২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী কুন্ডুবাড়ি মেলা শুরু

২ সপ্তাহ আগে
মাদারীপুরের কালকিনিতে শুরু হয়েছে দুই শত বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী কুন্ডুবাড়ি মেলা। কালি পূজাকে কেন্দ্র করে আয়োজিত এই মেলায় এবারও জমে উঠেছে কেনাকাটা ও আনন্দ-উৎসবের রঙ। শুধু ফার্নিচার বিক্রিই হয় কয়েক কোটি টাকার, পাশাপাশি সুলভ দামে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনায় উপচে পড়ছে ক্রেতাদের ভিড়।

কালকিনির ভুরঘাটায় দুই দিনব্যাপী এই ঐতিহ্যবাহী মেলাকে ঘিরে মুখর পুরো এলাকা। ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের দুই পাশে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বসেছে সারি সারি দোকান। রাজধানী ঢাকা, নরসিংদী, বগুড়া, রাজশাহী ও টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছেন ব্যবসায়ীরা।

 

মেলার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ কাঠের তৈরি খাট, সোফা, আলমারি ও অন্যান্য আসবাবপত্র। বিক্রেতারা জানান, প্রতিবছরের মতো এবারও শুধুমাত্র ফার্নিচার বিক্রি থেকেই আয় হবে কয়েক কোটি টাকা। পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, পোশাক ও খেলনা সামগ্রী কিনতে মেলায় ভিড় করছেন দূরদূরান্তের ক্রেতারা।

 

স্থানীয় আয়োজকরা জানান, বাংলা ১৭৮৩ সালে মহেষ চন্দ্র কুন্ডু প্রথম এই মেলার সূচনা করেন। সেই থেকে টানা দুই শতাব্দী ধরে চলছে কুন্ডুবাড়ি মেলা যা আজও মিলনমেলায় পরিণত হয় স্থানীয় মানুষ ও দর্শনার্থীদের কাছে।

 

মেলার ইতিহাস ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা

 

মেলার শান্তিপূর্ণ আয়োজন নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশের সমন্বয়ে নেয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জুয়া-মাদক নিষেধ, উচ্চস্বরে শব্দযন্ত্র ব্যবহার না করা, অবৈধ পণ্য বিক্রয় নিষিদ্ধসহ ১৫টি বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে।

 

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘মেলাকে ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। দর্শনার্থীরা যেন নির্বিঘ্নে উৎসব উপভোগ করতে পারেন, সে জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।’

 

আরও পড়ুন: ৪ জেলায় নতুন ডিসি

 

মেলায় আসা ক্রেতা ও বিক্রেতাদের অভিমত

 

মেলায় আসা ক্রেতা জুয়েল সাহা বলেন, ‘এই মেলা শুধু কেনাকাটার নয়, সবার মিলনমেলা। এখানে এসে আনন্দ উপভোগ করছি।’

 

দর্শনার্থী রত্না আক্তার সাথী বলেন, ‘হিন্দু-মুসলিম সবাই এই মেলায় আসে। স্বল্প দামে ভালো মানের জিনিসপত্র পাওয়া যায়, তাই প্রতিবছরই কেনাকাটা করতে আসি।’

 

নরসিংদী থেকে আসা ফার্নিচার বিক্রেতা গোলাম সরোয়ার বলেন, ‘প্রতিবছর এই মেলায় ৮-১০ ট্রাক ফার্নিচার বিক্রি করি। এবারও ভালো বিক্রির আশা করছি।’

 

বগুড়ার বড়বাজারের বিক্রেতা শাহাতাৎ সরদার বলেন, ‘গত বছর ৫০ লাখ টাকার ফার্নিচার বিক্রি করেছিলাম। এবারও বিক্রি ভালো হচ্ছে।’

 

মেলার আয়োজক বাসুদেব কুন্ডু বলেন, ‘শৈশব থেকে দেখে আসছি, প্রতিবছরই এই মেলা আনন্দমুখর পরিবেশে হয়। আগামীতেও এই ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টা থাকবে।’

 

প্রশাসনের অনুমতি অনুযায়ী, এবারের মেলা দুই দিনব্যাপী চলবে এবং ২২ অক্টোবর বুধবার রাত ১১টায় শেষ হবে। এলাকাবাসী চান, ভবিষ্যতে এই ঐতিহ্যবাহী মেলার সময়সীমা আরও বাড়ানো হোক।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন