গ্রামের আর ১০টি সাধারণ পরিবারের সন্তানের মতোই সাজিবের বেড়ে উঠা। কিন্তু সম্প্রতি হঠাৎ করেই তার নামডাক ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। বাড়িতে ভিড় করতে থাকেন বিভিন্ন এ লাকার লোকজন। বিষম্য়কর প্রতিভার জন্য নেট দুনিয়ায় ভেসে বেড়াচেছ সাজিবের ছবি। পরিচিতি পায় ভাইরালবয় হিসেবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাজিবের একটি ভিডিও ভেসে বেড়াচ্ছে। সেটি দেখলে মনে হবে, মানুষ নয়-যেনো যন্ত্রের কারসাজি! শরীর স্থির রেখে দ্রুত মাথা ঘুরছে দুই পাশে। আবার মাথা স্থির, ঘাড়সহ শরীর ঘুরছে ডানে-বামে। যেন একটি জীবন্ত গিম্বল! প্রথম দেখায় দেখে মনে হতে পারে-এটি কোন উন্নত এআই নির্মিত ভিডিও। কিন্তু বাস্তবে এমন অসম্ভব শারীরিক কসরত দেখাতে পারে কিশোরগঞ্জের স্কুল পড়ুয়া কিশোর সাজিব মিয়া।
অনেক দিন আগের কথা। গিম্বলের মতো মাথা ঘোরানোর একটি ভিডিও দেখে এটি অনুকরনের ইচ্ছা জাগে ১৩ বছরের সাজিবের মধ্যে। আর এক সময় শারীরিক কসরতের এই জটিল বিষয়টি আয়ত্বে আসে তার। এ জন্য পরিবার-পরিজন কিংবা সহপাঠিদের অনেক কটু কথা সহ্য করতে হয়েছে তাকে। কিন্তু কোনো কিছুতেই পিচপা হয়নি সে। ব্যতিক্রম কিছু করে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষনের ইচ্ছা থেকেই বিশেষ শারীরিক খসরত আয়ত্ব করে বলে জানায় সাজিব।
সাজিব জানায়, শরীর স্থির রেখে মাথা দুই পাশে গিম্বলের মতো ঘুরানো এবং মাথা স্থির রেখে শরীর ঘুরানোর চেষ্টা করছে ৬ মাস আগে থেকে। সুযোগ পেরেই সে এমন চেষ্টা চালায়। এক সময় আয়ত্বে আনতে সক্ষম হন। কিন্তু তার বাবা বিষয়টি জানতে পেরে তাকে এমন করতে নিষেধ করেন। মারধর এমনকি বাড়িতে খাবার দেয়া বন্ধ করে দেন। কিন্তু এতেও আমি থেমে যাইনি। ব্যতিক্রম কিছু করে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করাই ছিলো আমার লক্ষ। আমি এটি পেরেছি। এখন দেশের নানা প্রান্ত থেকে রোকজন আমাকে দেখতে আসে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমার শারীরিক কসরত ভাইরাল হয়েছে। বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের সাংবাদিক ও ইউটিউবাররা বাড়িতে আসছেন। সবার সামনে হাসিমুখে আমি শারীরিক কসরত করে দেখাই। এতে আমার খুব ভালো লাগে।
গিম্বলের মতো ঘাড় ঘুরানো ছাড়াও সাজিব অবিকল কাকের ডাক নকল করতে পারে। গলায় বিশেষ সুর তুরে বীন বাজাতে পারে। নকল করতে পারে বিড়ালের ঝগড়া । এ ছাড়া পেটে সাগরের ঢেও তোলে দেখাতে পারে সে।
আরও পড়ুন: কিশোরগঞ্জে রহস্যজনকভাবে ৬ ব্যাংক কর্মকর্তা অচেতন!
সম্প্রতি সাজিবের অস্বাভাবিক ভঙ্গিমায় ঘাড় ও মাথা ঘোরানোর ভিডিও নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে পড়লে আলোচনায় আসে সে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন তার বাড়িতে ভিড় করছে। সবার কাছে বিষ্ময়বালক হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে সাজিব। তার এমন বিষ্ময়কর প্রতিভায় গর্বিত এলাকার মানুষ। সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা পেলে সে আরও বেশি প্রতিভা বিকশিত করতে পারবে বলে মনে করছে এলাকার মানুষ।
সাজিবের বাবা জানান, মাস ছয়েক আগে ছেলের এমন বিপজ্জনক শারীরিক কসরতের বিষয়টি জানতে পারে পরিবারের লোকজন। ঘাড় ভেঙে যেতে পারে, কিংবা ক্ষতিকর কিছু ঘটতে পারে এমন আশঙ্কায় ছেলেকে বারণ করেন বাবা। কয়েকবার শাসনও করেন। কিন্তু গোপনে সেটি চালিয়ে যেতে থাকে সাজিব। এখন দেখছেন ছেলের মাথা ও ঘাড় আচরণ করছে যন্ত্রের মতো। প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকার মানুষ তাদের বাড়িতে যাচ্ছে, সাজিবের খসরত দেখার জন্য। এতে পরিবারের সবাই খুশি বলে জানান, সাজিবের বাবা আলাপ মিয়া।