‘সব উপকার ভুলে গেছে’— আফগানিস্তানের সমালোচনায় শহীদ আফ্রিদি

১ সপ্তাহে আগে
পাকিস্তান-আফগানিস্তান সংঘাত নিয়ে মুখ খুললেন সাবেক ক্রিকেটার শহীদ আফ্রিদি। খারাপ সময়ে আফগানদের উপকার করার প্রসঙ্গ তুলে দেশটির সংঘাতে জড়ানো নিয়ে সমালোচনা করেছেন তিনি।

সোভিয়েত আগ্রাসনের পর, গৃহযুদ্ধ, তারপর আবার মার্কিন আগ্রাসন। তালেবান সরকার ক্ষমতায় আসীন হওয়ার আগে গত কয়েক দশক ধরে যুদ্ধবিধ্বস্ত পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গিয়েছিল আফগানিস্তান। এ সময়ে দেশটির লাখ লাখ নাগরিক প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ইরানসহ বেশ কিছু দেশে আশ্রয় নিয়েছিল। পাকিস্তানে সংখ্যাটা ছিল অবশ্য উল্লেখযোগ্য।

 

এ সময় দেশটি আশ্রয় নেয়া শরণার্থীদের বেশ সহযোগিতাও করেছিল। পাকিস্তানি ক্রিকেটার শহীদ আফ্রিদিও নিজের সাধ্যমতো তাদের সহায়তা করেছেন।

সে সব প্রসঙ্গ তুলে এনে শনিবার (১৮ অক্টোবর) সামাজিক মাধ্যম ‘এক্স’এ এক পোস্টে আফ্রিদি লেখেন, ‘পাকিস্তান সবসময় তার আফগান ভাইদের পাশে দাঁড়িয়েছে, আফগানদের সমস্যাকে নিজের সমস্যা হিসেবে বিবেচনা করেছে। নিজের সীমানা তার ভাইদের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে। চল্লিশ লাখ শরণার্থীকে নিজের ভূমিতে আশ্রয় দিয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে আমার সাধ্যমতো ৩৫০টি আফগান পরিবারের দেখাশোনা করি।’

 

আরও পড়ুন: পাকিস্তানের বিমান হামলাকে ‘বর্বর’ আখ্যা দিলেন রশিদ খান

 

উপকার ভুলে সংঘাতে জড়ানোয় আফগানিস্তানের সমালোচনা করেছেন আফ্রিদি। তৃতীয় কোনো পক্ষের ব্যবহার না হওয়ারও বার্তা দিয়েছেন তিনি।

 

সাবেক এ পাকিস্তানি অলরাউন্ডার লেখেন, ‘অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, গত কয়েকদিনে আফগানিস্তান এই সকল উপকার ভুলে গিয়ে সীমান্তে প্রকাশ্য আগ্রাসন দেখিয়েছে, যার জবাব আমাদের বাহিনী পূর্ণ শক্তিতে দিয়েছে। আফগানিস্তানের উচিত চিন্তা করা যে পাকিস্তান তার একটি ভ্রাতৃপ্রতিম ইসলামী দেশ, তাই এমন কোনো দেশের হাতে ব্যবহৃত হওয়া উচিত নয়, যারা ইতিমধ্যে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসীদের সহযোগিতা প্রদান করছে।’

 

ঘটনার শুরু গত ৯ অক্টোবর। ওই দিন রাতে হঠাৎ দুটি বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে আফগান রাজধানী কাবুল। এরপর কয়েকশ’ কিলোমিটার দূরে আফগানিস্তানের পাকতিয়া প্রদেশের সীমান্তবর্তী একটি বাজারের আরও একটি বিস্ফোরণ ঘটে।

 

ওই বিস্ফোরণের জন্য তালেবান সরকার পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করে বলে, পাকিস্তান আফগানিস্তানের ‘সার্বভৌম ভূখণ্ড’ লঙ্ঘন করেছে। ইসলামাবাদ বিস্ফোরণের কথা সরাসরি অস্বীকার করেনি। জবাবে ১১ অক্টোবর রাতে পাল্টা হামলা চালায় আফগান সেনারা। জবাবে হামলা চালায় পাক বাহিনীও।

 

পরদিন আফগানিস্তানের তালেবান প্রশাসনের মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদ দাবি করেন, তাদের বাহিনীর ‘প্রতিশোধমূলক’ হামলায় অন্তত ৫৮ জন পাক সেনা নিহত হয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তান দাবি করে, পাকিস্তানে বিনা উসকানিতে হামলা চালায় আফগান বাহিনী। পাল্টা অভিযানে ২০০ জনেরও বেশি আফগান তালেবানকে হত্যার দাবি করে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। সেই সঙ্গে আফগান হামলায় ২৩ সেনা নিহত হয়েছে বলে জানায় ইসলামাবাদ।

 

এরপর গত ১৫ অক্টোবর আফগানিস্তানের অনুরোধে পাকিস্তান ও তালেবান সরকার ৪৮ ঘণ্টার জন্য অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। ওইদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।

 

আরও পড়ুন: হামলায় ৩ ক্রিকেটার নিহত, পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ বর্জন করলো আফগানিস্তান


এদিকে রাওয়ালপিন্ডিতে আগামী ১৭ নভেম্বর থেকে পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কার অংশগ্রহণে একটি ত্রিদেশীয় টি-২০ সিরিজ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পাকিস্তানের হামলায় তিন ক্রিকেটার নিহত হওয়ার প্রতিবাদে আফগানিস্তান ওই সিরিজ বর্জন করেছে।
 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন