স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটির ‘ওপরে ফিটফাট ভেতরে সদরঘাট’

১ দিন আগে
জনবল কাঠামো অনুমোদন না হওয়ায় তিন বছরেও চালু হয়নি ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আন্তবিভাগ। ধুলায় ঢেকে আছে ওয়ার্ড, কেবিন ও শয্যা। চারতলা ভবনের সুন্দর অবকাঠামো দেখলে মনে হয় এখানে উন্নত চিকিৎসা পাওয়া যায়, বাস্তবে চিত্র ভিন্ন।

২০২২ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ৫০ শয্যার তারাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি চালু হয়। তবে আন্তবিভাগ চালু না থাকায় অপারেশন থিয়েটারের যন্ত্রপাতিও নষ্ট হচ্ছে ব্যবহারের অভাবে। জরুরি ও বহির্বিভাগ চালু থাকলেও সেবার মান সন্তোষজনক নয়। চালক না থাকায় বন্ধ রয়েছে অ্যাম্বুলেন্স সেবা। সিভিল সার্জনের দাবি, জনবল ছাড়াই বিগত সরকার হাসপাতালটি চালু করায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

 

তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় গিয়ে দেখা যায়, রোগীদের জন্য বরাদ্দ ওয়ার্ড, কেবিন, বেড ও বালিশ ধুলায় একাকার। অপারেশন থিয়েটার থাকলেও তা চালু হয়নি। ব্যবহারের অভাবে যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

 

চালু না থাকায় ধুলার আস্তরণ পড়ে আছে শয্যাগুলোতে। ছবি: সময় সংবাদ

 

তিন বছর পার হলেও জনবল কাঠামোর অনুমোদন না থাকায় এখনও চালু হয়নি ইনডোর বিভাগ। জরুরি বিভাগ এবং বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৬৫০ থেকে ৭৫০ জন রোগী এলেও সেখানেও নেই প্রয়োজনীয় ওষুধ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ। জটিল রোগ তো দূরের কথা, ডায়রিয়া বা নিউমোনিয়ার মতো সাধারণ রোগের চিকিৎসার জন্যও রোগীদের ফুলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কিংবা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটতে হয়। চালক না থাকায় বন্ধ রয়েছে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সটিও।

 

আরও পড়ুন: ময়মনসিংহের মহাসড়কে অবাধে অবৈধ যান, হরহামেশাই যাচ্ছে প্রাণ

 

রোগীরা অভিযোগ করে বলেন, ‘হাসপাতালে ছোটখাটো চিকিৎসা পেলেও বড় রোগে কিছুই হয় না। ভর্তি করায় না। কোনো সিটও নেই। চিকিৎসা ব্যবস্থা আরও উন্নত হওয়া দরকার। জটিল রোগে ময়মনসিংহ যেতে হয়। এখানে যেন সেইসব চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়।’

 

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, জুনিয়র কনসালট্যান্টের জন্য ১০টি পদ চাওয়া হলেও অনুমোদন হয়েছে মাত্র চারটি। ৫০ শয্যার একটি হাসপাতালের জন্য যেখানে ১৯ জন মেডিকেল অফিসার প্রয়োজন, সেখানে রয়েছে মাত্র দুইজন।

 

প্রতিদিন কয়েক শতক লোক আসেন চিকিৎসা সেবা নিতে কিন্তু তারা হতাশ হয়ে ফিরে যান। ছবি: সময় সংবাদ

 

তারাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অভিজিৎ লোহ বলেন, ‘ইনডোর চালু হয়নি। সেবার মান বাড়াতে হলে স্ট্যান্ডার্ড সেটআপ অনুযায়ী চিকিৎসক ও কর্মচারীর পদগুলো দ্রুত সৃষ্টি হওয়া জরুরি। ইতোমধ্যে ৩২টি পদের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।’

 

সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ছাইফুল ইসলাম খান বলেন, ‘পদ সৃষ্টি না করেই বিগত সরকার প্রতিষ্ঠানটি চালু করে দেয়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আমরা কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছি। পদ অনুমোদন ও চিকিৎসক বরাদ্দ পেলেই ইনডোর সার্ভিস চালু করা সম্ভব হবে।’

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন