সমালোচনার মুখে ফেরত নেয়া বাছুর বুঝিয়ে দিলো সেই এনজিও

১ সপ্তাহে আগে
সংবাদ প্রকাশের পর অবশেষে গাভীর বাছুর বুঝে পেয়েছেন হতদরিদ্র দশজন নারী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া সেই এনজিওটির পক্ষ থেকে তাদের বাড়িতে বাছুর পৌঁছে দেয়া হয়েছে।

এদিকে, বিভিন্ন গণমাধ্যমে বাছুর নিয়ে ফটোসেশন শীর্ষক প্রকাশিত সংবাদকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন মানবসেবা উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক এম এস আলম বাবলু।


রোববার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে পাবনার চাটমোহর উপজেলার মুলগ্রাম ইউনিয়নের রেলবাজারে সংস্থার নিজস্ব কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন তিনি।


লিখিত বক্তব্যে মানবসেবা উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক এম এস আলম বাবলু বলেন, ১৯৯৮ সালে নিবন্ধিত তার সংস্থাটি পাবনা জেলায় থ্যালাসেমিয়া রোগীদের নিয়ে কাজ করে আসছে। পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হিসেবেও বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে। বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনে সহায়তায় ইতিমধ্যে বিভিন্ন প্রকল্পের ১৪টি কাজ বাস্তবায়ন করেছে।

আরও পড়ুন: ফটোসেশনের পর বাছুর ফেরত নিলো মানবসেবা উন্নয়ন সংস্থা!

তিনি বলেন, বিএনএফের বিভিন্ন কর্মূসচি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সম্প্রতি বিশেষ অনুদানে চাটমোহর উপজেলার একটি গ্রামের দশজন নারীকে স্বাবলম্বী করতে ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ বরাদ্দে প্রথম কিস্তিতে ৩ লাখ টাকা পাওয়া যায়। এ অবস্থায় মানবসেবা উন্নয়ন সংস্থার মাধ্যমে দশজন নারীকে ১০টি বাছুর কিনে দেয়ার পদক্ষেপ নেয়া হয়। সে মোতাবেক প্রশিক্ষণ শেষে গত ৩০ ডিসেম্বর বেজপাড়া গ্রামের দশজন নারীকে ১০টি বাছুর দেয়া হয়। তবে ওইদিন অতিরিক্ত কয়েকজন নারী এসেছিল। তাদের বলা হয়েছিল, এখন নয়, তাদের পরে দেয়া হবে।


এম এস আলম বাবলুর অভিযোগ, বাছুর দেয়ার পর থেকে একটি সুবিধাবাদী গোষ্ঠী আমার এনজিও’র বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করে। প্রকাশিত সংবাদ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে তিনি বলেন, বাছুর বিতরণে কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতি করা হয়নি। সাংবাদিকদের ভুল বুঝিয়ে মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে। গত ৩০ ডিসেম্বর-ই প্রশিক্ষণ শেষে ওইদিন সন্ধ্যায় তাদের বাড়িতে গাভীর বাছুর পৌঁছে দেয়া হয়েছে। বাছুরগুলো শরৎনগর হাট থেকে কিনে বিতরণ করা হয়েছে উল্লেখ করে কেনার রশিদ ও সুফলভোগী দশজন নারীর তালিকাও প্রদর্শন করেন নির্বাহী পরিচালক বাবলু। এ সময় সেখানে উপস্থিত সুফলভোগী কয়কজন নারী বাছুর পাওয়ার কথা স্বীকার করেন।


সংবাদ সম্মেলনে চাটমোহর প্রেসক্লাবের সভাপতি হেলালুর রহমান জুয়েল, সহ-সভাপতি সঞ্জিত সাহা কিংশুক, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সুফলভোগী দশজন নারীর তালিকা ধরে সরেজমিন অনুসন্ধানে গিয়ে জানা গেছে, বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদটি ভাইরাল হওয়ার পর গত শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাতে তালিকাভুক্ত নারীদের বাড়িতে বাছুর পৌঁছে দেয়া হয়েছে। এর আগে দেয়া হয়নি।

আরও পড়ুন: বাছুরের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন মোদি, ভিডিও ভাইরাল!


বেজপাড়া গ্রামের সুফলভোগী দশজনের মধ্যে সুলতানা পারভীন, রাশিদা খাতুন, জীবন নাহার বলেন, আমাদের প্রথমে তালিকা করে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। তারপর গত ৩০ ডিসেম্বর বাছুর দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তারা। তবে কোহিনুর খাতুন নামের একজন জানান, প্রশিক্ষণ দিছে ৩০ ডিসেম্বর। আর গরু পাইছি গত পরশুদিন (১৭ জানুয়ারি) রাতে। প্রতিবেশী ভ্যানচালক মোফাজ্জল হোসেন কাজলও নিশ্চিত করেন গত ১৭ জানুয়ারি রাতে একটি গাড়িতে করে বাছুরগুলো সবার বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছে।


গত ৩০ ডিসেম্বর প্রশিক্ষণ শেষে দশজন নারীর হাতে বাছুরের দড়ি ধরিয়ে ফটোসেশন করে খিচুড়ি ডিম খাইয়ের বিদায় করা হয়। পরে তাদের বাছুর দেয়া হবে বলে তাদের আর বাছুর দেওয়া হয়নি। এমন অভিযোগ ওঠে পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের রেলবাজার এলাকার মানবসেবা উন্নয়ন সংস্থা নামের এনজিও'র নির্বাহী পরিচালক এম এস আলম বাবলুর বিরুদ্ধে। এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ গত ১৬ ও ১৭ জানুয়ারি দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ভাইরাল হয়।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন