স্ত্রীর প্রতি সদয় আচরণই ইসলামের শিক্ষা

২ সপ্তাহ আগে
স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি ভালোবাসা, সম্মান, পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে গড়ে ওঠে। ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা, প্রতিটি ক্ষেত্রে ভারসাম্য ও ন্যায়ের প্রতি জোর দেয়। তবে কখনো কখনো পারিবারিক জীবনে বিভিন্ন কারণে সমস্যা দেখা দিতে পারে এমন পরিস্থিতিতে ইসলামের নির্দেশনা কী?

প্রথমত ধৈর্য ধারণ করা, সমস্যা সমাধানের জন্য শান্তি ও সহনশীলতার পথ অনুসরণ করা। কোরআন ও হাদিসে স্বামীকে স্ত্রীর প্রতি সহনশীল হওয়া এবং ন্যায়সঙ্গত আচরণ করার সুস্পষ্ট নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অনুরূপ স্ত্রীকেও স্বামীর প্রতিও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

 

স্ত্রী অভদ্র ও বদমেজাজি হলেও ইসলাম স্বামীকে ধৈর্য ধারণ করতে বলেছে এবং প্রতিদান হিসেবে পরকালে স্বামীর জন্য মহাপুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছে। স্ত্রীর ভালো দিকগুলো নিয়ে বেশি বেশি চিন্তা করতে বলেছে। 

 

আরও পড়ুন: সাপ-বিচ্ছু থেকে বাঁচার দোয়া

 

কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করতে বলেছে। কারণ অভদ্র হওয়া সত্ত্বেও সে তো স্বামীর খিদমত, রান্না-বান্না, সংসার পরিচালনা ও সন্তানাদি লালন-পালনসহ প্রতিনিয়ত অসংখ্য সেবা দিয়ে যাচ্ছে। অতএব কদাচিৎ তার পক্ষ থেকে কিছুটা কষ্ট পেলে তা সয়ে যাওয়াই স্বামীর কর্তব্য। এক্ষেত্রে লোকমান হাকীমের একটি ঘটনা থেকে শিক্ষা নেয়া যেতে পারে।

 

প্রসিদ্ধ আছে যে, লোকমান হাকিম একজন কৃতদাস ছিলেন। একবার তার মুনিব তাকে ভালোবেসে তার জন্য বড় একটি লাল বাঙ্গি নিজ হাতে কাটলেন। তারপর বাঙ্গির টুকরোগুলো তার মুখে তুলে দিচ্ছিলেন। লোকমান হাকিম আনন্দচিত্তে খেয়ে চলছিলেন। 

 

মুনিব শেষ টুকরোটি হাতে নিয়ে বললেন, সবগুলো তোমাকে খাওয়ালাম; এটি আমি খাই। তিনি টুকরোটি মুখে নিয়ে সাথে সাথে ফেলে দিলেন। বললেন, বাঙ্গিটি দেখতে এত ভালো অথচ ভেতরে এমন তিতা! তুমি খেলে কীভাবে? লোকমান হাকিম উত্তর দিলেন, আপনার এই হাত থেকে জীবনে কত নেয়ামত লাভ করেছি তার ইয়ত্তা নেই। আজ না হয় একটু কষ্টই পেয়েছি, তাই বলে তা ফিরিয়ে দেই কীভাবে?

 

এই ছিল বুযুর্গ ব্যক্তির কৃতজ্ঞতা। ঠিক স্ত্রীদের ক্ষেত্রেও একই কথা। তাদের থেকে প্রাপ্ত কষ্টের দিকে না তাকিয়ে তাদের দ্বারা অর্জিত সুখের প্রতি লক্ষ্য করা উচিত। তবেই কষ্ট ফুরিয়ে যাবে।

 

স্ত্রী সুন্দরী নয় বা অপছন্দনীয় হলে

 

কারো স্ত্রী অসুন্দর, বেঁটে বা অপছন্দনীয় হলে এসব কারণে যদি পরনারীর প্রতি মন আকৃষ্ট হয় তাহলে ভাবা উচিত যে, আমার পাপের কারণে হয়ত আল্লাহ তাআলা আমার জন্য এই স্ত্রী বরাদ্দ করেছেন। আর সে তার নেক আমলের কারণে আমার মত সুদর্শন স্বামী পেয়েছে।

 

তাহলে আমি হলাম তার নেক আমলের প্রতিদান আর সে হল আমার পাপের প্রায়শ্চিত্ত। তাছাড়া সুন্দর-অসুন্দর ইত্যাদি দোষ-গুণ আল্লাহ তাআলার দান। তাতে স্ত্রীর কোনো ক্ষমতা নেই। আল্লাহ যদি তার স্থানে আমাকে সৃষ্টি করতেন তখন আমারই বা কি করার ছিল! বা এখনো যদি আমার সৌন্দর্য কেড়ে নেন, বিকলাঙ্গ বা পঙ্গু করে দেন তাহলে আমার কি করার থাকবে? তাই এখানেও ধৈর্য ধারণ করা জরুরি। পরস্ত্রীর প্রতি মন আকৃষ্ট হলে ইসলামের নির্দেশ হলো নিজ স্ত্রী নিয়ে মশগুল হয়ে যাওয়া। কারণ হিসেবে হাদিসে বলা হয়েছে,

 

আরও পড়ুন: হাস্যরস করে মিথ্যা বলা কি গুনাহ?

 

فإن معها مثل الذي معها অর্থ: উক্ত নারীর সাথে যা আছে নিজ স্ত্রীর মাঝেও তাই আছে। অতএব পেরেশান হওয়ার কিছু নেই। (সুনানে দারেমি ২৩৮৮)

 

মনে রাখতে হবে, একটি মেয়ে তার বাবা-মা, ভাই-বোন সকলকে ছেড়ে স্বামীর ঘরে আশ্রয় নিয়েছে। এখন স্বামীই তার একমাত্র আপন। সে স্বামীই যদি তার দুঃখ-যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়ায় তাহলে তার জীবনে সুখ পাওয়ার আশা আর কার কাছ থেকে করবে!

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন