স্বাধীনতার পর মাত্র দুইটি জাহাজ নিয়ে সমুদ্র বাণিজ্য শুরু করেছিল সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন। আর বেসরকারি পর্যায়ে বাংলাদেশ জাহাজের মালিক হয়েছিল বিগত ২০১৩ সালে। এরমধ্যে মাত্র ১২ বছরে বাংলাদেশি মালিকানাধীন পণ্যবাহী মাদার ভ্যাসেল রয়েছে ১০২টি।
এ অবস্থায় জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থা ইউনাইটেড নেশান লিডিং ইনিস্টিটিউশন ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আঙ্কটাড) রিপোর্টে স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশ। নৌ বাণিজ্য অধিদফতরের প্রিন্সিপাল অফিসার ক্যাপ্টেন সাব্বির মাহমুদ বলেন, এই প্রথম বাংলাদেশ শীর্ষ ৩৫ জাহাজ কেনার তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে। এর ফলে আন্তর্জাতিকভাবে শিপ ওনিং কান্ট্রি হিসেবে পরিচিতি লাভ করব।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে সিদ্ধান্ত বুধবার: নৌ উপদেষ্টা
আঙ্কটাডের তালিকা অনুযায়ী, বিশ্ব সমুদ্র বাণিজ্যে দশমিক ২ শতাংশ হিস্যা রয়েছে বাংলাদেশি মালিকানাধীন জাহাজগুলোর। এসব জাহাজ দিয়ে প্রতি বছর ৫২ লাখ ৫৭ হাজার মেট্রিক টন পণ্য বহন করা হয়। মূলত চট্টগ্রাম বন্দরকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠছে দেশীয় মালিকানাধীন জাহাজের হাজার কোটি টাকার এই বাণিজ্য।
আর তাই এই জাহাজ শিল্পের বিকাশে বন্দরকে আরও বেশি সক্রিয় করার কথা জানালেন বন্দর চেয়ারম্যান। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, ট্রেড রুটের পরিধি বাড়বে। এর সঙ্গে বাড়বে কার্গো প্রবাহ। পাশাপাশি শক্তিশালী হবে বৈশ্বিক বাণিজ্য যোগাযোগ।
আঙ্কটাডের তালিকায় স্থান পাওয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সমুদ্র পরিবহন বাণিজ্যে এখন বাংলাদেশি মালিকদের যেমন কদর বাড়বে, তেমনি বিদেশি ব্যবসায়ীরাও বাংলাদেশি জাহাজ ভাড়া নিতে আর দ্বিধা করবে না। অবশ্য পণ্য নিয়ে আসা বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বার্থিং সুবিধা দিতে আগেই চট্টগ্রাম বন্দরে ফ্ল্যাগ ভ্যাসেল নীতিমালা কার্যকর রেখেছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য ক্যাপ্টেন আহমেদ আমিন আবদুল্লাহ বলেন, বর্তমানে যাদের বাংলাদেশের ফ্ল্যাগশিপ জাহাজ ক্যারিয়ার আছে, তারা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বার্থিং সুবিধা পায়। আরও জাহাজ যুক্ত হলে, সেগুলো আরও সুযোগ-সুবিধা পাবে।
আরও পড়ুন: বিদেশি অপারেটর নয়, ৪২ কোটি টাকায় এনসিটি চালাবে চট্টগ্রাম বন্দর!
তবে বাংলাদেশি মালিকানাধীন হলেও বর্তমানে ৬টি জাহাজ বাংলাদেশি পতাকার পরিবর্তে বিদেশি পতাকা নিয়ে পণ্য পরিবহন করছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে আঙ্কটাডের রিপোর্টে।
বিশ্ব অর্থনীতিতে সমানতালে এগিয়ে চলার পাশাপাশি আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে এ অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে বাংলাদেশ। তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ আঙ্কটাডের রিপোর্টে জাহাজ মালিক দেশগুলোর মধ্যে এখন ৩৫তম বাংলাদেশ। তবে সামান্য কিছু জটিলতা রয়েছে। সেগুলো কাটিয়ে উঠতে পারলে তালিকায় বাংলাদেশর স্থান ২০তম হয়ে যাবে। এমনটিই বলছেন জাহাজ ব্যবহারকারীরা।
]]>