স্থানীয় সময় গত বুধবার (২৮ মে) বিকেলে আল্পস পর্বতমালার বার্চ হিমবাহের বিশাল একটি অংশ ধসে পড়ে। ধসে পড়া সেই হিমবাহ নেমে আসে পাহাড়ের পাদদেশে গড়ে ওঠা ব্লাটেন গ্রামে। মুহূর্তেই তলিয়ে যায় গ্রামের প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকা। একসময়ের জনবহুল গ্রামটি পরিণত হয় ধ্বংসস্তূপে।
ঘটনার শুরু আরও এক সপ্তাহ আগে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, গ্রামটি যে পাহাড়ের নিচে অবস্থিত, সেটির একটি অংশ চলতি মাসে ধসে পড়তে শুরু করে। সে সময় বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেন, হিমবাহ ভেঙে পড়তে পারে।
সেই সতর্কতার পর গত ১৯ মে ব্লাটেনের প্রায় ৩০০ বাসিন্দাকে সরিয়ে নেয়া হয়। এরপর সপ্তাহ খানেক পরই ধসে পড়ে হিমবাহ। বিরল এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তাতে দেখা যায়, কীভাবে হিমবাহের অংশবিশেষ ধসে পড়ে ধুলোমেঘ তৈরি করে গ্রামের দিকে ধেয়ে আসছে।
আরও পড়ুন: ভারতের রাফাল যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়া নিয়ে যা বলল ফরাসি সেনাবাহিনী
এ ঘটনায় গ্রামের বাসিন্দারা বেঁচে গেলেও একজন নিখোঁজ হয়। তাকে এখনও খুঁজছে উদ্ধারকারীরা। গ্রামের একজন বাসিন্দা বলেন, আমরা আমাদের গ্রাম হারিয়েছি। গ্রামটি এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। তবে আমরা আবার সব কিছু নতুন করে গড়ে তুলব।
এখন সবচেয়ে বড় শঙ্কা দেখা দিয়েছে বন্যার। হিমবাহের ধ্বংসাবশেষে পাহাড়ি উপত্যকা দিয়ে বয়ে যাওয়া লনজা নদীর পথ বন্ধ হয়ে তৈরি হয়েছে বিশাল জলাধার। সেখানে প্রতিদিন জমছে ১০ লাখ ঘনমিটার পানি।
স্থানীয় প্রশাসন সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। পুরো এলাকা পাহারা দিচ্ছে সেনাবাহিনী। কাছের আরও কয়েকটি গ্রাম থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে বাসিন্দাদের। বৃষ্টিই এখন বড় আতঙ্ক। কারণ এই অঞ্চলে শীতে বরফ জমে। কিন্তু গরমে ও বৃষ্টিতে হিমবাহ ভেঙে পড়ে। বরফ আর পাথর একসঙ্গে নেমে আসে গ্রামে।
আরও পড়ুন: দাবি জেলেনস্কির / ইউক্রেনে নতুন করে আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া!
উষ্ণ তাপমাত্রার কারণে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বরফে জমাট বাঁধা মাটি গলে গেলে পাহাড়ের পাথর খসে পড়ে। আর সেটাই ভূমিধসের জন্য বড় কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলেও জানান তারা। স্থানীয়রা বলেন, অঞ্চলটিতে এমন বিপুল পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি কয়েক শতাব্দীতেও দেখা যায়নি।
]]>