শিশুদের কিডনি সমস্যার কারণ জানেন?

২ সপ্তাহ আগে
শরীর থেকে দূষিত রেচন পদার্থ বের করে দেয়া এবং রক্ত পরিষ্কার রাখার কাজ করে কিডনি। কিডনির অসুখের বড় বিভ্রান্তি হলো, এর সমস্যা ধরা পড়তে সময় নেয়। যখন ধরা পড়ে, তখন হয়তো অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছে। এটি শিশু এবং বয়স্ক উভয় ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।

ছোটদের ক্ষেত্রে মূলত স্ট্রাকচারাল, জেনেটিক, ইনফেকশন এবং ইমিউনোলজিক্যাল কারণে কিডনির সমস্যা দেখা দেয়। কারও হয়তো একটি কিডনি নেই, এটি স্ট্রাকচারাল সমস্যা। জেনেটিক বা জন্মগত সমস্যাগুলো ধরা পড়তে সময় নেয়।


ছোটদের সবচেয়ে চেনা সমস্যা হলো ইউরিনারি ট্র্যাক ইনফেকশন (ইউটিআই)। এটা বিভিন্ন বয়সের শিশুর, বিভিন্ন কারণে হতে পারে। একদম ছোট শিশুদের অনেক সময়ই ডায়াপার থেকে সংক্রমণ হয়। মেয়েদের মধ্যে ইউরিন সংক্রমণের প্রবণতা বেশি। মলের জায়গা থেকে নোংরা প্রস্রাবের পথে ঢুকে যেতে পারে। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাটা জরুরি।

 

আরও পড়ুন: ৩ রোগে বেশি ভোগেন ও মারা যান পুরুষরা, বলছে গবেষণা

 

অনেক সময়ই ছোটরা টয়লেট চেপে রাখে, সেটাও ইনফেকশনের একটা কারণ। আরও একটা সমস্যা হলো কনস্টিপেশন। পানি কম খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হয় আবার প্রস্রাবের ইনফেকশন হয়—এগুলো একে অপরের সঙ্গে যুক্ত।


১. প্রস্রাব বেরোনোর পথে সমস্যা: অনেক সময় প্রস্রাবের রাস্তায় ব্লক থাকে। এতে ইউরিন পাস হতে সমস্যা হয়, চাপ পড়ে কিডনির ওপর। অনেকের কিডনি থেকে ইউরিন বেরোনোর পথ সরু থাকে। একে হাইড্রোনেফ্রোসিস বলা হয়ে থাকে। ছেলেদের যেমন পেনিসের মধ্যে পস্টিরিয়র ইউরিথাল ভাল্ব থাকে। পিইউভি থাকলে ইউরিন পাস হতে সমস্যা হয়। এগুলোর জন্যও ইনফেকশন হয়। এই রোগ যত তাড়াতাড়ি ধরা পড়বে, কিডনির ক্ষতি তত কম হবে। তবে সমস্যা থেকে রেহাই পেতে সার্জারিই একমাত্র উপায়।


২. ইউরিন উল্টোপথে যাওয়া: খুব ছোট শিশুদের যদি বারবার ইউটিআই হয়, তাহলে রিফ্ল্যাক্সের সমস্যার সম্ভাবনা থাকে। চিকিৎসকরা এটিকে ভেসিকিউরিটেরাল রিফ্ল্যাক্স বলে থাকেন। এ সমস্যায় ইউরিন উল্টো রাস্তায় অর্থাৎ ব্লাডার থেকে আবার কিডনিতে ফেরত যায়। এটা বারবার হলে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ভয় থাকে। রিফ্ল্যাক্সের সমস্যা সাধারণত জন্মগত হয়। যে ভাল্ব মেকানিজম ব্লাডার থেকে প্রস্রাবকে উল্টো পথে যেতে দেয় না, তাতে যদি গোলমাল থাকে, তা হলে রিফ্ল্যাক্সের মতো সমস্যা দেখা যায়। এ ক্ষেত্রেও সার্জারির মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা হয়।


৩. শরীর থেকে প্রোটিন বেরিয়ে যাওয়া: শিশুদের কিডনির জেনেটিক বা জন্মগত সমস্যার মধ্যে কনজেনিটাল নেফ্রোটিক সিনড্রোম একটি বড় অসুখ। এ ক্ষেত্রে কিডনি দিয়ে প্রোটিন বেরিয়ে যায়। আমাদের কিডনির মধ্যে ছাঁকনির মতো কিছু ফিল্টার আছে। এই রোগে ওই ছাঁকনির ফুটোগুলো বড় হয়ে যায়। তার ফলে ওর মধ্য দিয়ে প্রোটিন বেরিয়ে যায়। এতে শরীর ফুলে যায়, জল জমে যায় শরীরে। চিকিৎসকদের মতে, সাধারণত শিশুর জন্মের মাস দেড়েক পর থেকে এ সমস্যা দেখা যায়। এটি ক্রনিক ডিজিজ, বারবার ফিরে আসে। অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে অসুখের প্রতিকার করা সম্ভব। তবে তাতে যদি না সারে, তাহলে সার্জারির পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।

 

আরও পড়ুন: ডায়াবেটিসের নতুন ধরন টাইপ ৫, বেশি আক্রান্ত শিশুরা


৪. ইমিউনোলজিক্যাল কারণ: অনেক সময়ে ইমিউনোলজিক্যাল কারণে কিডনিতে সমস্যা দেখা দেয়। শরীরের অন্য কোনো অসুখের প্রভাব কিডনির ওপর পড়তে পারে। কিডনির কোনো সমস্যায় দেখা হয় ইনফেকশনটা অ্যালার্জিক কি না। কোনো ড্রাগের কারণে হচ্ছে কি না। অন্য কোনো অসুখের জন্য হয়তো কিছু নেফ্রোটক্সিক ড্রাগস ব্যবহার হয়েছে, তার জন্য কিডনির সমস্যা দেখা দিল, এমনটাও হয়ে থাকে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন