রোববার (০১ জুন) ঢাকার আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডার) কার্যালয়ে ‘চীন-বাংলাদেশ বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্মেলন’ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলন বিডার নির্বাহী বলেন, পাওয়ার কোম্পানির সাথে ইকোনোমিক জোনের দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। আর চীনা বিনিয়োগকারীরা বলেছেন, বাংলাদেশের এ ধরনের পরিবর্তন বা সংস্কার দরকার ছিল। ভবিষ্যতে এ ধরনের বিনিয়োগে রাজনৈতিক প্রভাব ফেলবে না।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন দেশ থেকে বিনিয়োগ আনতে পারলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মজবুত হবে। যেমন বাহেরচরের কৃষি প্রকল্প ছাড়াও পাওয়ার চায়নার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি এবং চায়নার জন্য এদেশে স্পেশাল ইকোনোমিক জোন গড়ে তুলতে আমরা কাজ করছি।
এ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চায়নার নতুন আশা দেখা যাচ্ছে। আগামী ৬ থেকে ২৪ মাসের মধ্যে তাদের কাছ থেকে বিনিয়োগ পাব ও আশা প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: ছয় মাসে বিদেশি বিনিয়োগ ৭৫৬ মিলিয়ন ডলার: বিডা
তিনি বলেন, এত বড় প্রতিনিধি দল, একটা দেশ থেকে আমরা আগে কখনও দেখিনি। আমরা একটা নতুন আশার আলো দেখতে পাচ্ছি। আমরা একটা নতুন মাত্রার আগ্রহ চীনা বিনিয়োগকারীদের থেকে দেখতে পাচ্ছি। সেই আগ্রহের ফলাফল হিসেবে আমরা এ গ্রুপটাকে পেলাম। আজকে সর্বমোট চীনের ১৪৩টি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ২৫০ জন বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ছিলেন। বাংলাদেশেরও অনেক ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী ছিলেন। সবমিলিয়ে প্রায় ৫০০ এর মতো অতিথি অংশ নিয়েছেন।
চীনের যে কোম্পানিগুলো এসেছিল, তাদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন খাতে বেশ বড় ধরনের কোম্পানি। আজ বেশ কিছু বিটুবি এবং বিটুজি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা একটা দ্বিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছি ‘পাওয়ার চায়না’র সাথে অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের। চাঁদপুরের একটা কৃষিভিত্তিক প্রকল্পের জন্য সমঝোতা স্মারকটা স্বাক্ষরিত হয়েছে। অনেকদিন ধরেই এটা নিয়ে কাজ হচ্ছিল, কিন্তু আমরা সরকারে এসে দেখলাম প্রকল্পটা ঝুলে আছে। বেশ কিছু সিদ্ধান্তের কারণে প্রকল্পটা এগোচ্ছিল না। এখন ওখানে তারা গিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে প্রকল্পটা দেখবেন। আশা করছি, সেখানে বেশ কিছু মানুষের কর্মসংস্থানও হবে। বিশেষ করে নারীদের। ধীরে-ধীরে সেখানে কর্মসংস্থান আরও বাড়বে। সব মিলিয়ে আমরা মনে করছি এই সফরটা আমাদের জন্য একটা মাইলফলক, একটা ঐতিহাসিক সফর।
তবে বিনিয়োগ নিয়ে আসা একটা লম্বা প্রক্রিয়া এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমি কারও কাছে প্রত্যাশা করি না যে, ওনারা আজকেই একটা বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাবেন। আমরা এটা আগেও অনেকবার বলেছি। বিনিয়োগের যাত্রাটা একটা লম্বা প্রক্রিয়া। তো সেটার প্রথম ধাপটা হচ্ছে ওনাদের বাংলাদেশে নিয়ে আসা। বাংলাদেশের পরিবেশের সাথে পরিচিত করানো। আমাদের সাথে পরিচিত হওয়া, ব্যবসায়ীদের সাথে পরিচিত হওয়া। ব্যাংক, আইনি প্রতিষ্ঠান, কর নীতিনির্ধারকদের সাথে পরিচিত হওয়া এবং কিছু কারখানা পরিদর্শন করা, যেটা ওনারা কালকে করবেন।
আগামী ছয় মাস থেকে দুই বছরের মধ্যে কিছু সত্যিকারের বিনিয়োগের প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বিডা চেয়ারম্যান ফের বলেন, বাংলাদেশে যেসব চীনা ব্যবসায়ী ইতোমধ্যেই আছেন, সফলতার সাথে ব্যবসা করছেন তাদেরও ওনাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছি। কারণ, তারাই এখানে আমাদের বড় প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবে একটা ভূমিকা রাখতে পারেন।