সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৬ উইকেটের ব্যবধানে হারিয়েছে পাকিস্তান নারী ক্রিকেট দল। দলকে জেতানোর পথে একাই ৬ উইকেট নিয়েছেন স্পিনার নাশরা। অর্জন করেছেন দারুণ এক মাইলফলকও। পাকিস্তান নারী দলের হয়ে ওয়ানডেতে দ্রুততম শত উইকেট তুলে নেয়ার কীর্তি গড়েছেন তিনি।
সবকিছু তখন পর্যন্ত ঠিকঠাক-ই ছিল। কিন্তু ম্যাচশেষে সামাজিক মাধ্যমে তিনি এমন একটি উদযাপনের স্থিরচিত্র প্রকাশ করলেন, যা ইতোমধ্যে করে বিতর্ক তৈরি করেছেন পাকিস্তান পুরুষ দলের পেসার হারিস রউফ। ম্যাচসেরা ও শত উইকেটের মাইলফলক স্পর্শের ট্রফিসহ ছবির পাশাপাশি তিনি ৬ আঙ্গুল তুলেও একটি ছবি প্রকাশ করেন। যদিও ৬ উইকেট নেয়ার উদযাপন করেছেন তিনি, তবে সেখানে অনেকে ভারতকে উস্কে দেওয়ার গন্ধ পাচ্ছেন। মূলত নাশরার উদযাপনের সঙ্গে সমালোচকরা রউফের উদযাপনের মিল পাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: ভারত ম্যাচের আগে লিটনকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় বাংলাদেশ
গত ২১ সেপ্টেম্বর এশিয়া কাপে সুপার ফোরের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত-পাকিস্তান। সে ম্যাচে বাউন্ডারিতে রউফ ফিল্ডিং করার সময়, তার পেছনের গ্যালারিতে বসে থাকা ভারতীয় সমর্থকেরা ‘কোহলি, কোহলি’ বলে চিৎকার করেন। ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচে ভারতকে জেতানোর পথে রউফের পর পর দুই বলে দুই ছক্কা মেরেছিলেন বিরাট কোহলি। সেই কারণেই হয়তো কোহলির নাম করে রউফকে খোঁচা মারছিলেন ভারতীয় সমর্থকেরা। তখনই সমর্থকদের দিকে তাকিয়ে রউফ এমনভাবে হাতের ইশারা করেন, যাতে দেখে মনে হয় বিমান উড়তে উড়তে ভেঙে পড়েছে। বেশ কয়েক বার একই কায়দায় ইশারা করে দেখান তিনি। ভারতীয় ব্যাটার সাঞ্জু স্যামসনকে আউট করে উল্লাস করার সময় আবার একই ইশারা করেন রউফ।
ম্যাচ চলাকালীন ভারতীয় সমর্থকদের দিকে তাকিয়ে হাতের আঙুল দিয়ে ‘৬-০’ দেখান রউফ। ম্যাচের আগে অনুশীলনেও তিনি ৬-০ বলে চিৎকার করেছিলেন। রউফ মুখে কিছু না বললেও তার ইশারা থেকে মনে হচ্ছে ভারতের যুদ্ধবিমান রাফাল ধ্বংসের কথা বোঝাতে চেয়েছেন তিনি। ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর পর পাকিস্তান দাবি করেছিল, ভারতের ছটি রাফাল ধ্বংস করেছে তারা। মূলত হাতের ইশারায় বিমান ভাঙা বা ছয় সংখ্যা দেখিয়ে পাকিস্তানের সেই দাবিকেই আরও এক বার খুঁচিয়ে তোলেন রউফ।
একই ম্যাচে আবার অর্ধশতরান করার পর বন্দুক চালানোর কায়দায় উল্লাস করেছিলেন সাহিবজাদা ফারহান। অনেকের অভিযোগ, ভারতীয় ডাগ আউটের দিকে তাকিয়ে একে-৪৭ চালানোর কায়দায় উল্লাস করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ফখরের আউট নিয়ে আইসিসির কাছে অভিযোগ জানিয়েছে পাকিস্তান
এসব নিয়ে আবার নিজের ইউটিউব চ্যানেলে সমালোচনায় মেতেছেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটার ইরফান পাঠান। তিনি বলেন, ‘আমি উদযাপন নিয়ে একটু কথা বলতে চাই। সাহিবজাদা ফারহান, আপনি জানেন দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা। হারিস রউফের কথা বলতে গেলে, আমি ভেবেছিলাম তিনি একজন ভদ্র ব্যক্তি। কয়েক বছর আগে অস্ট্রেলিয়ায় তার সঙ্গে দেখা হয়েছিল। গতকাল মাঠে তার করা অঙ্গভঙ্গিগুলো ছিল অপ্রয়োজনীয়। এটি তাদের দুজনের স্বভাব এবং তারা কী লালন-পালন করে সেটা বলে দেয়। মাঠে ক্রিকেট খেলুন। ব্যক্তিগত পর্যায়ে নেমে যাওয়া খুবই খারাপ। তারপর আপনি আশা করেন আমরা এ নিয়ে কথা বলব না! এটা ভুল। তবে আমি মোটেও অবাক নই। তারা এ ধরনের কাজ করতে সক্ষম। টিভিতে যা দেখেছেন, তা খুবই বাজে ছিল, কিন্তু পর্দার পিছনে যা ঘটে, ভক্তরা যদি তা জানতে পারে তবে তারা হতবাক হবে।’