শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল: গতি নেই অবকাঠামো নির্মাণে, স্থবিরতা বিনিয়োগে

২১ ঘন্টা আগে
উদ্বোধনের তিন বছর পার হলেও সিলেট অঞ্চলের একমাত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল মৌলভীবাজারের শেরপুর শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল এখনও পরিপূর্ণতা পায়নি। গড়ে ওঠেনি সুষ্ঠু ড্রেনেজ ব্যবস্থা, সংস্কার হয়নি অভ্যন্তরীণ সড়কের কাজ, আর ভূমি জটিলতায় মিলেনি গ্যাস সংযোগ। ফলে শুরুতে কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করলেও বর্তমানে মাত্র দুটি প্রতিষ্ঠান উৎপাদন কার্যক্রম চালাচ্ছে।

বেজার উপপরিচালক আয়মান নাকিব বাঁধন জানান, অবকাঠামোগত নির্মাণ দ্রুত শেষ করে উৎপাদনে যেতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাগাদা দেয়া হচ্ছে। নির্দেশ অমান্য করলে প্লট বাতিল করে নতুন বিনিয়োগকারীদের দেয়া হবে বলেও তিনি সতর্ক করেন।


বেজা সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার শেরপুর এলাকায় ৩৫৩ একর জায়গাজুড়ে শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০২২ সালের ২০ নভেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। শুরুতেই ফ্লেমিংগো গ্রুপ, আয়েশা-আসোয়াদ কম্পোজিট গ্রুপ, গ্রেটওয়াল সিরামিকস গ্রুপ, আব্দুল মোমিন ও ডাবল গ্লেজিং— এ পাঁচটি শিল্প প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়ে কাজ শুরু করে।


তবে তিন বছর পর এখন পর্যন্ত মাত্র দুটি প্রতিষ্ঠান উৎপাদনে রয়েছে। এর মধ্যে ডিবিএল গ্রুপের ‘ফ্লেমিংগো’ সূতা উৎপাদন করছে এবং ডাবল গ্লেজিং গ্রুপ গ্লাসডোর ও ইনডোর তৈরির কাজ করছে। অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো সীমিত অবকাঠামো তৈরি করে কার্যত স্থবির হয়ে আছে।


এদিকে এখনও ড্রেনেজ ব্যবস্থা সম্পন্ন না হওয়ায় বর্ষাকালে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। রাস্তার সংস্কারও ঝুলে আছে। ভূমি জটিলতার কারণে এতদিন গ্যাস সংযোগ আটকে থাকলেও সম্প্রতি এ বিষয়ে অনুমোদনের তথ্য জানিয়েছে বেজা। ড্রেনেজকাজ শেষ হলে সড়ক উন্নয়ন শুরু হবে বলেও প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে।


আরও পড়ুন: মিরসরাইয়ে ১১ কোটি ডলারের বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান হবে ৭৬০৭ জনের


স্থানীয় ব্রাহ্মণগাঁও গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর খান, জুয়েল, আফিয়ার ও সেজলসহ অনেকে জানান, শিল্পাঞ্চল ঘিরে কর্মসংস্থানের যে স্বপ্ন তারা দেখেছিলেন, তা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। তারা দ্রুত অবকাঠামোগত কাজ শেষ করে কারখানা চালুর দাবি জানান।


ডাবল গ্লেজিংয়ের ফ্যাক্টরি ম্যানেজার মো. মেহেদী হাসান বেজার সহযোগিতায় সন্তুষ্টি জানিয়ে দ্রুত ড্রেনেজ ও রাস্তা সংস্কারের কার্যক্রম শুরুর আহ্বান জানান।


বেজা জানায়, শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল পুরোপুরি চালু হলে প্রায় ৪৪ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। তবে বর্তমান অবকাঠামোগত ধীরগতি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাকে অনিশ্চিত করছে।


উপপরিচালক আয়মান নাকিব বাঁধন বলেন, ‘যেসব প্রতিষ্ঠান কাজ করছে, তাদের দ্রুত কাজ শেষ করে উৎপাদনে যেতে বলা হয়েছে। যারা নির্দেশ মানবে না, তাদের প্লট বাতিল করে নতুন বিনিয়োগকারীকে দেওয়া হবে।’


সরকারিভাবে আগামীর শিল্পাঞ্চল হিসেবে বিবেচিত এ অঞ্চলের পূর্ণতা পেতে তাই আরও জোরালো তৎপরতা প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন