জানা গেছে, আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের নোয়াখালী এবং সেনবাগ শাখায় কর্মরত থাকা অবস্থায় ম্যানেজার আলমগীর হোসেন দুই শতাধিক গ্রাহকের জাতীয় পরিচয়পত্র ও মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেন।
বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর ব্যাংকের হেড অফিস থেকে একটি অডিট টিম এসে সোমবার (২০ অক্টোবর) ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করে।
ব্যাংকের নথিপত্র যাচাই করে দেখা গেছে, যেসব গ্রাহকদের নামে ঋণ দেখানো হয়েছে, তাদের অনেকেই বাস্তবে অস্তিত্বহীন। অনেকের জাতীয় পরিচয়পত্র ভুল, আবার অনেকের মোবাইল নম্বর অন্য কারও। এমনকি পূর্বে ঋণ নেয়া প্রকৃত গ্রাহকদের কাগজপত্র ব্যবহার করেও টাকা তুলে নেয়া হয়েছে, যা সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকরা কিছুই জানেন না।
নোয়াখালী সদর উপজেলার মধ্যম করিমপুরের মো. আবদুল জলিল বলেন, 'আমার নামে নাকি তিন লাখ টাকা ঋণ নেয়া হয়েছে। অথচ আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। ব্যাংক থেকে বিষয়টি জানার পর আমি রীতিমতো অবাক হয়ে গেছি।'
অপরদিকে আব্দুল্লাহ আল মামুন নামে এক গ্রাহকের নামেও তিন লাখ টাকা ঋণ দেখানো হয়েছে। কিন্তু ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এমন কোনো গ্রাহকের পরিচয় দিতে পারেনি।
এছাড়াও, উপজেলা আনসার ও ভিডিপি প্রশিক্ষক নিমাই চন্দ্র সরকারের নামে সাড়ে নয় লাখ টাকা ঋণ উত্তোলন দেখানো হলেও তিনি জানান, এ বিষয়ে তার কোনো ধারণা নেই।
সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের মো. জয়নুল আবেদীন নামে আরেক গ্রাহকের নামেও তিন লাখ টাকা ঋণ দেখানো হয়েছে, তিনিও বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
আরও পড়ুন: ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে অর্থ আত্মসাৎ, ব্যাংক ম্যানেজারসহ তিনজন কারাগারে
ব্যাংকের এমন ভয়াবহ জালিয়াতিতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন খোদ ব্যাংকের কর্মকর্তারাই। তারা দ্রুত এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এর নিষ্পত্তি চান।
আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক উত্তম কুমার সিংহ জানান, তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর সব শাখায় অভ্যন্তরীণ অডিট চালান, তখনই এ অনিয়মের বিষয়গুলো ধরা পড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন। এরপর হেড অফিস থেকে পাঠানো দুই সদস্যের একটি অডিট দল এসে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে। বর্তমানে অডিট কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
এদিকে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বিষয়টি জানাজানি হলে সোমবার বিকেলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অভিযান চালায় ব্যাংকটিতে। দুদকের অভিযানে প্রাথমিকভাবে ঋণের নামে অর্থ আত্মসাতের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে।
দুদকের সরকারি পরিচালক আব্দুল্লাহ আল নোমান জানান, অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্য ও উপাত্তের ভিত্তিতে একটি প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করবেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা। ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

২ সপ্তাহ আগে
৪







Bengali (BD) ·
English (US) ·