হাসপাতালের বারান্দায় ১৭ দিন অবহেলায় পড়ে আছেন অজ্ঞাত বৃদ্ধ

২ দিন আগে
দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে পড়ে আছে অজ্ঞাত এক বৃদ্ধ। ষাটোর্ধ্ব অসুস্থ ব্যক্তিটির ঠাঁই মিলেছে বারান্দার এক কোণে। যত্নের অভাবে শরীর থেকেও দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে আশপাশে। রোগীর স্বজন না থাকায় হয়নি কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষাও।

বুধবার (৭ মে) বিকেলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিনের বিভাগের বারান্দায় গিয়ে দেখা যায়, এক বৃদ্ধ বার বার এপাশ-ওপাশ করছেন। মুখে বলতে পারছেন না কোনো কথাও। মাঝেমধ্যে হাতের ইশারায় কিছু একটা বুঝাতে চাইছেন তিনি। নাম-পরিচয় ও জানা যায়নি।

 

বৃদ্ধার পাশেই ময়লা ফেলার ডাস্টবিন। পচা দুর্গন্ধ আর মাছিতে ভরা চারপাশ। দুই সপ্তাহ ধরে এভাবেই রয়েছেন তিনি। স্বজন না থাকায় মিলছে না যত্ন, পরীক্ষা না করায় মিলছে না সু-চিকিৎসাও। তবে বৃদ্ধের মানবেতর জীবন দেখে সেবা দিতে এগিয়ে এসেছেন অন্য এক রোগীর স্বজন এবং এক স্বেচ্ছাসেবক।

 

অন্য রোগীর স্বজনরা জানান, অনেকেই তার অবস্থা দেখে খাবার খাইয়ে দেয় ৷ পোশাক নোংরা করলে সেটা পরিস্কার করে। হাসপাতাল থেকে যা খাবার দেয় তা আশেপাশের লোকজন তাকে খাইয়ে দেয়।

 

আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে ঋণ দেয়ার আশ্বাসে ৮২ লাখ টাকা আত্মসাৎ, প্রতারক আটক

 

শাহিনুর ইসলাম নামে এক যুবক বলেন, ‘আমি ময়মনসিংহ হেল্পলাইনে একটা পোষ্টের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারি। পরে এসে দেখি পোশাকে মল ত্যাগ করে নষ্ট করে ফেলেছে। এভাবেই পড়ে আছে লোকটি। পরে আমি একটা লুঙ্গি আর একটা গেঞ্জি কিনে এনে তাকে পরিয়ে দেই।’

 

তিনি বলেন, এভাবে একটা মানুষ পড়ে থাকতে পারে না। আমরা চাই কোনো এনজিও বা হাসপাতালের সমাজসেবার পক্ষ থেকে তার যেন দায়িত্ব নেয়া হয়। সেবা ও সুচিকিৎসা পেলে লোকটি সুস্থ হয়ে উঠবে বলে আমার বিশ্বাস।

 

পরীক্ষা-নিরীক্ষার অভাবে বৃদ্ধের রোগ জানা সম্ভব হয়নি বলে জানান হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক।

 

মেডিসিন বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, যেহেতু রোগীটা অজ্ঞাত তাই তার পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি। সেক্ষেত্রে তার যে শারীরিক অসুবিধা দেখেছি সেই অনুযায়ী ওষুধ-স্যালাইন দিচ্ছি।

 

আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধে নিহত ময়মনসিংহের যুবকের মরদেহ আনার আকুতি পরিবারের

 

তিনি আরও জানান, ওই বৃদ্ধ ওয়ার্ডেই ছিলো কিন্তু নিজের ওপর শারীরিক কন্ট্রোল না থাকায় তিনি ওয়ার্ড নোংরা করে ফেলছে। সেক্ষেত্রে অন্য রোগীদের আপত্তির কারণে তাকে আলাদা স্থানে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

 

উল্লেখ্য, ২০ এপ্রিল নগরীর চরপাড়া মোড়ে অসুস্থ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে অজ্ঞাত বৃদ্ধকে হাসাপাতালে ভর্তি করে রেখে যান স্থানীয় এক ব্যক্তি। ১৭ দিন পেরিয়ে গেলেও মেলেনি তার কোনো স্বজনের খোঁজ।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন