সিরিয়ার ১৬০ লক্ষ্যবস্তুতে হামলা ইসরাইলের

৪ সপ্তাহ আগে
ফিলিস্তিন ও লেবাননের পাশাপাশি সিরিয়ায় অব্যাহতভাবে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। গত সোমবার (১৪ জুলাই) থেকে বুধবার (১৬ জুলাই) সন্ধ্যা পর্যন্ত দক্ষিণ সিরিয়ার সোয়েইদা ও এর আশেপাশের এলাকায় সরকারি বাহিনীর অবস্থান লক্ষ্য করে অন্তত ১৬০টি আঘাত হেনেছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ)। খবর জেরুসালেম পোস্টের।

এছাড়া আইডিএফ সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে হামলা চালিয়েছে এবং দামেস্কের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের একটি অংশেও বোমাবর্ষণ করেছে। এই হামলায় কয়েক ডজন বা তারও বেশি সিরীয় সেনা নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। 

 

আইডিএফ সূত্র জানিয়েছে, তারা সিরিয়ার বাহিনীকে সোয়েইদা থেকে সরাতে এবং সিরীয় দ্রুজদের জন্য স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করতে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য সামরিক অভিযান চালাতে প্রস্তুত রয়েছে।

 

এদিকে সিরিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে তুর্কি সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, বুধবার সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইসরাইলি বিমান হামলায় কমপক্ষে তিনজন নিহত এবং ৩৪ জন আহত হয়েছে। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা জানিয়েছে, ইসরাইলি যুদ্ধবিমান জেনারেল স্টাফ কমপ্লেক্স এবং প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ কাসর আল-শাবে হামলা চালিয়েছে।

 

ইসরাইলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) বুধবারই বিমান হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে এবং প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে হামলাকে ‘সতর্কতামূলক হামলা’ বলে অভিহিত করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বহু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে যেখানে দামেস্কে ইসরাইলি হামলার মুহূর্তগুলো দেখানো হয়েছে, যেখানে এলাকা থেকে ধোঁয়া উড়ছে।

 

আরও পড়ুন: সিরিয়ায় সাম্প্রদায়িক সংঘাতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৪৮

 

ইসরাইলি সেনাবাহিনীও হামলার ভিডিও প্রকাশ করেছে। সানা আরও জানিয়েছে, ইসরাইলি যুদ্ধবিমানগুলো দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ দারা ও রাজধানী দামেস্কের কাতানা শহরে বেশ কয়েকটি বিমান হামলা চালায়। বুধবার ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাৎজের হুমকির পরপরই এই হামলা চালানো হয়।

 

গত রোববার (১৩ জুলাই) দামেস্ক অভিমুখী মহাসড়কে সুন্নি বেদুঈন গোত্রের সশস্ত্র সদস্যরা একজন দ্রুজ গোত্রীয় সবজি বিক্রেতাকে অপহরণ করেন। এরপর প্রতিশোধমূলক পাল্টা অপহরণ শুরু হয়। সেখান থেকেই সংঘাতের সূত্রপাত।

 

অপহরণের শিকার হওয়া ব্যক্তিরা এক পর্যায়ে মুক্তি পেলেও সংঘাত বন্ধ হয়নি। গত সোমবার দিনজুড়ে সোয়েইদা শহরের বাইরে সংঘাত অব্যাহত ছিল। ব্রিটেনভিত্তিক যুদ্ধ পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের (এসওএইচআর) বরাতে বুধবার এক প্রতিবেদনে এএফপি জানায়, গত কয়েকদিনের সংঘাতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৪৮ জনে দাঁড়িয়েছে।

 

এসওএইচআরসির তথ্য মতে, নিহতদের ৯২ জন সংখ্যালঘু দ্রুজ সম্প্রদায়ের সদস্য। এর মধ্যে ২১ জন সিরীয় সেনাবাহিনীর হাতে নিহত হয়েছে। এছাড়া কমপক্ষে ১৩৮ জন নিরাপত্তা কর্মী এবং ১৮ জন বেদুইন যোদ্ধা নিহত হয়েছেন।

 

আরও পড়ুন: গাজার ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে আরও ২১ জনের মৃত্যু

 

সংঘাতের পরই সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারা (আগের নাম আবু মোহাম্মদ আল জোলানি) নেতৃত্বাধীন সরকার সংঘাত বন্ধে দ্রুত গুরুত্বপূর্ণ কিছু পদক্ষেপ নেয়। যেমন বাড়তি সেনা মোতায়েন এবং বেসামরিক মানুষদের জন্য নিরাপদ করিডর তৈরি। 

 

সরকারের এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন শুরু হলে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে ইসরাইল। সোমবার সিরীয় সেনাবাহিনী সাজোঁয়া যান ও ট্যাঙ্ক নিয়ে সোয়েইদা অভিমুখে রওনা হয়, তখন ইসরাইলি বাহিনী বেশ কয়েকটি ট্যাঙ্ক লক্ষ্য করে হামলা চালায়। ইসরাইল বলছে, তারা যেকোনো মূল্যে সিরিয়ার দ্রুজ সম্প্রদায়ের সদস্যদের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে। 

 

দ্রুজরা নিজেদেরকে শিয়া ইসলামের একটি শাখা বলে দাবি করে। লেবানন, জর্ডান ও ইসরাইলেও এদের অনেক অনুসারী আছে। যদিও এসব হামলায় কতগুলো ট্যাংক ধ্বংস হয়েছে বা কতজন সেনা হতাহত হয়েছে, তা জানানো হয়নি। তবে আরব দেশগুলো ইসরাইলি হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।  

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন