জানা গেছে, ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার (১২ জুন) মধ্যরাতে সদর উপজেলার চামেশ্বরী চৌধুরীহাট এলাকার বাসিন্দা উত্তম শর্মা তার স্ত্রী মালতি রানীর প্রসববেদনা উঠলে ঠাকুরগাঁও শহরের নিউ প্রাইম প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যান।
এ সময় হাসপাতালের ম্যানেজার অমল চন্দ্র রায় তাদের সঙ্গে সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য মৌখিক চুক্তি করেন এবং রোগীকে ভর্তি করিয়ে নেন। কিন্তু ভর্তি করার পর চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতে ম্যানেজার নিজেই ব্যথানাশক ইনজেকশন দেন ও কিছু ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে বাড়ি চলে যান। এরপর রাতভর চিকিৎসকের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন রোগী ও স্বজনরা।
তাদের অভিযোগ, রাতে অনেক ডাকাডাকির পরেও কোনো চিকিৎসক বা নার্স আসেননি, ফলে দীর্ঘ প্রসব যন্ত্রণার পর গর্ভেই মারা যায় নবজাতকটি।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, চিকিৎসক আসবেন বলে অপেক্ষা করতে করতে বাচ্চাটা মায়ের পেটেই মারা গেল। বারবার নার্সদের ডেকেও কাউকে পাওয়া যায়নি। এটা অবহেলা ছাড়া আর কিছু না।
আরও পড়ুন: মেয়াদোত্তীর্ণ ইনজেকশনে ২ নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ
এ ঘটনায় শুক্রবার (১৩ জুন) সকালে হাসপাতালটিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। উত্তেজিত লোকজন ভিড় করলে থানা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে হাসপাতালের ম্যানেজার অমল চন্দ্র রায় বলেন, ‘রোগীটি রাত ২টার পর ভর্তি হয়। ভর্তির আগেই তারা বাসায় একজন নারীর মাধ্যমে ডেলিভারির চেষ্টা করেছিলেন, যা ব্যর্থ হয়। আমরা চেষ্টা করেছি সিজারের জন্য, কিন্তু গভীর রাতে কোনো গাইনি চিকিৎসক আসতে রাজি হননি। ব্যথা বেশি থাকায় ইনজেকশন দেয়া হয়েছিল। সম্ভবত পরে তারা আবার চেষ্টা করেন প্রসব করাতে, আর তখনই নবজাতক মৃত অবস্থায় জন্ম নেয়। এখানে কারও অবহেলা ছিল না।’
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের সিভিল সার্জন ডা. মো. আনিছুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাটি সম্পর্কে মৌখিকভাবে শুনেছি। এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবার মান নিয়ে আবারও প্রশ্ন তুলেছে এই ঘটনা। ভুক্তভোগী পরিবার দ্রুত তদন্ত ও দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে।