তিন সন্তানকে নিয়ে বৃহস্পতিবার (১২ জুন) লন্ডনের উদ্দেশ্যে পাড়ি দেয়ার কথা ছিল উদয়পুরের ডাক্তার দম্পতির। বৃহস্পতিবারের তাদের এই বিমান সফর হওয়ার কথা ছিল এক নতুন জীবনের শুরু।
কমি ব্যাস, উদয়পুরের একটি হাসপাতালের নারী চিকিৎসক। সম্প্রতি চাকরি ছেড়েছিলেন একটাই কারণে, লন্ডনে চিকিৎসক স্বামী প্রতীক যোশীর সঙ্গে নতুন করে জীবন শুরু করবেন বলে। সেই সফরের আগে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানের ৬৯ থেকে ৭৩ নম্বর আসনে বসেই স্বামী-স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে একটি সেলফি তুলেছিলেন কমি। সকলের হাসিমুখ।
আরও পড়ুন: গুজরাট ট্রাজেডি /লন্ডনে স্বামীর কাছে যাওয়া হলো না খুশবুর
যেখানে দেখা যাচ্ছে কমির পাশে বসে হাসছেন প্রতীক। অন্যদিকে সিটে বসা তাদের যমজ দুই পুত্র ও কন্যা। ছেলেরা ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে হাসার চেষ্টা করছে, মেয়ে মিরায়ার মুখে ফেটে পড়ছে উচ্ছ্বাস। কে জানত এই ছবিই তাদের শেষ সেলফি!
প্রতীক-কমি দু’জনেই আগে উদয়পুরের প্যাসিফিক হাসপাতালে কাজ করতেন। প্রতীক কিছুদিন আগেই লন্ডনে চাকরি পেয়েছিলেন। কয়েকদিন আগে রাজস্থানের বাঁশওয়াড়ায় ফিরে এসে পরিবারের সকলকে নিয়ে যান আহমেদাবাদ। সেখান থেকেই লন্ডন যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের।
দম্পতির দুই যমজ পুত্র, নকুল ও প্রদ্যুৎ-এর বয়স মাত্র পাঁচ বছর। বড় মেয়ে মিরায়ার আট। তাদের আত্মীয় নয়ন জানিয়েছেন, ‘প্রতীক সম্প্রতি এখানে এসেছিল। গতকাল আহমেদাবাদে রওনা দেয় লন্ডন যাবে বলে। সিঅফ করতে গিয়েছিল পরিবারের অনেকেই।’
কমির ভাই প্রাবুদ্ধ জানিয়েছেন, প্রায় দশ বছর আগে তার বোনের সঙ্গে প্রতীকের বিয়ে হয়। প্রতীকের বাবা একজন নামী রেডিওলজিস্ট এবং কমির বাবা পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্টের অফিসার। প্রতীকের এক বোনও আছেন, যিনি পেশায় ইঞ্জিনিয়ার।
আরও পড়ুন: ভারতে বিমান বিধ্বস্ত /শেষ রক্ষার সুযোগই পাননি পাইলট, কেমন ছিল শেষ ১০ মিনিট?
কিন্তু বৃহস্পতিবার সর্দার বল্লভভাই বিমানবন্দর থেকে বিমানে ওঠার সময় কেউ কি জানত, একসঙ্গে তোলা সেই সেলফিই হবে তাদের শেষ পারিবারিক ছবি? আনন্দের মুহূর্তে তোলা সেই ছবিই যেন আজকের বিমান দুর্ঘটনার নিরব সাক্ষী হয়ে রয়ে গেল।
সূত্র: দ্য ওয়াল