৩২ জুলাই: মাঠে নামেন শিল্পীরা, কড়া বার্তা দেন শিক্ষকরাও

১ সপ্তাহে আগে
ক্যালেন্ডারের পাতায় দিনটি ছিল পহেলা আগস্ট। কিন্তু স্বজন হারানো, মামলা, হামলা, বুলেট, টিয়ারশেল, আর গ্রেফতারে নাজেহাল জন মানুষের কাছে তখনো শেষ হয়নি রক্তাক্ত জুলাই। শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে তখন এক কাতারে গোটা দেশ। এ যেন অন্য এক বাংলাদেশ, যার দিকে পুরো পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়।

ছাত্র-জনতা এদিনের নাম দেন ৩২ জুলাই। সকাল থেকে বৃষ্টিতে ভিজে গণসংগীত, পথনাটক, দেয়াললিখন, স্মৃতিচারণা ও বিক্ষোভ সমাবেশের মধ্য দিয়ে গোটা দেশ পালন করে ‘রিমেম্বারিং আওয়ার হিরোজ’ কর্মসূচি। সমাবেশ করেন অভিনয়শিল্পী ও কলাকুশলীরাও। তাদেরও বাঁধা দেয় পুলিশ।

 

শিল্পীরা বলেন, সরকার যে বর্বর পন্থায় শিক্ষার্থীদের ন্যায়সংগত আন্দোলনকে দমন করেছে, তা কোনো গণতান্ত্রিক সভ্য সমাজে ঘটতে পারে না।

 

এদিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বের করা বিক্ষোভ মিছিল থেকে গোয়েন্দা পুলিশ তিন শিক্ষার্থীকে আটক করলে তাদের ছিনিয়ে নেন শিক্ষকরা।

 

এদিন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক সেলিম রেজা বলেন, ‘আমি তো এখানে হাইজ্যাক করে ছেলেদের চ্যাংদোলা করে তুলে নিতে দেখলাম। এটা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, আমরা যতক্ষণ বেঁচে আছি, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা এটা হতে দেব না। এই বাহিনী কারা, আমরা এর জবাব চাই।’

 

আরও পড়ুন: জুলাই সনদের দাবিতে রাতেও শাহবাগে অবরোধ

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত শিক্ষক সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘আর একটি গুলি যেন না চলে, গ্রেফতার না হয়।’

 

৩২ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজন করা হয় শিক্ষক সমাবেশ।

 

এদিকে দুপুরে ডিবি কার্যালয় থেকে ছেড়ে দেয়া হয় আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম, আসিফ মাহমুদ, বাকের মজুমদার ও নুসরাত তাবাসসুমকে। সমন্বয়করা আর নিরাপত্তা শঙ্কায় ভুগছেন না, তাই তাদের চলে যেতে দেয়া হয়েছে বলে জানান, তৎকালীন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

 

এ সময় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোটা আন্দোলন ইস্যুতে আটক শিক্ষার্থী ও নিরাপরাধীদের মুক্তির দাবি জানায় নাগরিক সমাজ। রাতে সারজিস আলম ফেসবুকে দেয়া স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘ছয় দিনের ডিবি হেফাজত দিয়ে ছয়জনকে আটকে রাখা যায়, কিন্তু এই বাংলাদেশের পুরো তরুণ প্রজন্মকে কীভাবে আটকে রাখবেন?’

 

আরও পড়ুন: শিবিরের ইনস্ট্রাকশন বা ডিরেকশনে জুলাই অভ্যুত্থান হয় নাই: নাহিদ

 

অন্যদিকে জাতিসংঘ ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং দল পাঠানোর প্রস্তাব দিলে, বাংলাদেশে গঠিত তদন্ত কমিটিকে জাতিসংঘ কারিগরি সহায়তা করতে চাইলে সরকারের আপত্তি নেই বলে জানানো হয়। তবে আলাদা কোনো তদন্ত কমিটিতে সরকারের উৎসাহ নেই বলেও সাফ জানিয়ে দেন  তৎকালীন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।

 

চব্বিশের এইদিনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও আন্তর্জাতিক তদন্ত করে আন্দোলনে জড়িতদের বের করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন। আর তৎকালীন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশে মধ্যবর্তী নির্বাচনের জন্য বিশ্বের বহু দেশে ড. ইউনূসের আহ্বান রাষ্ট্রদ্রোহিতা ও সংবিধান পরিপন্থি।

 

সন্ত্রাসবিরোধী আইনে এদিন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবিরকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন