শিশু আইনের ফাঁক ফোকরে সুযোগ নিচ্ছেন অপরাধীরা

৬ দিন আগে
শিশু তোমার বয়স কত? বাংলাদেশে এ প্রশ্নের উত্তরে শিশু তো বটেই বড়রাও আইনত ঘাবড়েই যাবেন। কারণ আন্তজার্তিকভাবে আঠারো বছর বয়স পর্যন্ত সবাই শিশু। দেশের শিশু আইনও ১৮ বয়স হিসেবে গণ্য করলেও শ্রম আইন, দণ্ডবিধি, নারী ও শিশু নির্যাতন রোধ আইন কিংবা বাল্যবিবাহ রোধ আইন-প্রতিটিতেই শিশুর সংজ্ঞা আলাদা। এতে আইনের ফাঁক ফোকরে সুযোগ নিচ্ছেন অপরাধীরা। শিশুরাও পাচ্ছে না তাদের প্রাপ্য অধিকার।

‘এসেছে নতুন শিশু, তাকে ছেড়ে দিতে হবে স্থান’ কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যেরে এই ভাবনা ছাড়াও রাষ্ট্র শিশুর জন্য বরাদ্দ রেখেছে বেশ কিছু আইন। বিশ্বে অন্য কোথাও শিশুর বয়স সংক্রান্ত সংজ্ঞায় এত বৈপরিত্য না থাকলেও বাংলাদেশে শিশুর বয়স নিয়ে আছে ভিন্ন ভিন্ন আইনি ব্যাখ্যা। বাংলাদেশ যেহেতু জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদ সাক্ষর করা রাষ্ট্র। তাই শূন্য থেকে আঠারো বছর বয়স পর্যন্ত সবাই শিশু।

 

কিন্তু ফুল বিক্রেতা বা শিশুশ্রমে যুক্ত এইসব শিশুর বেলায় এগিয়ে আসে শ্রম আইন। সেই আইন বলছে শিশুর বয়সসীমা ১৪ বছর। অর্থাৎ ১৪ বছরের নিচে সকলেই শিশু। একই বয়সসীমা নির্যাতিত শিশুর বেলাতেও। কেন না বিদ্যমান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ১৪ পেরিয়ে গেলে কেউ আর শিশুর সংজ্ঞায় পরবেন না।

 

সংবিধানের দণ্ডবিধি বলছে, ৯ বছর বছর বয়সের নিচের কেউ অপরাধ করলে তাকে দায়মুক্তি দেয়া যাবে। তবে ১২ বছর বয়স পর্যন্ত সীমিত দায় এবং ১২ বছরের বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে অপরাধ করলে নিতে হবে পূর্ণ দায়। অর্থাৎ সংবিধানে শিশুর বয়স নির্ধারিত-১২। বাল্যবিবাহ রোধ আইনে প্রাপ্তবয়স্ক হতে ছেলে আর মেয়ের বেলায়ও রাখা হয়েছে আলাদা বয়সসীমা।

 

সরকারি-বেসরকারি বিনোদন কেন্দ্র থেকে শুরু করে যানবাহনে ভ্রমণেও শিশুদের বয়সের এমন তফাৎ চোখে পড়ে হরহামেসাই। তাই তো প্রায় প্রতিটি সুবিধাবঞ্চিতের আইনের জানতে চাওয়া এমন ভিন্নতায় কতটা রক্ষিত হচ্ছে শিশুর অধিকার?

 

বাল্যবিবাহ রোধ আইনে প্রাপ্তবয়স্ক হতে ছেলে আর মেয়ের বেলায়ও রাখা হয়েছে আলাদা বয়সসীমা।

শিশুদের নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো বলছে রাষ্ট্রকেই নিশ্চিত করতে হবে শিশুর প্রাপ্য অধিকার।

 

শিশু অধিকার কর্মী ফরহাদ হোসেন বলেন, যেহেতু সে শিশু অর্থাৎ তাকে দেখভাল করতে হবে শিশু আইন দিয়ে। যদি এটি কেউ নানাভাবে ট্রিট করেন, কেউ করে থাকে তাহলে এটা আইনের ভায়োলেশন ছাড়া অন্য কিছু না।    

 

সেফ চিলড্রেন হোমের সত্ত্বাধিকারী ওয়াহিদা বানু বলেন, অর্থনৈতিক সাপোর্টটা দিয়ে আইনের সহায়তা দিতো তাহলে কিন্তু আমাদের দেশের শিশুরাও ন্যায্যতার ভাগটা পেত।  

 

দেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখেই এমনভাবে করা হয়েছে শিশুর আইন সংজ্ঞায়ন বলছেন আইনজীবী।

 

আপিল বিভাগের আইনজীবী এ এম জামিউল হক ফয়সাল বলেন, সবগুলো আইনকে একসাথে করলে দেখা যাবে, তাহলে কিন্তু এখানে কোনো সমস্যা নেই। আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে শিশুর বয়স ১৮ সেটা আমাদের জন্য উপযুক্ত, সেক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই।    

 

এ বিষয়ে জানতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদের সাথে দফায় দফায় যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে সময় স্বল্পতায় তিনি কথা বলতে রাজি হননি।

 

 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন