অধ্যাপক মুসতাকের শাস্তি দুই মাসের জন্য স্থগিত, হাইকোর্টের রুল জারি

২০ ঘন্টা আগে
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক মুসতাক আহমেদের বিরুদ্ধে সিন্ডিকেটের নেওয়া পাঁচ বছরের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত দুই মাসের জন্য স্থগিত করেছেন উচ্চ আদালত। একইসঙ্গে আদালত রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, তার বিরুদ্ধে নেওয়া সিদ্ধান্ত কেন ‘অবৈধ ও ক্ষমতার অপব্যবহার’ হিসেবে ঘোষণা করা হবে না।

গত ২০ জুলাই হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি ফয়েজ আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।


এর আগে, চলতি বছরের ৯ মার্চ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের ৫৩৭তম সভায় অধ্যাপক মুসতাক আহমেদের বিরুদ্ধে একাধিক শাস্তিমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সিদ্ধান্তগুলোতে ছিল- পদোন্নতিতে নিষেধাজ্ঞা, বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি স্থগিত, প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা, এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিকৃত অর্থ ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে পরিশোধের নির্দেশ। সেই সঙ্গে পাঁচ বছরের জন্য কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরি, খণ্ডকালীন শিক্ষকতা বা দায়িত্ব পালনেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। উল্লিখিত সময়কাল সক্রিয় চাকরি হিসেবেও গণ্য হবে না বলে সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত দেয়।


এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সংবিধানের ২৭, ২৯, ৩১, ৩২ ও ৩৫ অনুচ্ছেদ লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন অধ্যাপক মুসতাক আহমেদের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রিটে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, বিভাগের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতিপক্ষ করা হয়।


শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজুর রহমান ও খান জিয়াউর রহমান এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আল ফয়সাল সিদ্দিকী। অন্যদিকে রিটকারী অধ্যাপকের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। শুনানি শেষে আদালত সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত দুই মাসের জন্য স্থগিত রাখেন এবং রিট আবেদনকারীকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিপক্ষদের নোটিশ পাঠানোর নির্দেশ দেন।


এ বিষয়ে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোজাম্মেল হোসেন বকুল বলেন, 'এ বিষয়ে আমার কোনো করণীয় নেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।'


আরও পড়ুন: রাবির শিক্ষক নিয়োগে জামায়াতের সাবেক এমপির সুপারিশের ছবি ভাইরাল!


বিশ্ববিদ্যালয়ের লিগ্যাল সেলের প্রশাসক অধ্যাপক মো. আবদুর রহিম মিয়া বলেন, 'হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আমরা ইতোমধ্যে আপিল করেছি। তবে এখনো শুনানির তারিখ নির্ধারিত হয়নি।'


অন্যদিকে অধ্যাপক মুসতাক আহমেদ বলেন, 'আমি ন্যায় বিচারের পক্ষে। এজন্য আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি। আদালত তথ্য প্রমাণ বিশ্লেষণ করে যে রায় দেবেন, আমি তা মাথা পেতে নেব।'


উল্লেখ্য, গত বছরের সেপ্টেম্বরে ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা আর্থিক দুর্নীতি ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে অধ্যাপক মুসতাকের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক আন্দোলন শুরু করেন। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে এবং সেই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতেই সিন্ডিকেট শাস্তিমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন