৫৮ বছর বয়সেও থামার নাম নেই কাজুয়োশি মিউরা’র

৩ সপ্তাহ আগে
এবার বুঝি তিনি থামবেন; কেননা, পায়ের চোটে তাকে মাঠের বাইরে থাকতে হয়েছিলো ৬ মাস। কিন্তু কীসের চোট আর কীসের বয়স, সবকিছুকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে আবারও মাঠে ফিরলেন তিনি। নতুন মৌসুমে প্রথমবার মাঠে নেমে জাপানের ৫৮ বছর বয়সী ফুটবলার কাজুয়োশি মিউরা জানিয়ে দিলেন, এখনই থামার কোনো ইচ্ছে তার নেই।

গত ফেব্রুয়ারিতে ৫৮ বছর পূর্ণ হয়েছে জাপানিদের প্রিয় ‘কিং কাজু’র। অনেক দিন ধরেই সবচেয়ে বেশি বয়সী পেশাদার ফুটবলারের তকমা লেগে আছে তার সঙ্গে। সেটিই আরও পাকা পোক্ত হয়েছে নতুন মৌসুমে পথচলা শুরুর পর। কাজুয়োশি মিউরা’র পেশাদার ক্যারিয়ারের ৪০তম মৌসুম এটি। 

 

গত জুনে জাপানের চতুর্থ স্তরের ক্লাব সুজুকায় ধারে দেড় বছরের চুক্তি করেন মিউরা। তবে জানুয়ারিতে পায়ে চোট পাওয়ার পর থেকেই মাঠের বাইরে ছিলেন তিনি। জাপানি ফুটবল লিগ সিস্টেমের চতুর্থ ধাপ ‘জাপান ফুটবল লিগ’ শুরু হয়েছে গত মার্চে। কিন্তু চোটের কারণে বাইরেই ছিলেন মিউরা। অবশেষে তার অপেক্ষার অবসান হলো গত রোববার (১৫ জুন)।

 

ইয়োকোহামার বিপক্ষে সুজুকার ২-১ গোলের জয়ের ম্যাচে শেষদিকে মাঠে নামানো হয় মিউরাকে। অনেক দিন ধরেই তিনি স্রেফ বদলি হিসেবেই মাঠে নামেন। মাঠে তার উপস্থিতি থাকে স্রেফ কয়েক মিনিটের। তবে এই বয়সে পেশাদার ফুটবল চালিয়ে যাচ্ছেন, এটাই বা কম কিসে! 

 

আরও পড়ুন: খাদ্যে বিষক্রিয়ায় ইতালিতে ২১ ফুটবলার অসুস্থ, হাসপাতালে ১৬

 

ম্যাচের পর জাপানি সংবাদ সংস্থা কিয়েদোকে কাজুয়োশি মিউরা বলেছেন, এখান থেকে নতুন করে আরও এগিয়ে যেতে চান তিনি। ‘আরও ম্যাচ খেলতে চাই আমি, নিজের মানসিকতা মেলে ধরতে চাই। সবার সমর্থন ও সহায়তায় ফিট হয়ে উঠে এই ম্যাচটি খেলতে পেরেছি। এখান থেকে আবার নতুন উদ্যমে এগিয়ে যেতে চাই।’ 

 

১৯৮৬ সালে পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু করেন মিউরা। ১৫ বছর বয়সে জাপান থেকে ব্রাজিলে পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি। সান্তোসের হয়ে শুরু করেছিলেন নিজের ক্যারিয়ার। 

 

সান্তোসের পর পালমেইরাস ও ব্রাজিলের বিভিন্ন ক্লাবে তিনি খেলেছেন ১৯৯০ সাল পর্যন্ত। এরপর তিনি ফিরে আসেন নিজ দেশে। ১৯৯৪ সালে প্রথমবার ইউরোপের ক্লাব জেনোয়ায় খেলার সুযোগ পান তিনি। পরে খেলেছেন ক্রোয়েশিয়ার দিনামো জাগরেবে। এছাড়া খেলেছেন অস্ট্রেলিয়া ও পর্তুগালেও। 

 

১৯৯০ সালে জাপানের জাতীয় দলে অভিষেক হয় কাজুয়োশি মিউরা’র। ১৯৯৪ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে ১৩ ম্যাচ খেলে ১৩ গোল করেছিলেন তিনি। কিন্তু সেবার বাছাইপর্ব পেরোতে পারেনি জাপান। ১৯৯৮ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বেও তিনি গোল করেছিলেন ১৪টি। আর সেবারই প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায় জাপান। কিন্তু তাকে বিশ্বকাপ স্কোয়াডে রাখা হয়নি। তাকে নিয়ে তখন বিতর্কের তোলপাড় পড়ে যায় জাপানে। 

 

আরও পড়ুন: জয় দিয়ে ক্লাব বিশ্বকাপ মিশন শুরু চেলসির

 

নব্বইয়ের দশকে জাপানের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফুটবলার ছিলেন তিনি। তখন ভক্তদের কাছ থেকে ‘কিং কাজু’ নাম পেয়ে যান মিউরা। 

 

দেশের হয়ে ৮৯ ম্যাচে ৫৫ গোল করেছেন কাজুয়োশি মিউরা। এখনও যা জাপানের ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। জাতীয় দলের জার্সিতে সবশেষ তিনি খেলেছেন ২০০০ সালে। জাতীয় দল থেকে অবসরের ২৫ বছর পরও এখনও পেশাদার ফুটবল খেলে যাচ্ছেন তিনি। 

 

সবচেয়ে বেশি বয়সে পেশাদার ফুটবলে খেলার বিশ্বরেকর্ড গড়তে অবশ্য আরও অনেক বছর খেলতে হবে তাকে। ২০২০ সালের অক্টোবরে ৭৪ বছর ৩৪৮ দিন বয়সে মাঠে নেমে রেকর্ডটি গড়েছেন মিশরের এজেলদিন মোহামেদ আলি বাহাদের।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন