সবজি-চিংড়ি-তেলাপিয়ায় মাত্রাতিরিক্ত ক্ষতিকর ধাতু, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

৩ ঘন্টা আগে
খুলনা ও সাতক্ষীরায় সবজি, চিংড়ি ও তেলাপিয়া মাছে মিলেছে অতিরিক্ত মাত্রায় ক্যাডমিয়াম, ক্রোমিয়াম, আর্সেনিক, আয়রন, সিসাসহ কয়েকটি ভারী ধাতুর উপস্থিতি। যা মানবদেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর।

সম্প্রতি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের গবেষণায় উঠে এসেছে এমন চিত্র।


বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অধিক মুনাফা অর্জনের জন্য ব্যবসায়ীরা অসৎ পন্থা অবলম্বন করছেন।


জানা যায়, ওপেনিং পিটিসি: সুষম ও নিরাপদ খাবার মানুষকে সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকতে যেমন সাহায্য করে, তেমনি অনিরাপদ খাবার জটিল রোগসহ মৃত্যুর কারণও হতে পারে। খাদ্য নিয়ে রীতিমতো সচেতনতা বাড়লেও প্রতিদিন বাজার থেকে যেসব খাদ্য কিনছি তা কি নিরাপদ? তা নিয়ে সবার প্রশ্ন রয়েছে।


সম্প্রতি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের তিন শিক্ষার্থী খুলনা ও সাতক্ষীরার সাতটি এলাকার বিভিন্ন ঘেরের মাছ, সবজি, পানি, মাটি ও ২০টি কোম্পানির মাছের খাবারের ওপর গবেষণা করেন। এতে উঠে আসে- সবজি, চিংড়ি ও তেলাপিয়া মাছে অতিমাত্রায় ক্ষতিকর ক্যাডমিয়াম, ক্রোমিয়াম, আর্সেনিক, আয়রন, সিসাসহ কয়েকটি ভারী ধাতুর উপস্থিতি।


আরও পড়ুন: খুলনায় চিংড়ি খাতের বিপর্যয় কী পরিকল্পিত?


এমনকি, ট্যানারি বর্জ্য দিয়ে তৈরি নিম্নমানের মাছের ফিড ব্যবহারের কারণে পানি ও মাটির মাধ্যমে মাছ ও সবজিতে এসব ভারি ধাতু প্রবেশ করছে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।


গবেষক সজীব রায় বলেন, ‘ভারী ধাতুর দূষণ কেবল পরিবেশের ক্ষতি করছে না, বরং খাদ্য গ্রহণে মানব স্বাস্থ্যেও বিরূপ প্রভাব ফেলছে।’


গবেষক রওনক জাহান বলেন, ‘সবজি চাষে অতিরিক্ষ রাসায়নিক সারের ব্যবহারে হেভি মেটালের পরিমাণ দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে, যা আমাদের জন্য ক্ষতিকর।’


গবেষক নাসের মুস্তফা বলেন, ‘মাত্রাতিরিক্ত দূষিত এই মাছ ও শাকসবজি খাওয়ার কারণে মানবদেহের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের ক্ষতি হওয়ার পাশাপাশি ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিতে পারে।’


আরও পড়ুন: শাক-সবজিতে ক্ষতিকর ভারী ধাতু, ফলে কীটনাশক


খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিন বিভাগের অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ হারুন চৌধুরী বলেন, মাছে ও সবজিতে হেভি মেটাল থাকছে, এ দুটিই মানুষ গ্রহণ করছে। ফলে মানুষের শরীরেও এর মাত্রা ধীরে ধীরে বাড়ছে। অধিক মুনাফা অর্জনের জন্য ব্যবসায়ীরা অসৎ পন্থা অবলম্বন করছেন বলে জানান তিনি।


হৃদরোগ, বাতজ্বর ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক হৃদরোগ ডা. আমিরুল খসরু বলেন, ‘অপদ্রব্যের মিশ্রণ এটা কিন্তু জেনে শুনে বিষপানের মতো। এর যে ক্ষতি, এটা দীর্ঘ মেয়াদি; এগুলো শরীরে ঢোকে কিন্তু বের হতে চায় না। যার ফলে একবার যদি ঢোকে তার বিষক্রিয়া বহুদিন ধরে থাকে। জেনেশুনে এসব খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ বিষপানের সমান। এতে ভয়াবহ সব রোগে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।’


আরও পড়ুন: 


মনিটরিং বৃদ্ধির পাশাপাশি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়ে খুলনা মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা লিপটন সরদার বলেন, ‘এ ধরনের দূষিত মাছ-সবজি আমাদের জনস্বাস্থ্যের জন্য যেন হুমকি হয়ে দাঁড়াতে না পারে সেটা দেখতে হবে। এর জন্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা আমাদের মৎস্য অধিদফতরকে নিতে হবে। এ অংশে যতোটুকু করণীয় আমরা চেষ্টা করবো করতে। মৎস্য অথরিটির মাধ্যমে জড়িতদের অবহিত করা এবং এর প্রতিরোধে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।’


গত বছর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় ব্রয়লার মুরগির মাংস ও হাড়ে মিলেছিলো অতিরিক্ত মাত্রায় নিকেল, ক্রোমিয়াম, সীসা ও আর্সেনিক।
 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন