ফিফার কংগ্রেসে গতকাল একসঙ্গে ২০৩০ ও ২০৩৪ বিশ্বকাপের আয়োজকের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। ২০৩০ বিশ্বকাপের আয়োজক নিয়ে তেমন কোনো প্রশ্ন না থাকলে ২০৩৪ বিশ্বকাপের আয়োজক নির্বাচনে নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। সমালোচকরা বলছেন, সৌদিকে আয়োজক বানাতে ফিফা নিয়ম লঙ্ঘন করেছে। এক্ষেত্রে তারা তাদের ব্যাখ্যাও দিয়েছে।
বিশ্বকাপের শতবর্ষ উপলক্ষে ২০৩০ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ হবে তিন মহাদেশের ছয়টি দেশে। আফ্রিকা থেকে টুর্নামেন্টটি আয়োজনের দায়িত্ব পেয়েছে মরক্কো। ইউরোপ থেকে এই টুর্নামেন্টের আয়োজক স্বত্ব পেয়েছে স্পেন ও পর্তুগাল। আর লাতিন আমেরিকার আয়োজক আর্জেন্টিনা, উরুগুয়ে ও প্যারাগুয়ে। ২০৩৪ বিশ্বকাপ অবশ্য এককভাবে আয়োজন করবে সৌদি আরব।
ফিফার নিয়মানুযায়ী, ২১১ সদস্য ভোট দিয়ে বিশ্বকাপের আয়োজক নির্বাচন করে। একাধিক প্রতিদ্বন্দ্বী থাকায় এই নির্বাচনও জমে ওঠে বেশ। তবে এবার একই সঙ্গে দুটি বিশ্বকাপের আয়োজক নির্বাচন করেছে ফিফা। আর সেটি করতে গিয়ে ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেছে সংস্থাটি। ২০৩০ এবং ২০৩৪ বিশ্বকাপের আয়োজক নির্ধারণ করা হয়েছে একই ভোটে।
আরও পড়ুন: আনচেলত্তি বিশ্বসেরা, তবে রিয়াল চাইলে কোচ হতে রাজি মরিনহো
৩ মহাদেশের ৬টি দেশ ২০৩০ বিশ্বকাপের আয়োজক হবে, এটা আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল। ৬ টি দেশই এই স্বত্বের জন্য আবেদন করায় তাদের অন্য কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীও ছিল না। আর ২০৩৪ বিশ্বকাপের আয়োজক হওয়ার জন্যও কেবল সৌদি আরবই আবেদন করেছিল।
২০৩০ বিশ্বকাপের আয়োজক হিসেবে ওই ৬ দেশ আগে থেকেই মোটামুটি নিশ্চিত ছিল। সৌদির কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকলেও মূল সমস্যা ছিল দেশটির মানবাধিকার ইস্যু। এই ইস্যুতে অনেক দেশ তাদের বিরোধিতা করতে পারে বলে আগে থেকেই আশঙ্কা করা যাচ্ছিল। এখানেই ফিফা সৌদিকে সুবিধাটা দিয়েছে।
আয়োজক নির্বাচনে এবার হ্যাঁ/না ভোটের আয়োজন করেছে ফিফা। হ্যাঁ ভোট মানে দুই বিশ্বকাপের আয়োজক হতে চাওয়াদের সমর্থন, আর না ভোট মানে দুই বিশ্বকাপের আয়োজক হতে চাওয়াদের বিরুদ্ধে ভোট। যার অর্থ কোনো দেশ যদি সৌদি আরবকে আয়োজক হিসেবে দেখতে না চায়, তবে তারা মরক্কো-স্পেন-পর্তুগাল-আর্জেন্টিনা-চিলি-প্যারাগুয়ের যৌথ আয়োজনের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। এই জটিল হিসেবে মারপ্যাঁচের কারণে অন্য দেশগুলো সৌদির পক্ষেই গিয়েছে।
আরও পড়ুন: ২০৩৪ বিশ্বকাপের আয়োজক সৌদি আরব
এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকায় ব্যালটও ব্যবহার করেনি ফিফা। অনলাইনে হওয়া কংগ্রেসে নির্দেশনা দেওয়া হয় কোনো বিতর্ক ছাড়াই ‘হাত উঁচিয়ে’ নিজেদের অবস্থান জানান দেওয়ার। ভোটাররা দুই বিশ্বকাপের আয়োজক হতে আগ্রহীদের নাম শোনার পর হাততালি দিয়েই সমর্থন জানিয়েছেন।
সমালোচকরা নিয়ম ভঙ্গের কথা বললেও নিয়ম পরিবর্তনের কথা অবশ্য আগেই জানিয়ে রেখেছিল ফিফা। তাদের মতে, সব কনফেডারেশনের সঙ্গে কথা বলেই পরিবর্তনটা করা হয়েছে। তবে কেন দুই বিশ্বকাপের আয়োজক বেছে নেওয়ার ভোট একবারে নেওয়া হয়েছে, সেই ব্যাখ্যা দেয়নি ফিফা।
]]>