১৯৭৩ সালের পর ডলারের বড় পতন!

২১ ঘন্টা আগে
চলতি বছরের প্রথমার্ধে বিশ্ববাজারে মার্কিন ডলারের যে পতন হয়েছে, তা ১৯৭৩ সালের পর সবচেয়ে বড় ধস। প্রথম ৬ মাসে ডলারের মান কমেছে ১০ শতাংশের বেশি। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে, এজন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগ্রাসী শুল্কনীতি ও আত্মকেন্দ্রিক পররাষ্ট্রনীতি দায়ী। পাশাপাশি প্রভাবে ফেলেছে বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমে যাওয়া।

১৯৭৩ সালের পর সবচেয়ে বড় ধস দেখেছে মার্কিন ডলার। চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে ইউরো, পাউন্ডসহ প্রধান মুদ্রাগুলোর বিপরীতে মার্কিন মুদ্রাটির মান পড়ে গেছে ১০ দশমিক ৮ শতাংশ। ডলারের এই পতনের নেপথ্যে রয়েছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশ্বব্যবস্থা পুনর্গঠনের প্রচেষ্টা, বিশেষ করে আগ্রাসী শুল্কনীতি ও আত্মকেন্দ্রিক পররাষ্ট্রনীতি।

 

এমন বিশ্লেষণই তুলে ধরেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো। ট্রাম্পের শুল্কনীতি, মূল্যস্ফীতির আশঙ্কা ও সরকারি ঋণের বাড়বাড়ন্ত, সব মিলিয়ে ডলারের ওপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। পাশাপাশি প্রভাব ফেলেছে আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃস্থানীয় ভূমিকায় বিনিয়োগকারীদের ক্রমেই আস্থা কমে আসা।

 

এতে মার্কিন নাগরিকদের বিদেশ ভ্রমণে গুণতে হচ্ছে বাড়তি অর্থ। কমে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি বিনিয়োগ। আর এমন এক সময়ে বিষয়টি ঘটছে, যখন দেশটি আরও বেশি ঋণ নেয়ার চেষ্টা করছে। তবে ডলার দুর্বল হওয়ায় আমদানি খরচ বাড়ার সত্ত্বেও মার্কিন রফতানিকারকদের সুবিধা হয়েছে। তবুও ট্রাম্পের বাণিজ্যনীতি ঘিরে বিরাজ করছে অনিশ্চয়তা।

 

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের বিদেশি মুদ্রা গবেষণা বিভাগের স্টিভ ইংল্যান্ডার বলেন, ‘ডলার দুর্বল, না শক্তিশালী, এটা মূল প্রশ্ন নয়। মূল প্রশ্ন হলো, বিশ্বসমাজ অবস্থান কীভাবে দেখছে?’

 

আরও পড়ুন: বিশ্ববাজারে কমছে ডলারের দাম, কিন্তু কেন?

 

ট্রাম্প পুনর্নির্বাচিত হওয়ার পরপর ডলার ঊর্ধ্বমুখী ছিল। বিনিয়োগকারীদের ধারণা ছিল, ট্রাম্প ব্যবসাবান্ধব ও প্রবৃদ্ধিমুখী। কিন্তু তা বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ের পর থেকেই পড়তে থাকে ডলার সূচক। নতুন প্রশাসন ব্যবসাবান্ধব হবে, সেই আশা দূর হয়ে শুরু হয় উচ্চ মূল্যস্ফীতির আতঙ্ক, উচ্চ সুদহারের দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব আর অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর ওপর নেতিবাচক প্রভাবের শঙ্কা।

 

বিশ্লেষকেরা বলছেন, বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগকারীরা এখন ধীরে ধীরে ডলার ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সম্পদের বিকল্প খুঁজছেন। যদিও অনেক দিন ধরে বৈশ্বিক বিনিয়োগের নিরাপদ গন্তব্য ছিল যুক্তরাষ্ট্র। বছরের শুরুতে অবশ্য ডলারের মান ভালোই ছিল। সে কারণে চলতি বছরের শুরুটা যতটা খারাপ হোক, ঐতিহাসিক দিক থেকে ডলার এখনো অতটা দুর্বল নয়।

 

বিশ্লেষকদের মতে, মার্কিন অর্থনীতি তার ব্যতিক্রমধর্মিতা হারাচ্ছে। তাছাড়া ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যানের সঙ্গে ট্রাম্প যে আচরণ করছেন, তাতে পরিস্থিতির অবনতিই ঘটছে বলে মনে করছেন বিনিয়োগকারীরা।

 

এদিকে অনেক দেশই ডিডলারাইজেশন বা ডলার ভিন্ন অন্য মুদ্রায় লেনদেন বৃদ্ধি করে। যদিও বিশ্লেষকেরা বলেন, সম্পূর্ণ ডিডলারাইজেশন এখনো বহুদূরের বিষয়। যে বিষয়টি প্রকৃত অর্থেই মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠছে, তা হলো ক্রমবর্ধমান সরকারি ঋণ।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন