৭৫ বছরে পা রাখলো মোংলা বন্দর, বর্ণাঢ্য আয়োজনে তুলে ধরা হলো সক্ষমতা

১৯ ঘন্টা আগে
আজ ১লা ডিসেম্বর মোংলা সমুদ্র বন্দরের ৭৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। নানা উৎসব ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে এ দিনটি পালন করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ উপলক্ষে সকাল সাড়ে ১১ টায় কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উদ্যেগে শোভা যাত্রা বের হয় বন্দর এলাকায়। এ সময় বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে প্রতিষ্ঠাবাষির্কীর উদ্বোধন করেন বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এ্যাডমিরাল শাহীন রহমানসহ বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

বন্দর সূত্র জানায়, ১ ডিসেম্বর বাংলাদেশের দ্বিতীয় মোংলা সমুদ্র বন্দরের ৭৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ১৯৫০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বরের গেজেট নোটিফিকেশন বলে ১ডিসেম্বর ১৯৫০ সালে চালনা পোর্ট নামে এ বন্দর প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ১৯৮৭ সালের পোর্ট অব চালনা অথরিটি এ্যাক্ট অনুসারে প্রথমে চালনা বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং পরবর্তীতে মোংলা পোর্ট অথরিটি নামে প্রতিষ্ঠত হয়।

 

৭৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও তারুণ্যের উৎসব পালন উপলক্ষে উচ্ছ্বাসপূর্ণ লগ্ন বিবেচনায় রাত ১২টা ১ মিনিটে বন্দরে অবস্থানরত দেশি-বিদেশি সকল জাহাজে এক মিনিট বিরতিহীন হুইসেল বাজানো হয়।

 

মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী হিসেবে সর্বোচ্চ জাহাজ কয়লা, মাসুল প্রদান, সার, সাধারণ পণ্য, গ্যাস, কন্টেইনারবাহী জাহাজ আনয়নকারী, গাড়ির জাহাজ, মালামাল হ্যান্ডলিংসহ ইত্যাদি বিষয়ে বিশেষ অবদান রাখার জন্য বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ২৯ টি প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা প্রদান করে বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান শাহীন রহমান।

 

আরও পড়ুন: মোংলায় বিদেশি জাহাজ থেকে চুরি হওয়া কয়লা উদ্ধার, আটক ১২

 

এছাড়া বন্দরের কৃতিত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ বন্দরে ১৩ জন কর্মকরতা-কর্মচারীকে এবং ঝুঁকিপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ ৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। গত বছরের ২০২৪ থেকে ২০২৫ সালে এ পর্যন্ত পি,আর,এল ভোগরত ৫৬ জন কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বিদায় সংবর্ধনাও দেয়া হয়।

 

বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এ্যাডমিরাল শাহীন রহমান বলেন, বর্তমানে আধুনিক যন্ত্রপাতি সংগ্রহের ফলে প্রতি ঘণ্টায় ২৪টিরও বেশি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হচ্ছে এবং জেটির সম্মুখে নিয়মিত ড্রেজিং এর ফলে নাব্যতা বিরাজমান থাকায় ৫টি জোটতে একই সাথে ৫টি বানিজ্যিক জাহাজ হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হচ্ছে। বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী প্রতিবেশী দেশে ট্রানজিট পণ্য মোংলা বন্দরের মাধ্যমে আমদানি-রফতানির সুদূরপ্রসারী সুসম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

 

তিনি আরো বলেন, মোংলা বন্দরে ইতোমধ্যে স্থাপিত হয়েছে Port Reception Faciliti (PRF) প্রকল্প। সম্পন্ন হয়েছে যা উদ্বোধনের জন্য অপেক্ষমান রয়েছে। এর ফলে এ অঞ্চলে তেলবাহী কোনো জাহাজ বা ট্যাংকার থেকে দুর্ঘটনা বশতঃ পানিতে তেল নিঃসরণ হলে তেল অপসারণকারী ভেসেলের মাধ্যমে তা সংগ্রহ করে নদী ও সামুদ্রীক পরিবেশকে দূষণ থেকে রক্ষা করার সক্ষমতা অর্জন করবে মোংলা বন্দর।

 

আরও পড়ুন: সাড়ে ৪ মাসে ৪৪ লাখ মেট্রিক টন পণ্য খালাস মোংলা সমুদ্র বন্দরে

 

উল্লেখ্য, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রাণপ্রবাহ এ বন্দরটি কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি বর্তমানে খাদ্যশস্য, সিমেন্ট ক্লিংকার, সার, মোটর গাড়ী, মেশিনারিজ, চাল, গম, কয়লা, তেল, পাথর, ভুট্টা, তেলবীজ, এলপিজি গ্যাস আমদানি এবং সাদামাছ, চিংড়ি, পাট ও পাটজাত দ্রব্য, হিমায়িত খাদ্য, কাকড়া, ক্লে, টাইলস, রেশমী কাপড় ও জেনারেল কার্গো রফতানির মাধ্যমে দেশের চলমান অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রেখে আসছে সম্ভাবনাময় এ মোংলা সমুদ্র বন্দরটি।

 

বিশ্বমানের নিরাপদ ও আধুনিক বন্দর ব্যবস্থাপনা। বন্দরের আধুনিকায়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বিশ্বমানের বন্দরে রূপায়ন করা, চ্যানেলে নাব্যতা বৃদ্ধি ও সংরক্ষণ, কার্গো ও কন্টেইনার সংরক্ষণের সুবিধাদি বৃদ্ধি এবং আধুনিক সরঞ্জাম সংগ্রহসহ নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে এ বন্দরকে আন্তর্জাতিক ও ব্যাবসায়ী বন্দরে রুপান্তি করার লক্ষ্যে কাজ করছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন