বর্তমান সময়ে আমরা যে দলবদলের কথা বলছি, তা শুধু টাকার অঙ্কে নয় বিতর্ক সৃষ্টি করেছিলো চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই ক্লাব বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদের আবেগ এবং পেশাদারিত্বের সম্পর্কের মধ্যে। সেটা এতোটাই যে যুগের পর যুগ পেরিয়ে গেলেও এখনও সেই সম্পর্ক স্বাভাবিক করা যায়নি।
দুই স্প্যানিশ জায়ান্টের মধ্যে সরাসরি ফুটবলার অদল বদলের ঘটনা ঘটেছিলো আজ থেকে প্রায় ২৫ বছর আগে, ২০০০ সালে। লুইস ফিগো বার্সা থেকে গিয়েছিলো রিয়ালে। আর রিয়াল থেকে কোনো ফুটবলারের কাতালুনিয়ান ক্লাবে যোগ দেয়ার ঘটনাটা তো আরও চার মৌসুম আগে হয়েছিলো শেষবার। ১৯৯৬ সালে লুইস এনরিকে চুক্তির মেয়াদ শেষ করে রিয়াল মাদ্রিদ থেকে ফ্রি ট্রান্সফারে যোগ দিয়েছিলেন বার্সেলোনায়।
কিন্তু এনরিকে নয়, রিয়াল-বার্সার সম্পর্কের অবনতি হয়েছিলো মূলত ফিগোর কারণে। ১৯৯৬ সালে লিসবন থেকে যোগ দিয়েছিলেন বার্সায়। ২০০০ সাল পর্যন্ত সেই জার্সিতে তিনি জিতেন দুটো লা লিগা, উয়েফার সুপার কাপ, কোপা দেল রে এবং উইনার্স কাপ। বার্সেলোনা সমর্থকদের চোখের মনিতে পরিণত হন পর্তুগীজ তারকা। কিন্তু হঠাৎ-ই ২০০০ সালের সামার ট্রান্সফারে উলটে যায় সব হিসাব-নিকাষ। ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ নিজের নির্বাচনী ওয়াদা ঠিক রাখতে তৎকালীন সময়ের রেকর্ড ৬০ মিলিয়ন ইউরো দিয়ে বার্সেলোনা থেকে রিয়ালে নিয়ে আসেন ফিগোকে। এই দলবদলে হতবাক হয়ে যান বার্সা সমর্থকরা। অর্থের লোভে ক্লাব ছেড়ে দেয়ায় তারা ক্ষুব্ধ হন ফিগোর ওপর। মাঠে যখনই দেখা হয়েছে এরপর দুই দলের, সেখানে দুয়ো ধ্বনি শুনতে হয়েছে পর্তুগীজকে। শুধু কি তাই, কর্ণার নিতে গেলে শুকরের মাথা, বিয়ারের বোতল সবই তো উপহার হিসেবে পেয়েছেন ফিগো।
আরও পড়ুন: আর্সেনাল থেকে সুইডিশ স্ট্রাইকারকে ছিনতাই করছে ইউনাইটেড
এরপর থেকেই সরাসরি দলবদল বন্ধ দুই ক্লাবের মধ্যে। কিন্তু এবার ২৯ বছরের ইতিহস বদলাতে চাইছে বার্সেলোনা। ফিগোর প্রতিশোধ হিসেবে রদ্রিগোকে দলে নিতে চাইছে কাতালুনিয়ানরা। স্প্যানিশ গণমাধ্যমে গুঞ্জন, রদ্রিগোকে আপাতত নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় রাখেননি চাবি আলোনসো। ব্রাজিলিয়ানকে নতুন ঠিকানা খুঁজে নিতেও বলে দেয়া হয়েছে আকার ইঙ্গিতে। মূলত, এই কথা বাইরে আসার পর থেকেই রদ্রিগোকে নিয়ে শুরু হয়েছে দলবদলের আলোচনা।
১০০ মিলিয়নের একটি প্রস্তাব নিয়ে অপেক্ষায় লিভারপুল। আর্সেনালও চায় ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গারকে। কিন্তু সবাইকে অবাক করে এই দলবদলে মাথা ঘামাচ্ছেন হুয়ান লাপোর্তা। মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে রদ্রিগোর সঙ্গে আলাপও সেরে ফেলেছেন তিনি। এখন রদ্রিগো ক্লাব ছাড়তে রাজি হলেই, আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেবে বার্সেলোনা। প্রয়োজনে লিভারপুলের সঙ্গে দর কষাকষিতেও যেতে রাজি তারা।
২০১৯ সালে সান্তোস থেকে সাড়ে ৪ কোটি ইউরোতে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেন রদ্রিগো। ২০২৩ সালের নভেম্বরে চুক্তির প্রাথমিক মেয়াদ শেষ হলে ২০২৮ পর্যন্ত নতুন চুক্তি করে দুই পক্ষ।