শেষ ওভারে রুদ্ধশ্বাস লড়াই, আবারও চ্যাম্পিয়ন বরিশাল

৪ সপ্তাহ আগে
জয়ের জন্য শেষ ৩ ওভারে ২৫ রান দরকার ছিল বরিশালের, হাতে ৬ উইকেট। দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার কাইল মায়ার্স এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ উইকেটে থাকায় জয়টা একরকম হাতের মুঠোয়ই ছিল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের। তবে ১৮তম ওভারে বোলিংয়ে এসে সমীকরণ একেবারে পাল্টে দেন শরিফুল ইসলাম। ওই ওভারে মায়ার্স এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে আউট করার পাশাপাশি পাঁচ রান দিয়ে চিটাগংকে ম্যাচে ফেরান শরিফুল।

১৯তম ওভারের প্রথম ৩ বলে কেবল ৩ রান নিতে পারে বরিশাল। উইকেটে তখন মোহাম্মদ নবি ও রিশাদ হোসেন। দুজনই উইকেটে একদম নতুন। সবদিক বিবেচনায় ম্যাচটা তখন অনেকটাই হেলে পড়েছিল চিটাগংয়ের দিকে।   

 

তবে পরের গল্পটা পুরোটাই রিশাদের বীরত্বের। ১৯তম ওভারের চতুর্থ বলে দুর্দান্ত এক ছক্কা মেরে চাপ সরিয়ে বরিশালকে আবার চালকের আসনে বসান এই বোলিং অলরাউন্ডার। মিস ফিল্ডিংয়ের সুবাদে পরের বলে নেন ৩ রান। বরিশালের তখন দরকার ৭ বলে ৮ রান। তবে এই সহজ সমীকরণকে আবারও কঠিন করে তোলেন মোহাম্মদ নবি, ১৯ তম ওভারের শেষ বলে আউট হয়ে। 

 

শেষ ওভারে স্বীকৃত ব্যাটার বলতে উইকেটে ছিলেন কেবল রিশাদ। অন্যপ্রান্তে থাকা তানভীর ইসলাম কোনোমতে ব্যাট চালাতে পারেন। দলকে জেতাতে হলে রিশাদকেই কিছু করতে হতো। আর চাপের মুহূর্তে সেটা করেও দেখালেন তিনি। ৮ রানের সমীকরণে প্রথম বলেই দুর্দান্ত এক ছক্কা মেরে জয় অনেকটাই নিশ্চিত করে ফেলেন এই অলরাউন্ডার। ১৯ ওভার ৩ বলে জয় নিশ্চিত করে বরিশাল।

 

মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে বিপিএলের একাদশ আসরের ফাইনাল ম্যাচে চিটাগং কিংসকে ৩ উইকেটে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা জিতেছে তামিম ইকবালের ফরচুন বরিশাল। 

 

বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ঝড় তোলেন বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তবে ওপর প্রান্তে তাওহীদ হৃদয় ছিলেন একটু সাবধানী। পাওয়ারপ্লেতে দুজনে মিলে ৫৭ রান তুলে দারুণ শুরু এনে দেন বরিশালকে।

 

দারুণ শুরুর পর নবম ওভারে প্রথম উইকেট হারায় বরিশাল। একই ওভারে তামিম ইকবাল এবং ডেভিড মালানকে ফিরিয়ে শরিফুল ইসলাম একাই ম্যাচ ঘুরিয়ে দেন। দ্রুত সময়ের ব্যবধানে ফেরেন তাওহীদ হৃদয়ও। ২৮ বলে ৩২ রান করেছেন তিনি। আর ১ ছক্কা ও ৯ চারে ২৯ বলে ৫৪ রান করেছেন তামিম।

 

দ্রুত ৩ উইকেট হারালেও বরিশালের ছন্দপতন হয়নি। মিডল অর্ডারে হাল ধরেন কাইল মায়ার্স। ৩ ছক্কা ও ৩ চারে ২৮ বলে ৪৬ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান এই অলরাউন্ডার দলকে জয়ের পথেই রাখেন। তবে ১৮তম ওভারে ২ উইকেট নিয়ে আবারও বরিশালকে বিপদে ফেলেন শরিফুল। 

 

চাপের মুহূর্তে হাল ধরতে পারেননি অভিজ্ঞ নবিও। রিশাদ হোসেনের ৬ বলে ১৮ রানের অসাধারণ ইনিংসে জয় নিশ্চিত করে বরিশাল। 

 

আরও পড়ুন: বিপিএলের ফাইনালে তামিমকে বিদায় জানাবে বিসিবি

 

চিটাগংয়ের হয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন শরিফুল। দুই উইকেট নিয়েছেন নাইম ইসলাম এবং আরেকটি উইকেট গেছে বিনুরা ফার্নান্দোর ঝুলিতে। 

 

এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে চিটাগংকে দারুণ শুরু এনে দেন দুই ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন ও খাজা নাফে। ১২১ রানের জুটি হয় তাদের মধ্যে। ফরচুন বরিশালের কাইল মেয়ার্সের করা প্রথম ওভারে ৫ রান তুলেন খাজা নাফে, দুই ওভার শেষে সংগ্রহ দাঁড়ায় ১২। এরপর স্ট্রিয়ারিং নিজ হাতে নেন পারভেজ হোসেন ইমন। তার দুই চারে তৃতীয় ওভারেই আসে ১১ রান।

 

পরের ওভারে আরও একটু সরস হন কিংস ওপেনার, তানভীর ইসলামকে টার্গেট বানিয়ে ওই ওভারে চিটাগং তুলে ১৮। পারভেজ ওই ওভারে ২টি ছক্কা ও একটি চার মারেন। ৫ ওভার শেষে ৫১ রান করা চিটাগং পরের তিন ওভারে তুলে ২১। নবম ওভার থেকে আবার হাতখুলে খেলতে থাকেন দলটির দুই ওপেনার। ইবাদত হোসেনের ওভারে নাফে ৪৪ বলে ৬৬ রান করে আউট হলে ওপেনিং জুটি ভাঙে। ৭টি চারের পাশাপাশি ৩টি ছক্কা মারেন পাকিস্তানি ক্রিকেটার।

 

উইকেট হারালেও মোমেন্টাম নষ্ট করেনি চিটাগং। ওয়ানডাউনে নামা গ্রাহাম ক্লার্ক বিধ্বংসী ব্যাটিং শুরু করেন। এরমধ্যেই ১৬তম ওভারে তানভীর ইসলামের ওপর দিয়ে ২২ রান আদায় করে নেয় চিটাগং। তানভীরের প্রথম ওভারের মতো এই ওভারেও ইমন ২টি ছক্কা মারেন। সেই ইমন ১৭তম ওভারে ৪ বল মোকাবিলা করে মাত্র ২ রান করতে সক্ষম হন, ওই ওভারে রান আসে মাত্র ৪।

 

ইমন শেষ দিকে ধীরগতিতে খেললেও ক্লার্কের বিধ্বংসী ইনিংসে তাদের মধ্যে ৭০ রানের জুটি হয়। ক্লার্ক ২৩ বলে ৪৪ রান করে রানআউট হন। তিনি আউট হন ১৯.২ ওভারে, দলীয় ১৯০ রানে। শেষ ৪ বলে স্কোর বোর্ডে মাত্র ৩ রান যোগ করতে সক্ষম হয় চিটাগং। মোহাম্মদ আলী ৪ ওভারে খরচ করেন ২১ রান, তানভীর ২ ওভারে দেন ৪০।

 

 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন