তাদের দাবি, আন্দোলনকে রাজনৈতিক ট্যাগমুক্ত রাখতেই সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়নি। তবে জুলাই পরবর্তী স্বীকৃতি নিয়ে রয়েছে কিছুটা অসন্তোষ। দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে জুলাইয়ের সব অংশীদারকে সমান গুরুত্বের দাবি দলগুলোর।
কোটা আন্দোলন থেকে এক দফা, রক্তাক্ত জুলাই শেষে হাসিনা সরকারের পতন। পুরো আন্দোলনে সাধারণ ছাত্রজনতার অংশগ্রহণের অন্তরালে কাজ করেছে রাজনৈতিক শক্তি।
আওয়ামীবিরোধী শক্তিগুলোর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আন্দোলনে অংশ নেয় ইসলামী দলগুলোও। একাধিক দলের নেতার দাবি, রাজনৈতিক ব্যানার আড়াল করতেই পেছন থেকে আন্দোলন চালিয়ে গেছেন তারা। যদিও ইসলামী আন্দোলন বলছে, জুলাই আন্দোলনে দলীয় ব্যানার নিয়েই মাঠে ছিলেন তারা।
খেলাফত মজলিস মনে করে, ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়েছে শাপলা চত্বর থেকেই। আর জামায়াতে ইসলামী মনে করে, জামায়াত-শিবিরকে সবচেয়ে বড় হুমকি মনে করতো পতিত আওয়ামী লীগ সরকার।
ইসলামী আন্দোলন বলছে, সরকার পতনের দাবিতে প্রথমে পাঁচ আগস্ট কর্মসূচি ছিল তাদের দলীয়। পরে শিক্ষার্থীদের ঘোষণার পর একাত্মতা প্রকাশ করে সেখানে।
আরও পড়ুন: ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ ছিল জামায়াত
জুলাই পরবর্তী স্বীকৃতি নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি অসন্তুষ্টি রয়েছে কিছু ইসলামী দলের। তাদের দাবি, দলমত বিবেচনা না করে জুলাইয়ে অংশগ্রহণ করা সবাইকে সমান গুরুত্ব দেয়া উচিত।
জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘তখন আমাদের নামটা সামনে আনতে দেইনি। চেষ্টা করেছি না আসতে। কারণ ওই আন্দোলনকে দলীয় রূপ দিলে সার্বজনীনতা হারিয়ে ফেলত। এখানে আমরা সফল হয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকার দেখেছে তাদের পতনের আন্দোলনে, সবচেয়ে শক্তিশালী এবং ইফেক্টিভ শক্তি জামায়াত ইসলামী-ছাত্রশিবির। জামায়াতকে সরকারের নিষিদ্ধ ঘোষণা করাটাই আমাদের ডকুমেন্ট, কারা আন্দোলনে সরকারের জন্য বেশি থ্রেড ছিল, কাদের ব্যাপারে তারা দুশ্চিন্তায় ছিল, কাদের আন্দোলনে তারা ভয় পাচ্ছিল।’
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব জালালুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনের সময় যাত্রাবাড়ীতে আমাদের ছাত্ররাই দখলে রেখেছিল কয়েকদিন। এই আন্দোলনে ইসলামী দলগুলোর শতাধিক নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন। দীর্ঘ ১৫-১৬ বছর আন্দোলন করতে করতে একটা পর্যায়ে এসে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান সৃষ্টি হয়। আমি মনে করি, ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সূচনা শাপলা চত্বর থেকে।’
আরও পড়ুন: ‘জুলাই ৩২’: যুবদলের অংশগ্রহণে আন্দোলন হয়ে ওঠে অপরাজেয়
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুখপাত্র গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘ছাত্রদের পাশাপাশি রাজনৈতিক দল হিসেবে একমাত্র ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ব্যানার নিয়ে রাজপথে ছিল। আমরা মাস্টারমাইন্ড দাবি করি না। তবে আমাদের লাখ লাখ নেতাকর্মী কীভাবে আন্দোলনে ছিল সেই তথ্যগুলো মিডিয়ার কাছে আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘১৮ জুলাই চরমোনাই পীর নেতাকর্মীদের ঢাকায় মাঠে নামার নির্দেশ দেন। ১৯ জুলাই আমাদের সমাবেশ ছিল। সে সময় পুলিশ নেতাকর্মীদের ওপর গুলি চালায়। এতে ৪০-৫০ জন নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হন। পরবর্তী ৫ আগস্ট সারা দেশে আমাদের কর্মসূচি ছিল। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল ৬ আগস্ট, পরবর্তীতে তারা কর্মসূচিটা একদিন এগিয়ে নিয়ে এলো। এজন্য আমাদের কর্মসূচি স্থগিত করে ছাত্রদের সঙ্গে যুক্ত হই।’
]]>