২০০৬ সালে নির্মিত এই ব্রিজটি ছিল ওই এলাকার একমাত্র প্রধান সড়ক যোগাযোগ। ব্রিজ ধসে পড়ার পর থেকে ৪০ গ্রামের কৃষিপণ্য যথাযথ মূল্য পাচ্ছে না; বাজারে বিক্রির সময় প্রতি মণে প্রায় ৫০ টাকা কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। রোগী সেবা, শিক্ষা ও ব্যবসা কার্যক্রমও ব্যাপক ব্যাহত হচ্ছে।
শুলাকৈর বাজারের অর্ধশতাধিক দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ব্রিজের অভাবে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ গ্রামের কৃষকগণ কাঁচা মরিচ, সরিষা, ভুট্টা জাতীয় পণ্য বিক্রিতে হারান অর্থ, ফসলও নষ্ট হয়। বিকল্প রাস্তা অনেক দূর ও অনিরাপদ হওয়ায় যোগাযোগে অতিরিক্ত সময় ও খরচ হচ্ছে।
ভুক্তভোগী আজাহার মিয়া বলেন, '৬ বছর আগে বন্যার পানির তীব্র স্রোতে ব্রিজের একটি পিলার ও তিনটি স্প্যান ভেঙে পড়েছে। এরপর থেকে এই ব্রিজের ওপর দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে মাদারগঞ্জ উপজেলার সিধুলী, আদারভিটা ইউনিয়নসহ কামরাবাদ ইউনিয়নের ৪০ টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। রোগী হাসপাতালে নিতে পারছি না, স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করে, যা স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তার জন্য খুবই উদ্বেগজনক।'
নৌকা পারাপারে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ সময় ও ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। মোছা. ফারজানা বেগম বলেন, 'ঘাটে এসে একঘণ্টা বসে থাকতে হয়, ওপারে নৌকা থাকলে এসে যাওয়ায় আরও একঘণ্টা সময় লাগে। আগে ব্রিজ দিয়ে নদী পার হতে ২ মিনিট সময় লাগত, এখন সময় লাগে কয়েক ঘণ্টা।'
আরও পড়ুন: দুই বছরেও চালু হয়নি জামালপুর পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, অযত্নে নষ্ট হচ্ছে যন্ত্রপাতি
ব্রিজের পাশে চা বিক্রেতা শাহীন বলেন, 'আগে এখানে প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা বিক্রি হতো, এখন ২০০-৩০০ টাকাও বিক্রি হয় না। প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ হাজার মানুষের চলাচল ছিল। এই ব্রিজের ওপর কেন্দ্র করে বড় বাজার গড়ে উঠেছিল, প্রায় ৫০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল, এখন প্রায় সব বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্রিজের সংস্কার চাই।'
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) জামালপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী রোজদিদ আহমেদ বলেন, '২০১৯ সালের বন্যায় ব্রিজের তিনটি স্প্যান ও একটি পিলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা নতুন ব্রিজ নির্মাণের প্রস্তাবনা সদর দপ্তরে পাঠিয়েছি। বরাদ্দ পাওয়া গেলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে। নতুন ব্রিজ নির্মাণের জন্য আনুমানিক ২৫ থেকে ৩০ কোটি টাকা ব্যয় হবে।'