গুনাহ থেকে নিরাপদ থাকার মূল্য
আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাযি.) বলতেন,
لَا أَعْدِلُ بِالسَّلَامَةِ شَيْئًا গুনাহ থেকে নিরাপদ থাকার মত সমকক্ষ আমল আমি কোনোটিকে মনে করি না। (আদাবুদদুনয়া ওয়াদদীন : ১/৯৮)
এখানে তিনি বুঝিয়েছেন, নেক আমল যতই করা হোক, কিন্তু গুনাহ থেকে যদি বাঁচা না যায়, তবে ইবাদতের পূর্ণতা পাওয়া যায় না। সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত হলো হারাম থেকে বিরত থাকা।
আরও পড়ুন: আবারও ক্ষমা চাইলেন আলোচিত বক্তা আমির হামজা
হাসান বসরী (রহ.) বলতেন,
مَا عَبَدَ الْعَابِدُونَ بِشَيْءٍ أَفْضَلَ مِنْ تَرْكِ مَا نَهَاهُمُ اللَّهُ عَنْه আল্লাহর নিষিদ্ধ বিষয়গুলো থেকে বেঁচে থাকার চেয়ে উত্তম কোনো ইবাদত আর কোনো ইবাদতকারী করতে পারেনি। (জামিউল উলুম ওয়াল হিকাম : ২৯৬)
অর্থাৎ আল্লাহ যা হারাম করেছেন, তা থেকে বিরত থাকাই হলো প্রকৃত তাকওয়া এবং সর্বোচ্চ ইবাদত।
ঘুম ও জাগরণের ভুল ধারণা
আমাদের মাশায়েখ বলতেন, ইবাদত যতটা পারো করো, তবে গুনাহ করো না। সালফে সালেহীনের যুগে কিছু লোক বাজারে সুন্দর কথা প্রচার করত। এক ব্যক্তি চিৎকার করে বলতে লাগল,
أَهْلَكَكُمْ النَّوْمُ ঘুম তোমাদের ধ্বংস করে দিয়েছে। অর্থাৎ তার ধারণা ছিল, ঘুমের কারণে মানুষ ইবাদত থেকে বঞ্চিত হয়েছে। কিন্তু একজন আল্লাহওয়ালা বললেন بَلْ أَهْلَكَتْكُمْ الْيَقِظَةُ বরং জেগে থাকাটাই মানুষকে ধ্বংস করেছে।
এর মানে হলো, অধিকাংশ মানুষ রাত জেগে ইবাদত করে না, বরং গুনাহে লিপ্ত হয়। তাই তাদের ধ্বংসের কারণ হলো ইবাদতের জন্য নয়, বরং গুনাহের জন্য জেগে থাকা।
একজন বুযুর্গ বলতেন, خَفْ اللَّهَ بِالنَّهَارِ وَنَمْ بِاللَّيْلِ দিনের বেলায় আল্লাহকে ভয় করো আর রাতের বেলায় ঘুমাও। (আদাবুদদুনয়া ওয়াদদীন: ১/৯৮)
অর্থাৎ দিনের সময় তাকওয়া অবলম্বন করে গুনাহ থেকে বাঁচতে হবে, আর রাতে অযথা জেগে থেকে গুনাহ না করে বিশ্রাম নিতে হবে।
সবচেয়ে দামি আমল হলো গুনাহ থেকে বিরত থাকা। নফল নামাজ, রোজা, দান-সদকা, এসবই মহান আমল, তবে এর চেয়েও বড় আমল হলো হারাম থেকে বেঁচে থাকা। আজকের যুবসমাজ উল্টোভাবে রাত জেগে গুনাহে লিপ্ত হয় এবং দিনের বেলা ঘুমিয়ে থাকে। অথচ প্রকৃত দীনদারী হলো, দিনে গুনাহ থেকে বাঁচা আর রাতে শান্তিতে ঘুমানো। তাই আমাদের উচিত, ইবাদতের পাশাপাশি সর্বপ্রথম গুনাহ থেকে নিজেদের বাঁচানো, কেননা এটিই আল্লাহর কাছে সবচেয়ে দামী আমল।
]]>