হরমুজ প্রণালি বন্ধের হুমকিতে জ্বালানি সরবরাহ নিয়ে শঙ্কা, বিকল্প খোঁজার তাগিদ

৩ সপ্তাহ আগে
ইরানের হরমুজ প্রণালি বন্ধের হুমকিতে জ্বালানি সরবরাহ নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে দেশে। অপরিশোধিত তেল ও তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) অর্ধেকই আসে সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং কাতার থেকে। দুই দেশেরই জ্বালানি বাণিজ্যের একমাত্র রুট হরমুজ প্রণালি। গুরুত্বপূর্ণ এই জলপথ বন্ধ হলে, জ্বালানি ঘাটতিতে পড়বে বাংলাদেশ। এ অবস্থায় দ্রুত সরকারকে জ্বালানির বিকল্প উৎস খোঁজার তাগিদ সংশ্লিষ্টদের।

ইরান-ইসরাইল পাল্টাপাল্টি হামলার প্রেক্ষাপটে যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ হতে পারে বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত জলপথ হরমুজ প্রণালি। ৩৪ কিলোমিটারের দীর্ঘ এই জলপথ চিন্তা বাড়াচ্ছে বাংলাদেশেরও। রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের (আরপিজিসিএল) তথ্য বলছে, ২০১৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৪৮৭ কার্গো এলএনজি আমদানি করেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে ২৬৭ কার্গো কাতার এবং ওমান থেকে এসেছে ১২২ কার্গো। অর্থাৎ চাহিদার ৮০ শতাংশ মেটাচ্ছে এই দুই দেশ।

 

চলতি অর্থবছরেও ৫৬ কার্গো এলএনজির মধ্যে এপ্রিল পর্যন্ত এসেছে ৪৬ কার্গো। হরমুজ প্রণালি বন্ধ হলে, বাংলাদেশকে জ্বালানি সরবরাহ করতে পারবে না কাতার।

 

কনভেয়ার লজিস্টিক লিমিটেডের চেয়ারম্যান কবির আহমেদ বলেন, অন্য সময় আমদানি বাধাগ্রস্ত হলে বিকল্প পথে বেশি সময় ট্রানজিট দিয়ে জ্বালানি দেশে আনা হয়। তবে এখন সেই অবস্থা নেই। জাহাজ কোম্পানিগুলো বিকল্প অবশ্যই খুঁজবে। তবে আমার মনে হয়, এখন সেই ব্যবস্থাটি নেই।

 

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) তথ্য বলছে, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং সৌদি আরব থেকে বছরে প্রায় ১৪ লাখ টন অপরিশোধিত তেল আমদানি হয়। হরমুজ প্রণালি এড়িয়ে লোহিত, এডেন এবং আরব সাগর হয়ে বাংলাদেশকে তেল সরবরাহ করতে পারবে সৌদি আরব।

 

আরও পড়ুন: ইরান-ইসরাইল সংঘাত: বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ছেই

 

বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, নিজস্ব উৎপাদন দিয়ে এখন দেশের চাহিদা মিটছে না। এর বাইরে হরমুজ প্রণালি বন্ধ হয়ে গেলে তেলের দাম বাড়বে। এতে ম্যান মেইড ফাইবারে দামেও প্রভাব পড়বে।

 

পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখে জ্বালানির বিকল্প উৎস খোঁজার তাগিদ অর্থনীতিবিদদের। অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবীর বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা কানাডা থেকে গ্যাস আমদানি করা যেতে পারে। তবে তারাও তাৎক্ষণিকভাবে সরবরাহ করার জন্য প্রস্তুত নয়। ফলে দক্ষিণ এশিয়ার যে দেশগুলো কাতার থেকে এলএনজি আমদানি করে, তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা বাড়াতে হবে।

 

উল্লেখ্য, বিশ্বে প্রতিদিন ব্যবহৃত মোট তেলের প্রায় ২০ শতাংশ পরিবহন করা হয় হরমুজ প্রণালি দিয়ে। গুরুত্বপূর্ণ এই জলপথ দিয়ে পরিবাহিত জ্বালানি তেলের প্রায় ৭০ শতাংশেরই ভোক্তা দক্ষিণ এশিয়া।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন