গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফুটবল অবজারভেটরির সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, মাঠের মতোই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সবচেয়ে এগিয়ে আছে রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা। ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক, এক্স, টিকটক ও ইউটিউব- এই পাঁচটি প্ল্যাটফর্ম মিলিয়ে বিশ্বে রিয়াল মাদ্রিদের অনুসারী ৪৭ কোটি ৩০ লাখ। আর বার্সেলোনার অনুসারী সংখ্যা ৪২ কোটি ৭৪ লাখ।
ফুটবল অবজারভেটরি হলো সুইজারল্যান্ডভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর স্পোর্টস স্টাডিজের (সিআইইএস) একটি স্বাধীন গবেষণা দল। যারা বিশেষভাবে ফুটবলের তথ্য-উপাত্ত নিয়ে কাজ করে থাকে।
২০২৫ সালে ফুটবল অবজারভেটরি প্রতিষ্ঠার পর থেকে খেলোয়াড়দের শ্রমবাজার ও দলবদলের বাজার নিয়ে অর্থনৈতিক গবেষণার ক্ষেত্রে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে পরিণত হয়েছে। পাশাপাশি ক্লাব ও খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ এবং দলবদলের মূল্যের বৈজ্ঞানিক অনুমান নিয়েও কাজ করে তারা। বিশ্বের ফুটবল সংস্থাগুলো, যেমন- ফিফা, উয়েফা, ইসিএ, সাফসহ বিশ্বের অনেক স্বনামধন্য ক্লাব ফুটবল অবজারভেটরির তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার করে।
অবজারভেটরির এই প্রতিবেদনে জুন ২০২৫ সাল পর্যন্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্লাবগুলোর একটা তালিকা করা হয়েছে। যেখানে শীর্ষ ১০০টি ক্লাবের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বলতে ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক, এক্স, টিকটক ও ইউটিউব- বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই পাঁচ প্ল্যাটফর্মকে ধরা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইনজুরির ভান করে ইউরো না খেলার কথা ভেবেছিলেন মোরাতা
ফুটবল অবজারভেটরির প্রতিবেদনের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদের জনপ্রিয়তার পেছনে বড় অবদান লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর। ঐতিহাসিক একটা দ্বৈরথ তো ছিলই, এখনো আছে। তবে একবিংশ শতাব্দীতে রোনালদো ও মেসি রিয়াল এবং বার্সেলোনাকে একেবারে বিশ্বজুড়ে পৌঁছে দিয়েছেন।
নিকট অতীতে বড় কোনো সাফল্য নেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের। কিন্তু তারপরও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জনপ্রিয়তার বিচারে এখনো তৃতীয় ইংল্যান্ডের ইতিহাসে অন্যতম সফল এই ক্লাব।
ফুটবল অবজারভেটরির প্রতিবেদন বলছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এখনো ইউনাইটেডের অনুসারী ২৩ কোটি ৩৬ লাখ। তবে রিয়াল ও বার্সেলোনার ক্ষেত্রে যেমন সবচেয়ে বেশি অনুসারী ইনস্টাগ্রামে (রিয়ালের ১৭ কোটি ৫৮ লাখ, বার্সার ১৪ কোটি ১৬ লাখ), ইউনাইটেডের বেলায় সেটি নয়। ইউনাইটেডের সবচেয়ে বেশি অনুসারী ফেসবুকে, ৮ কোটি ৫১ লাখ।
অন্যদিকে সাম্প্রতিক সাফল্যে জনপ্রিয়তা বেড়েছে ম্যানচেস্টার সিটি ও প্যারিস সেইন্ট জার্মেই-এর। চলতি বছর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জেতে পিএসজি। আর ২০২৩ সালে এই শিরোপা জিতেছে ম্যানচেস্টার সিটি। তবে সিটির চেয়ে পিএসজিই কিছুটা এগিয়ে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের অনুসারী ১৯ কোটি ৯৪ লাখ। সিটির অনুসারী ১৭ কোটি ৯৫ লাখ।
আরও পড়ুন: ১০ দিনের কেনাবেচা শেষে কোন দলের কত খরচ?
এ তালিকায় সেরা দশে আছে পাঁচটি ইংলিশ ক্লাব। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ম্যানচেস্টার সিটি ছাড়াও আছে লিভারপুল, চেলসি ও আর্সেনাল। ক্লাবগুলোর ঐতিহ্য আর ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু’ এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছে।
বর্তমানে মেসি খেলছেন যুক্তরাষ্ট্রের দল ইন্টার মায়ামিতে। আর রোনালদো খেলছেন সৌদি আরবের দল আল নাসরে। দুই ক্লাবের কোনোটিই বিশ্ব ফুটবলের পরাশক্তি নয়, এবং কী খুব একটা পরিচিতও নয়। তবুও মেসি-রোনালদোর মতো মহাতারকার প্রভাব পড়েছে এই দুই ক্লাবে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেড়েছে তাদের অনুসারী।
রোনালদোর আল নাসর আছে তালিকার ১৬ নম্বরে, ক্লাবটির অনুসারী ৬ কোটি ২০ লাখ। মেসির মায়ামি ২৩ নম্বরে, তাদের অনুসারী ৩ কোটি ২৩ লাখ। তালিকার ৩১ নম্বরে আছে নেইমারের সান্তোস, বর্তমানে তাদের অনুসারী ২ কোটি ৪৩ লাখ।
গত বছর জুন থেকে এখন পর্যন্ত এক বছরেই সান্তোসের অনুসারী বেড়েছে ১ কোটি ২ লাখ। এ সময়ে বিশ্বের আর কোনো ক্লাবের অনুসারী এত পরিমাণ বাড়েনি।
]]>