বলছি তরুণ উদ্যোক্তা সিফাতের কথা। নিপুন হাতের ছোয়ায় ধীরে ধীরে একটা সময় নিজে নিজেই সুতা দিয়ে আঁকা শুরু করেন। বর্তমানে সফলভাবে সুতা দিয়ে মানুষের ছবি, প্রাণির ছবি, নাম, মোবাইল নম্বর ইত্যাদি আঁকতে পারদর্শী তিনি।
রংপুর নগরীর আমাশু আগরপাড়া কুকরুল গ্রামের বাসিন্দা মো. শাহালম হোসেনের বড় ছেলে সিফাত রহমানের উদ্যাক্তা হওয়ার গল্পটা যেন ভিন্নরকম। তিনি ২০১৬ সালে আমাশু প্রগতি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। ২০২১ সালে কুড়িগ্রাম পলিটেকনিক ইন্সিটিউট থেকে ডিপ্লোমা শেষ করেন। করোনাকালীন সময়ে অনলাইনে নানা ধরনের কাজের সন্ধান করেন। কিন্তু কোথাও কাজ না পেয়ে উদ্যোক্তা হওয়ার চিন্তা ভাবনা শুরু করেন। প্রতিনিয়ত ফেসবুক ও ইউটিউবে নানা ধরনের ভিডিও দেখতে শুরু করেন তিনি। এরপর শুরু হয় তার উদ্যোক্তা হওয়ার যাত্রা।

তরুণ উদ্যোক্তা সিফাত রহমান বলেন, আমি প্রথমে অনলাইন রোবটিক ভয়েসে কাজ করতাম। আমেরিকানরা স্ক্রিপ্ট দিতো আমি ভয়েস তৈরি করে দিতাম। এটা আমি আবার বিক্রি করতাম তাদের কাছে। কিন্তু যখন এআই আসলো তখন অটোমেটিক জেনারেট হয়ে যাচ্ছে। তখন আমার কাজটা চলে যায়। হঠাৎ করে কাজ চলে গেছে, এখন আমি কি করবো। আমার আগেই থেকেই চিন্তা-ভাবনা ছিলো চাকরি-বাকরি করবো না। এমন ধরনের চিন্তা ছিল ছোটবেলা থেকে যে আমি উদ্যোক্তা হবো।
আরও পড়ুন: রংপুর স্টেডিয়ামের নতুন নাম ‘শহীদ আবু সাঈদ স্টেডিয়াম’
সিফাত রহমান আরো বলেন, অনেকেই বিভিন্ন গিফট ও বাচ্চাদের ছবি তৈরি করে নেয়। এছাড়া বিয়ে বাড়ি ও জন্মদিনসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এগুলো উপহার হিসেবে দেয়ার জন্য মানুষ কিনে নেয়। অনেকেই কিনে নিয়ে বিদেশে পাঠায়। এই কাজটা ইউনিক কারণ এটা শুধুমাত্র সুতা দিয়ে তৈরি হয়। এখন অর্ডার আসে প্রতিনিয়ত কাজ করছি।
সিফাতের কর্মদক্ষতা আর পরিশ্রমে করা এই ব্যবসায় সহযোগিতা করেন তার পরিবারও। ছেলের সফলতায় গর্বিত সিফাতের মা।
সিফাতের মা মোছা. শিউলি বেগম বলেন, প্রথমে অনলাইন একটা কাজ করতেছিলো ছেলেটা। যখন সেটা চলে গেল আমরা খুব চিন্তায় ছিলাম। পরে ধীরে ধীরে মোবাইলে একটা কাজকর্ম বের করে সুতা দিয়ে ছবি আকার প্রিন্ট তৈরি করলো। করার পর যখন শুরু করলো তখন প্রথমে একটা দুইটা অর্ডার আসতেছিল। তখন ভাবতেছিলাম ছেলে কিছু না কিছু করে খেতে পারবে তাতেই খুশি আমরা। তখন আমাদের অনেক লোন ছিলো। এই কাজের মাধ্যমে সব লোন শোধ হয়ে গেছে। পরিবার ভালো চলতেছে।
আরও পড়ুন: রংপুরে নারীকে পুড়িয়ে হত্যা, প্রধান আসামি গ্রেফতার
উল্লেখ্য, গত ৫ মাস আগে এই কাজ শুরু করে উদ্যোক্তা সিফাত রহমান। প্রতিমাসে আয় করছেন ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। বর্তমানে চার থেকে পাঁচজনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করেছেন তিনি।
]]>