মেলাকে কেন্দ্র করে কয়েক হাজার দোকান বসেছে, যেখানে সুলভ মূল্যে বিক্রি হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। এতে খুশি ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই। মেলার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতে তিনস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
সরেজমিন দেখা যায়, ঢাক-ঢোল ও কাঁসর ঘণ্টার বাজনার সঙ্গে দলে দলে ভক্তরা যোগ দিচ্ছেন গনেশ পাগলের সেবাশ্রমে। কিশোর থেকে বৃদ্ধ সব বয়সি মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে মেলা প্রাঙ্গণ। ৩৬৫ বিঘা জমিতে গড়ে ওঠা সেবাশ্রমে রয়েছে ১০৮টি মন্দির। ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের টেকেরহাট বাসস্ট্যান্ড থেকে মেলার মাঠে আসা যায় খুব সহজেই।
প্রায় ১২৫ বছর আগে ১৩ জন সাধু, ১৩ কেজি চাল ও ১৩ টাকা নিয়ে শুরু হয়েছিল এ কুম্ভমেলা। এখন এটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিসম্পন্ন আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় মিলনমেলা।
দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত ভক্তরা জানান, পূণ্য লাভের আশায় তারা এই মেলায় অংশ নেন। দূরদূরান্ত থেকে আগত দর্শনার্থীদের জন্য থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা রেখেছেন আয়োজকরা, সঙ্গে কাজ করছেন কয়েকশ’ স্বেচ্ছাসেবক।
দর্শনার্থী পূজা সেন বলেন, ‘আমি মা-বাবার সঙ্গে এসেছি। ঝিনাইদহের শৈলকূপা থেকে আসা। এত সুন্দর মেলা দেখে খুব ভালো লাগছে।’
পিরোজপুর থেকে আসা গৌতম সাহা বলেন, ‘প্রতিবছর বন্ধু-আত্মীয়দের নিয়ে এখানে আসি। গনেশ পাগলের কাছে মানত করলে মনের বাসনা পূর্ণ হয়।’
আরও পড়ুন: চকচকে সেতুটি রাত হলেই হয়ে ওঠে ‘ভূতের রাজ্য’
ব্যবসায়ী মনোয়ার বেপারী জানান, ‘২০-২৫ বছর ধরে মেলায় পোশাকের দোকান দিই। কয়েক লাখ টাকার বিক্রি হয়। সারা বছরের আয়ের উৎস এটিই।’
অন্য ব্যবসায়ী শুভ দেবনাথ বলেন, ‘আমার দোকানে ৫ জন শ্রমিক কাজ করেন। ভালো ব্যবসা হচ্ছে, আনন্দও লাগছে।’
সেবাশ্রম ও মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নীল রতন সরকার বলেন, ‘আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় অনেক ভক্ত আগেই চলে এসেছেন। মেলার পরিধি প্রতিবছরই বাড়ছে।’
কমিটির সভাপতি জানান, ‘এক কিলোমিটার মাঠজুড়ে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে মেলা শেষ করতে সবাই আন্তরিক।’
রাজৈর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সঞ্জয় কুমার ঘোষ বলেন, ‘পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। তিনস্তরের নিরাপত্তার পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি রয়েছে। এছাড়া একটি কন্ট্রোল রুম ও পর্যবেক্ষণ টাওয়ার থেকে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে।’
]]>