সংস্কারের প্রস্তাবনাগুলো যেভাবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা

২ সপ্তাহ আগে
গেল বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দাবি ওঠে ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক ব্যবস্থা বিলোপে আমূল সংস্কারের। যার পরিপ্রেক্ষিতে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার।

গত বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সংবিধান সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশন ও দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনা জমা পড়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে। এসব সংস্কার প্রস্তাবনা নিয়ে ফেব্রুয়ারি থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নেবে অন্তর্বর্তী সরকার। তারপরই তৈরি হবে চূড়ান্ত সংস্কার প্রস্তাবনা।

 

সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনায়, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার বয়স কমিয়ে ২৫ থেকে ২১, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট, নারীদের জন্য আলাদা ১০০ আসন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের নাম বদলে জনগণতন্ত্রী, মূলনীতি পরিবর্তনসহ দেয়া হয়েছে নানা প্রস্তাবনা।

 

অন্যদিকে নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করতে প্রস্তাবনা দিয়েছে বদিউল আলম মজুমদারের কমিশন। এসব প্রস্তাবনা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও আইনজ্ঞদের মধ্যে।

 

দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়া, ইলেক্টোরাল ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রস্তাবনাকে স্বাগত জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ। তবে সংবিধানের মূলনীতি পরিবর্তন নিয়ে আপত্তি রয়েছে তার।

 

তিনি বলেন, ‘২১ বছরে একটা ছাত্রকে নির্বাচন করার সুযোগ করে দিলে, সে তো তার পড়াশোনাই শেষ করতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রী হলে দলীয় প্রধান হতে পারবেন না। তবে দুবারের বেশি নির্বাচন করতে পারবে না-এটা যদি হয় তাহলে প্রধানমন্ত্রীর জবাবদিহিতার ক্ষেত্রে আমাদের রাজনৈতিক ব্যবস্থা অনেক দূর এগিয়ে যাবে।’

 

আরও পড়ুন: প্রয়োজনীয় সংস্কারের ওপর গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান রাজনৈতিক দলগুলোর

 

অনেকটা একইরকম অভিমত সংবিধান বিশেষজ্ঞ অ্যাডভোকেট আহসানুল করিমের। জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে বিদ্যমান সংবিধানের ভিত্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বৈরতন্ত্র ঠেকাতে ক্ষমতা কাঠামোর আরও সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা জরুরি।

 

নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করতে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন দুই বিশ্লেষকই। তবে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) বাতিল করা নিয়ে আছে ভিন্নমত।

 

আহসানুল করিম বলেন, ইভিএমের মাধ্যমে যতরকমের কারচুপি সব হয়েছে। সুতরাং যারা সংস্কারের প্রস্তাবনায় এটি বাতিলে মত দিয়েছেন আমি তাদের সঙ্গে একমত।

 

তবে অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ বলেন, সারা দুনিয়া যেখানে ইভিএমে ঝুঁকছে, সেখানে সংস্কার কমিশন এটাকে বাদ দেয়ার সুপারিশ করেছে।  

 

সংবিধানের মূলনীতিসহ স্পর্শকাতর বিষয় পরিবর্তনে শুধু রাজনৈতিক ঐকমত্য নয়, জাতীয় ঐকমত্যের ওপর জোর বিশেষজ্ঞদের।

 

এদিকে সব পক্ষের মতামত নিয়ে ঐকমত্যের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত সংস্কার প্রস্তাবনা তৈরি হবে বলে আশাবাদ জাতীয় নাগরিক কমিটির।

 

সংগঠনটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো ঠিক কতটুকু সংস্কারকে যৌক্তিক মনে করছেন, যদি সেটা উত্থাপন করা যায় তাহলে আলোচনার টেবিলে আলাপে চূড়ান্ত হওয়া যাবে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন