অনলাইন পণ্য ডেলিভারির পরিসরের সঙ্গে বাড়ছে কাজের সুযোগ

১ সপ্তাহে আগে
দেশে ধীরে ধীরে বাড়ছে অনলাইন পণ্য ডেলিভারির পরিসর। আর এতে রেস্তোরাঁ, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা এবং শপ-পার্টনাররা নিজেদের ডিজিটাল পরিসরে তুলে ধরে বাড়াতে পারছেন আয়ও। পাশাপাশি কাজের সুযোগ ও জীবিকা নির্বাহের পথ তৈরি হয়েছে হাজারো রাইডারের জন্য। বছরে ১০ শতাংশের বেশি করে বাড়ছে এ খাতের পরিসর।

দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে ওঠা এই সেবাকে আরও সহজলভ্য করতে ইন্টারনেটের দাম কমানোর তাগিদ খাত সংশ্লিষ্টদের। কর্মসংস্থান ও আয়ের উৎস বিবেচনায় সরকারকে নীতি সহায়তা ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নে সরকারকে কাজ করার পরামর্শ দিচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা।


হুট করে চাকরি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন রোকন। উপায় না পেয়ে ওয়াকিং রাইডারের চাকরি নেন একটি ফুড ডেলিভারি কোম্পানিতে। দুই বছরেই ঘুরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। নিজের খরচ মেটানোর পাশাপাশি এখন রশদ যোগাচ্ছেন পরিবারেও।


ফুড ডেলিভারিম্যান রোকন উদ্দিন খান রোপক বলেন, শুরুর দিকে পথ-ঘাট চেনা এবং অ্যাপের সঙ্গে সামঞ্জস্য করে চলা টাফ ছিল। এখন আলহামদুলিল্লাহ ভালোই চলছে। প্রথম মাসে ২৪ হাজার টাকার উপরে আয় হয়েছে। ফুড ডেলিভারি কোম্পানিগুলো থেকে একটু এফোর্ট দিলে নিজের খরচের পাশাপাশি পরিবারের দায়িত্ব নিতে পারবো।


রবিউলের গল্পটা একটু ভিন্ন হলেও প্রাপ্তিটা একইরকম। ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নের পেছনে রবির প্রয়োজনীয় খরচটা আসে ফুড ডেলিভারি করেই।


ক্রিকেট খেলোয়াড় ও ফুড ডেলিভারিম্যান রবিউল ইসলাম বলেন, ক্রিকেট খেলোয়াড়দের বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতির দরকার হয়। আমি ফুডপান্ডায় ডেলিভারি করে যে টাকাটা ইনকাম করি সেখান থেকে আমি আমার স্বপ্নের পেছনে খরচ করতে পারি।


কেবল রাশিদুল কিংবা রবি নন, সারাদেশে হাজারো তরুণের আয়ের পথ এখন অনলাইন ডেলিভারি প্লাটফর্ম।


বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, অনলাইনে খাবার কেনার সুযোগ তৈরি হওয়ায় ক্রেতারা সহজেই পছন্দের রেস্তোরাঁ, রেস্টুরেন্ট কিংবা হোটেলে দিচ্ছেন অর্ডার। এতে বাড়ছে আয়ও।


আরও পড়ুন: সৌদিতে ফুড ডেলিভারি করতে গিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যুবকের মৃত্যু

 

কাচ্চি ভাইয়ের স্বত্তাধিকারী সোহেল সিরাজ বলেন, অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অল্প কিছু সময়ের মধ্যে অ্যাপের মাধ্যমে অর্ডার দিতে পারবে। চাইলে পেমেন্টও করতে পারবে। এতে সময় সাশ্রয় হবে কাস্টমারের। ফুড পান্ডার মাধ্যমে এক্সট্রা কিছু সেল আমরা করতে পারছি।


সুমি'স হট কেকের পরিচালক এম ইমরান শেখ বলেন, ওদের থেকে একটা অ্যামাউন্ট পাচ্ছি এটা তূলনামূলক ভালো এবং এতে আমাদের উপকার হচ্ছে।


সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্য, দেশে ফুড ডেলিভারি সেবার পরিসর বছরে বাড়ছে ১০ শতাংশেরও বেশি। একটি শীর্ষস্থানীয় বৈশ্বিক ডেটা প্ল্যাটফর্ম বলছে, ২০২৯ সালের মধ্যে প্রবৃদ্ধির হার ১৭ দশমিক ৩২ শতাংশ হারে বাড়তে পারে।


এরইমধ্যে অনেকটাই কেটে গেছে মালামাল ও পরিবহনগত সমস্যা। বেড়েছে গ্রাহকের আস্থা। তবে, ডিজিটাল প্লাটফর্মে এই সেবার আওতা দ্রুত বাড়াতে ইন্টারনেট খরচ কমানো দরকার বলে মনে করেন খাত সংশ্লিষ্টরা।


ফুডপান্ডা বাংলাদেশের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আম্বারীন রেজা বলেন, একটা ছিল কনজ্যুমার অ্যাওয়ারনেস, ট্রাস্ট বিল্ডিং এবং তাদেরকে সার্ভিসটা দিয়ে সেটিসফাই করা। বাংলাদেশে জিডিপি পার ক্যাপিটা তুলনায় ইন্টারনেট কস্ট হাইয়েস্ট। এখানে আমাদের সরকারের অনেক কাজ আছে। ইন্টারনেটের কস্ট কমাতেই হবে।


কর্মসংস্থান ও আয়ের সুযোগকে সামনে রেখে নীতি সহায়তা নিয়ে সরকারকে কাজ করার তাগিদ দিচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা।


সারাদেশে নিবন্ধিত ফুড ডেলিভারি সেবা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় শতাধিক। যার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ফুডপান্ডা।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন