সাভার বিসিকে চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ঈদের প্রথম দুই দিনে ৫ লাখ পিস। কিন্তু রোববার (৮ জুন) বিকাল পর্যন্ত সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৩ লাখ ৫০ হাজার পিস। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১.৫ লাখ চামড়া কম সংগ্রহ হয়েছে।
চামড়া বিক্রেতারা অভিযোগ করেন, সরকার গরুর চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করেছিল ১৩৫০ টাকা প্রতি পিস, আর ছাগলের চামড়া ২২ টাকা প্রতি বর্গফুট। কিন্তু আড়তদার ও ট্যানারি মালিকরা প্রতিটি গরুর চামড়া কিনেছেন ৪০০ থেকে সর্বোচ্চ ৯০০ টাকা দরে। ছাগলের চামড়া তো কেউ কিনতেই রাজি হয়নি; তাই অনেক জায়গায় বিক্রেতারা ছাগলের চামড়া রাস্তার ধারে ফেলে রেখে চলে গেছেন।
এ নিয়ে চরম হতাশার মধ্যে পড়েছেন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।
তারা বলছেন, ট্যানারি মালিকরা একটি সুপরিকল্পিত সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাজারে দরপতন ঘটিয়ে চামড়া কেনার সুযোগ নিচ্ছেন, যার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
আরও পড়ুন: পানির দামে বিক্রি হচ্ছে চামড়া, মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বলছেন ‘অন্তরালের খেলা চলছে’
অন্যদিকে, ট্যানারি মালিকরা বলছেন, সময়মতো চামড়া সংগ্রহ না হওয়ায় অনেক চামড়ায় পচন ধরেছে, ফলে দাম কমাতে বাধ্য হয়েছেন। বর্তমানে তারা কাঁচা চামড়া কিনবেন না, বরং লবণযুক্ত চামড়া সংগ্রহ করবেন বলে জানিয়েছেন।
পরিস্থিতি পরিদর্শনে ঈদের দিন বিকেলে সাভার বিসিকে আসেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ওবায়দুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘চামড়ার উপযুক্ত মূল্য নিশ্চিত করতে সরকার লবণের ভর্তুকি দিয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে লবণযুক্ত চামড়া বিক্রি করে চামড়া বিক্রেতারা তাদের কাঙ্ক্ষিত মূল্য পেতে পারেন। তবে বাস্তব পরিস্থিতিতে অনেকেই এ উদ্যোগ থেকে উপকৃত হতে পারছেন না।’
বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, শুধু মূল্য নির্ধারণ নয়, মাঠপর্যায়ে কঠোর তদারকি ও বাজার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত না হলে এ সংকট কাটবে না। প্রতিবছর ঈদের পর চামড়া নিয়ে যে অরাজকতা দেখা যায়, তা রোধে কার্যকর নীতিমালা ও তদারকি ব্যবস্থার জোর প্রয়োজন।