মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদের শপথ গ্রহণে সরাসরি ঘোষণা করেন, যুক্তরাষ্ট্র হবে ‘মানবজাতির ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ সভ্যতা’। যা সামরিক শক্তি, শিল্পোন্নয়ন ও ভূখণ্ড বিস্তারের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হবে। প্রেসিডেন্ট ম্যাকিনলি ও রুজভেল্টের প্রশংসা করে ট্রাম্প তার সাম্রাজ্যপন্থি অবস্থান স্পষ্ট করেন।
এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ‘ন্যাশনাল কনজারভেটিভ’ বা জাতীয়তাবাদী রক্ষণশীলরা। ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, স্ট্র্যাটেজিস্ট স্টিভ ব্যানন আর সাংবাদিক টাকার কার্লসনের মতো নেতারা ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ স্লোগানে গলা মেলাচ্ছেন। তাদের ভাষ্য, তারা কথা বলেন শ্রমজীবী মানুষের হয়ে।
নতুন করে যুক্ত হয়েছে সিলিকন ভ্যালির ধনকুবেরদের একাংশ। ইলন মাস্ক বা মার্ক আন্দ্রেসেনের মতো ধনকুবের প্রযুক্তি ও বাজারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সরকারি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ইরান নতুন পারমাণবিক স্থাপনা গড়লে ফের হামলা, হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র পিটার থিয়েল, টেকনোলজি ব্যবসায়ী, পেপ্যালের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছায়াসঙ্গী এই থিয়েল মনে করেন, ‘গণতন্ত্র আর স্বাধীনতা একসঙ্গে চলে না।’ তিনি চান প্রযুক্তিনির্ভর নতুন বিশ্বব্যবস্থা, যেখানে সামরিক প্রযুক্তি আর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হবে নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার। বিদেশ নীতিতে চীন তার চোখে প্রধান শত্রু, কিন্তু রাশিয়ার প্রতি তার অবস্থান নমনীয়।
সবশেষে আছে ‘ডার্ক এনলাইটেনমেন্ট’ ঘরানার চিন্তাবিদেরা, যারা পশ্চিমা উদারনৈতিক মূল্যবোধ প্রত্যাখ্যান করেন। নিক ল্যান্ড, কার্টিস ইয়ারভিনের মতো চিন্তকরা মনে করেন, ভবিষ্যৎ হবে কর্পোরেট রাজতন্ত্রের, যেখানে প্রযুক্তি আর পুঁজিই শেষ কথা বলবে।
আরও পড়ুন: ক্রিপ্টোকারেন্সির নিয়ন্ত্রণে আইন করলো যুক্তরাষ্ট্র
তাদের লক্ষ্য, পুরানো ব্যবস্থার জায়গায় নতুন শক্তির জন্ম দেয়া, যা নিয়ন্ত্রণ করবে অ্যালগরিদম, সাইবার শক্তি আর প্রযুক্তির মাধ্যমে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই চারটি ভাবধারার ভিত্তিতে গড়ে ওঠা আমেরিকা ফার্স্ট নীতি বিশ্ব অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। তবে, তা ইতিবাচক কম এবং নেতিবাচক বেশি হওয়ার শঙ্কাই বেশি। এমনকি, সভ্যতার দৃষ্টিকোণ থেকেও এক গভীর হুমকি হয়ে উঠতে পারে এই নীতি।