১০ মাসেও উদ্ধার হয়নি লুণ্ঠিত অস্ত্র-গোলাবারুদ, জনমনে বাড়ছে উদ্বেগ

২ সপ্তাহ আগে
অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেয়ার ১০ মাস পেরিয়ে গেলেও গত ৫ আগস্ট থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র-গোলাবারুদ এখনও উদ্ধার না হওয়ায় জনমনে উদ্বেগ বাড়ছে। লুটের সেই ১৪শ অস্ত্র ও আড়াই লাখের বেশি গোলাবারুদ পৌঁছে গেছে রিকশাচালক, দোকানি, এমনকি পথচারীর কাছে। কেউ কেউ আবার বিক্রির চেষ্টাও করেছেন।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, একাধিকবার সময় দিলেও অস্ত্র জমা দিচ্ছেন না অনেকে। এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা করছেন অপরাধ বিশ্লেষকরা।

 

ব্যাটারিচালিত রিকশা চালক নশা মিয়া। ঢাকার ইব্রাহীমপুরে মকবুলের গ্যারেজের রিকশা চালাতেন। গত ১৯ মার্চ মোহাম্মদপুরে গুলি বিক্রি করতে এসে ধরা পড়েন র‌্যাবের হাতে। এরপর তাকে নিয়ে অভিযান হয় এই গ্যারেজেও।

 

নশার কাছে মেলে ১০ রাউন্ড নাইন এমএম পিস্তলের গুলি; যা পাঁচ আগস্ট কাফরুল থানা থেকে লুট করেছিলেন। পরে থানায় জমা না দিয়ে বিক্রি করার চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় হতবাক নশার পরিচিতজনরাও। তারা বলেন, অস্ত্রসহ আইনশৃঙ্খলাবাহিনী নশাকে গ্রেফতার করেছে। পাশাপাশি তল্লাশি করা হয়েছিল গ্যারেজেও। তবে গ্যারেজে কিছু পাওয়া যায়নি।

 

গত ৯ মে রাজধানীর বছিলায় সূচনা মডেল টাউনের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে মাদকের পাশাপাশি ২৯ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে র‌্যাব-২। গ্রেফতার মাইক্রোবাস চালক সাগর হোসেনের দাবি, ৫ আগস্ট মোহাম্মদপুর থানার সামনে থেকে গুলিগুলো কুড়িয়ে পান তিনি।

 

আরও পড়ুন: লুট হওয়া অস্ত্রে গোলাগুলি, আতঙ্কের নাম জেনেভা ক্যাম্প

 

র‌্যাব বলছে, অপরাধীদের পাশাপাশি রিকশাচালক, দোকানিসহ অনেক সাধারণ মানুষের কাছেও থানা থেকে উদ্ধার হচ্ছে লুট হওয়া অস্ত্র-গোলাবারুদ। থানায় জমা না দিয়ে অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন তারা।

 

র‌্যাব-২ এর অধিনায়ক মো. খালিদুল হক হাওলাদার বলেন, থানা থেকে লুণ্ঠিত ও অন্য কোনো ভাবে প্রাপ্ত অস্ত্র কারও কাছে পাওয়া গেলে, আইন অনুযায়ী তিনি অপরাধী। কারণ এসব অস্ত্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সমর্পণ করতে হবে।

 

পুলিশ সদর দফতর তথ্য বলছে, থানা থেকে লুট হওয়া ৫ হাজার ৭৫০টি অস্ত্রের মধ্যে উদ্ধার হয়েছে ৪ হাজার ৩৭০টি। লুট হওয়া ৬ লাখ ৫১ হাজার ৬৫১টি গোলাবারুদের মধ্যে উদ্ধার হয়েছে ৩ লাখ ৯৭ হাজার ৫০৭টি। 

 

পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া)  ইনামুল হক সাগর বলেন, কারও কাছে এসব লুণ্ঠিত অস্ত্রের বিষয়ে কোনো তথ্য থাকলে অবশ্যই পুলিশকে জানাতে হবে। তথ্য পেলে অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশ ব্যবস্থা নিতে পারবে।

 

লুটের অস্ত্র উদ্ধার না হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে জানিয়ে সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষক ড. তৌহিদুল হক বলেন, লুণ্ঠিত সব অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারলে এসব অস্ত্র ব্যবহার করে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যাবে। এছাড়া এসব অস্ত্র বিক্রি করা হলে ভয়ের প্রবণতা আরও বাড়বে।

 

লুট হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র জমা দিতে একাধিকবার সময় দিলেও জমা দেননি অনেকে। এখন যাদের কাছেই পাওয়া যাবে অস্ত্র আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দফতর।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন