ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যে দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের লক্ষ্যে চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে জাতিসংঘ সদর দফতরে তিনদিনব্যাপী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ফ্রান্স ও সৌদি আরবের নেতৃত্বে ওই সম্মেলনের দ্বিতীয়দিন মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) এক যৌথ ঘোষণাপত্র জারি করা হয়।
১৭টি দেশ ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেছে। যার মধ্যে কাতার, সৌদি আরব ও মিশরের পাশাপাশি যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, কানাডা ও আরও কয়েকটি পশ্চিমা দেশ রয়েছে। ঘোষণাপত্রে হামাসকে গাজা শাসন থেকে সরে দাঁড়াতে এবং অস্ত্র পরিত্যাগ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের পর ফ্রান্সের নেতৃত্বে আরেকটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে ফ্রান্সসহ ১৫টি দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক অবস্থান জানিয়েছে। ফ্রান্স জানায়, দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান এবং গাজা ও পশ্চিম তীরকে একীভূত করে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের (পিএ) অধীনে আনতেই তারা এই পদক্ষেপ নিচ্ছে।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়ার ঘোষণা কানাডার
তবে পশ্চিমা দেশগুলোর এই উদ্যোগকে প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরাইল। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ একে ‘হামাসকে উৎসাহ দেয়া’ বলে উল্লেখ করেছেন।
তার মতে, এই স্বীকৃতি হামাসকে আলোচনায় কঠোর করে তুলবে এবং জিম্মিদের মুক্তিতে দেরি করবে। এমন পরিস্থিতিতে গাজার একাংশ দখলের হুমকি দিয়েছেন ইসরাইলি মন্ত্রীসভার এক সদস্য। ২০০৬ সাল থেকে গাজার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে হামাস। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে ইসরাইলের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে গোষ্ঠীটি।
এদিকে অবরুদ্ধ গাজায় ত্রাণ নিতে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি হামলা থামছেই না। গত একদিনে দখলদার বাহিনীর গুলিতে প্রাণ গেছে আরও ৮০ জনের। যাদের মধ্যে ৭১ জনই গিয়েছিলেন ত্রাণ সংগ্রহে।
হামাস এই দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতিকে 'ধীরগতির গণহত্যা' হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, ইসরাইল খাদ্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে এবং ত্রাণকে পরিণত করেছে লুটপাট ও বিশৃঙ্খলার হাতিয়ারে।
আরও পড়ুন: ইসরাইলকে আল্টিমেটাম দেয়ার পর স্টারমার-আব্বাস ফোনালাপ
আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়ে গাজার কিছু অংশে অভিযান প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে জন্য বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছিল ইসরাইল। দিনের বেলা ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশের অনুমতিও দেয়া হয়। তবে অঞ্চলটিতে ত্রাণ সরবরাহ হচ্ছে নামে মাত্র। বেশিরভাগ বাসিন্দাই থাকছেন খাবার থেকে বঞ্চিত।
ভয়াবহ পুষ্টিহীনতা ও খাদ্য গ্রহণের মারাত্মক ঘাটতি এরই মধ্যেই নিশ্চিত করেছে জাতিসংঘ। এখন কেবল অপুষ্টিজনিত মৃত্যুর তথ্য পেলেই ‘আনুষ্ঠানিক দুর্ভিক্ষ’ ঘোষণা করবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
]]>