যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, শনিবারের মধ্যে সকল জিম্মিকে মুক্তি না দিলে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাতিল করা হবে; ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পর হামাসের এক কর্মকর্তা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, চুক্তির শর্তগুলিকে মর্যাদা দেওয়াই জিম্মিদের মুক্তির একমাত্র পথ।
হামাসের অভিযোগ, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করছে; পাশাপাশি তারা হুমকি দিয়েছে, শনিবার ছেড়ে দেওয়ার কথা রয়েছে যে তিনজন জিম্মির, তাদের মুক্তি দিতে বিলম্ব হবে। এরপরই সোমবার ট্রাম্প ওই মন্তব্য করেছেন।
ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে সংবাদদাতাদের বলেন, “আমার মতে, শনিবার বেলা ১২টার মধ্যে যদি সকল জিম্মিকে ফেরানো না হয়—আমার মতে, এটাই উপযুক্ত সময়—আমি বলব, এটা (যুদ্ধবিরতি চুক্তি) বাতিল করে দিন এবং সমস্ত জুয়া বন্ধ এবং নরক উন্মুক্ত হোক।”
হামাসের সিনিয়র কর্মকর্তা সামি আবু জুহারি মঙ্গলবার সংবাদদাতাদের বলেন, ট্রাম্পের মন্তব্য ভঙ্গুর চুক্তিকে জটিল করে তুলছে।
তিনি বলেন, “ট্রাম্পের অবশ্যই স্মরণে রাখতে হবে, এই চুক্তিকে মর্যাদা দিতে হবে উভয় পক্ষকেই এবং বন্দিদের ফিরিয়ে আনার এটাই একমাত্র পথ। হুমকির ভাষার কোনও মূল্য নেই; কেবলমাত্র বিষয়কে জটিল করে তুলছে।”
হামাস সোমবার বলেছে, পরবর্তী বিজ্ঞপ্তি না দেওয়া পর্যন্ত আর কোনও জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে না। এই গোষ্ঠীর অভিযোগ, বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের গাজার উত্তরাঞ্চলে ফেরাকে বিলম্বিত করছে ইসরায়েল, যদিও হাজার হাজার ফিলিস্তিনি প্রত্যাবর্তন করেছে।যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য বেশ কয়েকটি দেশ হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে।
হামাস আরও বলেছে, “বিভিন্ন এলাকায় বিমান হামলা ও গুলি ছুঁড়ে” ফিলিস্তিনিদের নিশানা করা হয়েছে। তারা বলেছে, “সম্মতি অনুযায়ী মানবিক ত্রাণ প্রবেশকে সহজতর করতে” ব্যর্থ হয়েছে ইসরায়েল। জাতিসংঘের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি শুরুর পর থেকে ১২৬০০টি মানবিক ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করেছে এবং দুর্ভিক্ষের তাৎক্ষণিক হুমকি আটকানো গেছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেছেন, হামাস কোনও রকম বিলম্ব করলে তা হবে যুদ্ধবিরতি চুক্তির “সম্পূর্ণ লঙ্ঘন।” তিনি ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীকে সর্বোচ্চ স্তরের সতর্কতায় রেখেছেন।
গত মাসে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর থেকে হামাস ১২ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে এবং ইসরায়েল ৭৩০ জনের বেশি কারাবন্দিকে ছেড়ে দিয়েছে। ইসরায়েলের জেলে বন্দি কয়েকশো ফিলিস্তিনির বিনিময়ে আরও তিনজন ইসরায়েলিকে মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে পরবর্তী বিনিময়ের দিন, অর্থাৎ শনিবার।