সরেজমিনে কমলাপুরে গিয়ে দেখা যায়, যেন ট্রেনের ভাগাড়। ঘন জঙ্গলে খোলা আকাশের নিচে পড়ে আছে একেকটি। দেখতে নতুন হলেও খসে পড়েছে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ। খুবই নাজুক অবস্থা ডেমু ট্রেনের।
রেল সূত্রে জানা গেছে, ৩০ বছর সেবা দেয়ার কথা বলে ১০ বছর আগে সাড়ে ৬০০ কোটি টাকায় চীন থেকে আমদানি করা হয় ২০টি ডেমু। ৫ থেকে ৬ মাস যেতে না যেতেই বিকল হওয়া শুরু হয়। নতুন এ প্রযুক্তি নিয়ে ধারণা না থাকায় মেরামত করতে ব্যর্থ হন মেকানিকরা। মাঝে মধ্যে সচল হলেও ৩ বছর আগে স্থায়ীভাবে বিকল হয়ে গেছে ২০টি ডেমু ট্রেনই।
রেল কর্মীরা বলছেন, ডেমু মেরামতের কোনো ওয়ার্কশপ না বানিয়েই কেনা হয় ট্রেন, ছিল না রক্ষণাবেক্ষণের বন্দোবস্ত, ডেমু সম্পর্কে কোনো ট্রেনিংও দেয়া হয়নি তাদের। এমনকি দেশীয় বাজারে এর কোনো যন্ত্রাংশও পাওয়া যায় না। ফলে কয়েকবার মেরামতের উদ্যোগ নিয়েও ব্যর্থ তারা।
আরও পড়ুন: ৭০ শতাংশই মেয়াদোত্তীর্ণ ইঞ্জিন দিয়েই চলছে ট্রেন, বাড়ছে দুর্ঘটনা
সাড়ে ৬০০ কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হওয়ার পর ডেমু মেরামতের সক্ষমতা না থাকার কথা স্বীকার করে রেলওয়ে মহাপরিচালক আফজাল হোসেন বলছেন, এগুলো নিলামে বিক্রির পরিকল্পনা চলছে।
সময় সংবাদকে তিনি বলেন, ‘যেটা চালাবো না বা চলছে না, সেটাকে আমরা অকেজো ঘোষণা করি। তখন সেটাকে আমরা নিলামে বিক্রি করার চিন্তা করি।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উপযোগিতা না থাকার পরও শুধু ব্যক্তির লাভের আশায় ডেমু প্রকল্প নেয়া হয়েছিল। রেলে এমন আরও প্রকল্প আছে জানিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান তাদের।
আরও পড়ুন: সাড়ে তিনশ স্থানে ভাঙা রেললাইনেই চলছে ট্রেন!
এ বিষয়ে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. শামসুল হক বলেন,
রেল থেকে কখনোই প্রস্তাব ছিল না। এটা একটা পরিকল্পিতভাবে ওপর দিক থেকে ওহি নাজিল হয়েছে, রেলওয়েতে ল্যান্ড করেছে এবং প্রকল্পটা নেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, সেজন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা এবং জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
জনগণের অর্থের অপচয় হলেও শুধু কোচ সংকটে অনেক নতুন রুটে ট্রেন চালানো সম্ভব হচ্ছে না।
]]>