হজ ও বিশ্ব মুসলিমের ঐক্য

৪ সপ্তাহ আগে
হজের শাব্দিক অর্থ - ইচ্ছা করা, গমন করা।পরিভাষায় হজ বলা হয় : নির্দিষ্ট সময় নির্দিষ্ট কাজের মাধ্যমে নির্দিষ্ট স্থানের জিয়ারত করা। হজের প্রকারভেদ : হজ তিন প্রকার ১. হজ্জে ইফরাদ ২. হজ্জে কিরান ৩. হজ্জে তামাত্তু।এ তিন প্রকারের মধ্যে উত্তম হল হজ্জে কিরান।

হাদিস শরিফে এসেছে,আবু হুরাইরা রা. হতে বর্ণিত:তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ করলো এবং অশালীন কথাবার্তা ও গুনাহ হতে বিরত রইল, সে ঐ দিনের মত নিষ্পাপ হয়ে হজ হতে ফিরে আসবে যেদিন তার মা তাকে জন্ম দিয়েছিল। (সহিহ বুখারি: ১৫২১)

 

বিশ্ব মুসলিমের ঐক্য, বিশ্ব মুসলমান বর্তমানে হজের যে নিয়মাবলী অনুসরণ করে তা মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, হজ মানুষের চিন্তা চেতনাকে পরিশুদ্ধ করে দেয়। মানুষের নিজেদের চেহারা, দেশ,ভাষা, নিয়ে অনেক গর্ব করে, কিন্তু একজন মুসলমান যখন হজে যায়, তখন তার কাছে সব অহংকার তুচ্ছ হয়ে যায়। আর এই পবিত্র গৃহের কাছে কেউ কারো সামনে উচু নয়। 

 

সবাই এক ইমামের পিছনে নামাজ আদায় করে। যতই ধনী হোক না কেন সবাই সিলাইবিহীন কাপড় পরিধান করে এই ঘরে উপস্থিত হয়। আর মুখে বলতে থাকে লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, পৃথিবীতে আর কোন ধর্মে এক পোশাকে এত মানুষ গণ জমায়েত হয় না। এমন অপূর্ব সুন্দর কেবল মুসলিমদের ধর্মেই দেখা যায়। হাদিসে এসেছে আরাফাতের দিন সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষ জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভ করে। 

 

আরও পড়ুন: আরাফার দিন নবীজি যে দোয়া করতেন

 

ইবনুল মুসাইয়্যাব (রহ.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, 

 

হজরত আয়েশা রাজিআল্লাহু আনহা বলেছেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আরাফার দিবসের তুলনায় এমন কোন দিন নেই,যেদিন আল্লাহ তা’আলা সর্বাধিক সংখ্যক লোককে দোযখের আগুন থেকে মুক্তি দান করেন। আল্লাহ তা’আলা নিকটবতী হন, অতঃপর বান্দাদের সম্পর্কে ফেরেশতাদের সামনে গৌরব প্রকাশ করেন এবং বলেনঃ তারা কী উদ্দেশ্যে সমবেত হয়েছে (বা তারা কী চায়)? (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৩৪৮)

 

তাই আল্লাহর নৈকট্য লাভের এমন সুযোগ কোন ধর্মপ্রাণ মুসলমানই হাতছাড়া করতে চায় না।অপরদিকে হজের মাধ্যমে মুসলিম বিশ্বের মানুষের মাঝে এক ব্যক্তিত্ববোধ গড়ে ওঠে। 

 

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বিদায় হজের ভাষণে বলেছেন, হে লোক সকল তোমরা প্রত্যেক মুসলমান ভাই ভাই, তোমরা সবাই সমান, তোমাদের পালনকর্তা এক, তোমাদের পিতা এক, তোমরা সকলে এক আদমের সন্তান এবং আদম মাটি হতে সৃষ্ট। কোন আরব কোন অনারবের উপর খোদা-ভীরুতা ব্যতীত তাধিক মর্যাদাবান ও সম্মানী হতে পারে না।
নবীজির এই বাণীই যেন সত্য হয়ে দেখা যায় হজের সময়।

 

আবদুল্লাহ 

শিক্ষার্থী : জামিয়া কোরআনিয়া আরাবিয়া লালবাগ মাদরাসা, ঢাকা।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন