ঢাকার সিএমএম আদালতের নির্দেশে সকাল ১০টার দিকে ফরিদপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফজলে রাব্বির উপস্থিতিতে শহরের গোয়ালচামটে নিজ বাসভবনের সামনে থেকে মিঠুর মরদেহ উত্তোলন করা হয়। এ সময় ঢাকার রামপুরা থানা থেকে আসা এসআইয়ের নেতৃত্বে একটি বিশেষ টিমসহ কোতোয়ালি থানা পুলিশের একটি দল উপস্থিত ছিল।
নিহত মিঠু ফরিদপুর জেলা শহরের গোয়ালচামটের মোল্লা বাড়ি এলাকার বাসিন্দা শরীফ সামসুল আলম মন্টুর ছেলে। স্ত্রী ও একমাত্র মেয়েকে নিয়ে তিনি ঢাকার উত্তরায় থাকতেন। তিনি জেলা বিএনপির সাবেক কমিটির সম্পাদক পদে ছিলেন।
স্বজনরা জানান, জুলাই-আগস্টে শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলন দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সশস্ত্র হামলা চালায়। এ অবস্থায় ১৯ জুলাই দুপুরে ঢাকার বনশ্রী এলাকায় গুলিতে প্রাণ হারান মিঠু। ওইদিন দুপুরে বনশ্রী জামে মসজিদে জুমার নামাজ পড়ে চারপাঁচজন সঙ্গীর সঙ্গে তিনি ফিরছিলেন। পথে হেলিকপ্টার থেকে চালানো গুলি তার বুকের কাছ দিয়ে শরীর ভেদ করে পিঠের দিক দিয়ে বের হয়ে যায়। দ্রুত বনশ্রী ক্লিনিকে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই সময় আন্দোলনে হতাহতদের নিয়ে স্বজনরা ব্যাপক ভোগান্তির মুখে পড়ছিলেন। তাই মিঠুর গুলিতে প্রাণ হারানোর তথ্য হাসপাতালে নথিভুক্ত না করে, মরদেহ ফরিদপুরে নিয়ে আসা হয়। ওই রাতেই তাকে বাড়ির সামনে দাফনও করা হয়।
আরও পড়ুন: গুলিতে নিহত: ১১ বছর পর জামায়াত-শিবিরের তিন কর্মীর মরদেহ উত্তোলন
এ ঘটনায় গত বছরের ৯ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ১৪৮ জনের নামোল্লেখ করে ঢাকার সিএমএম আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন মিঠুর স্ত্রী রোহেদুন সেজবা ইভা। ওই মামলায় মাস দেড়েক আগে আদালত কবর থেকে জান শরীফ মিঠুর মৃতদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়। তবে সে সময় মিঠুর পরিবার কবর থেকে মরদেহ উত্তোলনে রাজি না হওয়ায় ময়নাতদন্তের এ কাজ বিলম্বিত হয়।
নিহত মিঠুর স্ত্রী রোহেদুন সেজবা ইভা বলেন, স্বামীর মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে আবার কাটাছেঁড়া করা হবে এটি মেনে নেয়া আমাদের জন্য কষ্টকর ছিল। কিন্তু স্বামী হত্যার বিচার পেতে হলে এছাড়া কোনো ভিন্ন উপায় ছিল না। তাই সবার অনুরোধে আমরা রাজি হই।