বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুরে নড়াইল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শারমিন নিগার এ রায় ঘোষণা করেন। তবে রায়ের সময় আসামি জোবাইদা বেগম আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।
নড়াইল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট এস এম আব্দুল হক সময় সংবাদকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত জোবাইদা বেগম লোহাগড়া উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের গিলাতলা গ্রামের সজীব কাজীর স্ত্রী এবং কুমিল্লার দেবীদ্বার থানার কুরসাপ গ্রামের জামাল শেখের মেয়ে।
২০২০ সালে সজীব কাজীর সঙ্গে তার প্রথম স্ত্রী রুপা খাতুনের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। সেই সংসারে থাকা সন্তান ইয়াসিন (৫) ও নুসরাত (৩) থাকতেন দাদা-দাদীর কাছে। পরবর্তীতে সন্তানদের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে সজীব দ্বিতীয়বার বিবাহ করেন জোবাইদা বেগমকে।
২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি সকালে শিশু নুসরাতকে তার বড় ভাই মারধর করলে সে কান্না শুরু করে। কান্না থামাতে সৎ মা জোবাইদা তাকে ঘরের একটি কক্ষে নিয়ে যান। কিন্তু কান্না থামছিল না দেখে তিনি নুসরাতের মুখ চেপে ধরেন। এতে শ্বাসরোধ হয়ে শিশুটির মৃত্যু হয়।
শিশুটির মৃত্যু নিশ্চিত হলে, জোবাইদা তার মরদেহ একটি কম্বলে মুড়িয়ে বারান্দার খাটে রেখে দেন। পরে শিশুটির দাদা বাড়ি ফিরে ডাকাডাকি করলে তাকে মৃত অবস্থায় খুঁজে পান দাদী পান্না বেগম।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন
পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে জানালে, পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ উদ্ধার করে এবং শিশুটির সৎ মা ও বাবা দুজনকেই আটক করে।
তবে তদন্তে বাবার সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেই জোবাইদা হত্যার দায় স্বীকার করেন। ঘটনার পরদিন নিহতের দাদা আবুল খায়ের বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন এবং আসামিকে আদালতে হাজির করলে সেখানে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন জোবাইদা।
মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলাকালীন জামিনে মুক্তি পান জোবাইদা বেগম। তবে রায় ঘোষণার দিন তিনি আদালতে হাজির হননি। আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
এ বিষয়ে পিপি এস এম আব্দুল হক বলেন, 'এটি নির্মম একটি হত্যাকাণ্ড। আদালত যথাযথ প্রক্রিয়ায় সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আসামিকে দণ্ড দিয়েছেন। আমরা চাই দ্রুত তাকে গ্রেফতার করে রায় কার্যকর করা হোক।'