হয়েছে।
ঘোষিত রায়ে ট্রাইব্যুনাল বলেছেন, শেখ হাসিনার মধ্যে কোনো অনুশোচনা নেই। তিনি ক্ষমাও চাননি; বরং তিনি ‘হেইট স্পিচ’-এর মাধ্যমে সময়ে-সময়ে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন।
শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফেরাতে আইনি পদক্ষেপে বাংলাদেশ - দৈনিক সমকালের গুরুত্বপূর্ণ সংবাদগুলোর মধ্যে এটি একটি।
এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাই অভ্যুত্থানের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনতে আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে বাংলাদেশ। ঢাকা ও দিল্লির মধ্যকার প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় তাদের ফেরত আনতে চিঠি প্রস্তুত করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলেও নোটিশ পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
ভারতকে চিঠি পাঠানোর বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের চিঠির সঙ্গে রায়ের অনুলিপি পাঠানো হবে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাংলাদেশ রায় পাঠাবে না। নোট ভারবাল (চিঠি) হিসেবে পাঠানো হবে। চিঠি দেওয়া হয়েছে কিনা- উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, প্রস্তুত হচ্ছে। হয়তো আজকে (মঙ্গলবার) পাঠানো হবে।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বন্দিবিনিময় সহজ করতে ২০১৩ সালের ২৮ জানুয়ারি বন্দি প্রত্যর্পণ চুরি হয়। এর প্রায় আড়াই বছর পর প্রথম বন্দি হস্তান্তরের ঘটনা জানা যায়। ২০১৫ সালে ২৪ ঘণ্টার বাবধানে হস্তান্তর করা হয় অনুপ চেটিয়া ও নূর হোসেনকে। এর প্রায় এক যুগ পর প্রত্যর্পণ চুক্তি আলোচনায় এলো ভারতে আশ্রয় নেয়া ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর।
আ. লীগের ভবিষ্যৎ কোনদিকে - দৈনিক যুগান্তরের প্রধান সংবাদ এটি।
এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের পর দলটির ভবিষ্যৎ রাজনীতি কী হবে-দেশের রাজনীতিতে এখন এ নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। দলটির সমর্থকদের পাশাপাশি সুধী সমাজের মধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ কি? দলটি কি টিকে থাকবে? থাকলে কার নেতৃত্বে টিকে থাকবে সে প্রশ্নও সামনে আসতে শুরু করেছে। বলা হচ্ছে, শেখ হাসিনার রাজনৈতিক মৃত্যু ঘটেছে। কারণ শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগ যাই বলুক না কেন, এটাই এখন বাস্তবতা। বাংলাদেশের বিদ্যমান আইনকানুন মেনেই এ বিচার সম্পন্ন হয়েছে। যদিও ভারতে পলাতক থাকায় হাসিনার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার পথে অনেক বাধা রয়েছে; কিন্তু দলটির রাজনীতি কার নেতৃত্বে চলবে, নাকি এখনকার মতো দুর্বল অবস্থায় টিকে থাকবে সে প্রশ্নে নানা আলোচনা ও জল্পনা-কল্পনা ডালপালা মেলতে শুরু করেছে।

কেউ বলছেন, সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীকে দেওয়া হতে পারে আপৎকালীন নেতৃত্ব। পাশাপাশি দ্বিতীয় প্রধান ব্যক্তি হিসাবে সাবেক এমপি সাবের হোসেন চৌধুরীর নাম নিয়ে রাজনীতিতে আলোচনা আছে। এর বাইরে কেউ কেউ কারাগারে থাকা নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর কথাও বলছেন। তবে এই সবকিছুই ভারতে পালিয়ে থাকা আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনার ওপর নির্ভর করছে। তিনি সবুজ সংকেত না দিলে দলের সামনে আসতে কেউ রাজি হবেন না।
বিদেশিদের কবজায় বন্দর! - দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রধান সংবাদ এটি।
এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের বন্দরগুলো বাংলাদেশের অর্থনীতির রক্তপ্রবাহ হিসেবে পরিচিত। গত কয়েক দশকে অর্থনীতির যে উত্থান ও প্রসার, তার নেপথ্যে বড় ভূমিকা রাখছে চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন বন্দর। রাজস্ব আয়, পণ্যের অবাধ চলাচল আর সহনীয় ফি ও মাশুলের কারণে ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের কাছে বন্দরের গুরুত্ব বাড়লেও এখন এমনভাবে তা বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে যে, সামনে বন্দরই হতে পারে অর্থনীতির গলার কাঁটা।

গোপন চুক্তির মাধ্যমে চট্টগ্রামসহ কয়েকটি বন্দরের সাতটির মধ্যে পাঁচটি টার্মিনালই তুলে দেওয়া হয়েছে বিদেশিদের হাতে। আপত্তির মুখে গোপনে এরই মধ্যে তড়িঘড়ি করে ৩০ বছর মেয়াদি কঠিন চুক্তিও সম্পন্ন হয়েছে। ফলে বন্দরের এসব টার্মিনাল ব্যবহারের সব নিয়ন্ত্রণ চলে যাচ্ছে বিদেশি কোম্পানির হাতে।
যারা ফি ও মাশুল আরোপসহ যেকোনো ধরনের কড়াকড়ি আরোপ করতে পারবে। এতে দেশের অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
রাষ্ট্রায়াত্ব ব্যাংকের কার্যক্রম সীমিত হয়ে এলেও নেই সংস্কারের উদ্যোগ - বণিক বার্তার প্রধান সংবাদ এটি।
এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত দেড় দশকে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী সরকারের শাসনামলের অনিয়ম-দুর্নীতিতে বিপর্যস্ত ব্যাংকগুলোর একটি জনতা ব্যাংক পিএলসি। রাষ্ট্রায়ত্ত এ ব্যাংকের বিতরণকৃত ঋণের তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি এখন খেলাপি।
নগদ অর্থের তীব্র সংকটে থাকা এ ব্যাংক কেবল গত বছরই ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি নিট লোকসান গুনেছে। ঋণ দেয়ার মতো অবস্থা না থাকায় ব্যাংকটির ১৪ হাজারের বেশি কর্মীর এখন তেমন কোনো কাজ নেই। কর্মীদের কেউ কেউ কেবল দৈনন্দিন লেনদেন ও আমানত সংগ্রহে কাজ করলেও তাদের অনেকে প্রায় অলস সময় কাটাচ্ছেন।
২০০৯ সাল-পরবর্তী সময়ে লুটপাটে দেউলিয়া হয়ে পড়া বেসিক ব্যাংক গত এক যুগে ৫ হাজার ৫১৩ কোটি টাকা নিট লোকসান গুনেছে। প্রায় ৭০ শতাংশ খেলাপি ঋণ নিয়ে ধুঁকতে থাকা এ ব্যাংকে কর্মরত রয়েছেন দুই হাজারের বেশি কর্মী। এক যুগের বেশি সময় ধরে এ কর্মীদের বড় অংশের তেমন কোনো কাজ নেই। সময় যত যাচ্ছে বেসিক ব্যাংকের আর্থিক পরিস্থিতি ও লোকসানের ক্ষত তত গভীর হচ্ছে।
]]>
১ সপ্তাহে আগে
৪






Bengali (BD) ·
English (US) ·