প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর ভ্রমণে গিয়ে খাবার ও পানীয়র সঙ্গে বিষ (সায়ানাইড) মিশিয়ে এক ধনী বন্ধুকে হত্যা করেন সারারাত। শুরুতে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কিন্তু এটিকে স্বাভাবিক মৃত্যু মানতে নারাজ ছিলেন তার আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধব।
পরে ময়নাতদন্তে তার শরীরে সায়ানাইডের উপস্থিতি পাওয়া গেলে তদন্তের সূত্র ধরে সারারাতকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আর এরই তদন্ত করতে গিয়ে ২০১৫ সালের পর থেকে এমন আরও কয়েকটি মৃত্যুর ঘটনায়ও সারারাতের সম্পৃক্ততা খুঁজে পায় পুলিশ। পাশাপাশি সৌভাগ্যজনকভাবে তার হাত থেকে বেঁচে যাওয়া একজনেরও হদিস পাওয়া যায়।
পুলিশ জানায়, থাইল্যান্ডের গণমাধ্যমে ‘অ্যাম সায়ানাইড’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন সারারাত। জুয়া খেলার প্রতি আসক্তি ছিল তার। টাকা-পয়সাওয়ালা বন্ধুদেরই টার্গেট করতেন তিনি। পরে সায়ানাইড দিয়ে হত্যা করে তাদের গয়না এবং মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি করতেন।
আরও পড়ুন: চলতি বছর শতাধিক বিদেশির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করলো সৌদি
পুলিশ আরও জানায়, গত বছরের এপ্রিলে ৩২ বছর বয়সি বন্ধু সিরিপর্ন খানওংকে সঙ্গে নিয়ে ব্যাংককের পশ্চিমে অবস্থিত রাচাবুরি প্রদেশে ভ্রমণ করতে গিয়েছিলেন সারারাত। সেখানে একটি নদীতে তারা একটি বৌদ্ধ আচারে অংশ নিয়েছিলেন।
তদন্তকারীরা জানান, সারারাতের সঙ্গে খাবার গ্রহণের পর সিরিপর্ন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। একপর্যায়ে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। কিন্তু এ সময় মরণাপন্ন বন্ধুকে সাহায্য করার কোনো চেষ্টাই করেননি সারারাত।
ময়নাতদন্তে সিরিপর্নের শরীরে সায়ানাইডের চিহ্ন পাওয়া যায়। যেখান থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়েছিল, সেখান থেকে তার ফোন, টাকা এবং ব্যাগ খোয়া গিয়েছিল বলেও জানায় পুলিশ।
আরও পড়ুন: মার্কিন নাগরিক হত্যাকারী অভিবাসীদের মৃত্যুদণ্ড চান ট্রাম্প
বিচারে সারারাতের স্বামী ছাড়া তার আইনজীবী ও একজন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তাকেও বিচার এড়াতে প্রমাণ লোপাটের জন্য অভিযুক্ত করেছেন আদালত। বিচারে তাদের যথাক্রমে এক বছর, দুই বছর ও চার মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
এছাড়া, হত্যাকাণ্ডের শিকার সিরিপর্নের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ২০ লাখ থাই মুদ্রা দেয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।