শারীরিক সম্পর্ক না করলে নির্যাতন করতেন ডিসি আশরাফ, অভিযোগ ভুক্তভোগী গৃহবধূর

৩ সপ্তাহ আগে
শারীরিক সম্পর্ক করতে অস্বীকৃতি জানানোয় এক গৃহবধূকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে। অভিযোগকারী নারী জানিয়েছেন, এক বছরেরও বেশি সময় ধরে নানা কৌশলে তাকে প্রলোভন, ভয়ভীতি এবং ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে নির্যাতন করে আসছিলেন এই জেলা প্রশাসক।

অভিযুক্ত মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন ২০২৪ সালের ৩ নভেম্বর শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগ দেন। তিনি ২৭তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা এবং এর আগে নিউরো ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী ট্রাস্ট-এ পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।


অভিযোগকারী গৃহবধূর বাবার বাড়ি টাঙ্গাইল শহরের সাবালিয়া এলাকায়। সম্পর্ক অনুযায়ী তিনি জেলা প্রশাসক আশরাফ উদ্দিনের শালার স্ত্রী। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। গৃহবধূ জানান, আগে সংসার ভালোই চলছিল। কিন্তু প্রায় এক বছর আগে জেলা প্রশাসক আশরাফ উদ্দিন তার প্রতি ‘কুনজর’ দিলে জীবন বদলে যায়।


ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ, প্রথমে তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেন ডিসি আশরাফ। রাজি না হওয়ায় ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার হুমকি দেন এবং বিভিন্ন কৌশলে মানসিক চাপে ফেলেন। পরে তাকে শারীরিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করেন। এমনকি আশরাফ উদ্দিন তার স্ত্রীকে দিয়ে ফোন করিয়ে গৃহবধূকে নিজের কাছে ডেকে নিতেন। একপর্যায়ে ১২টি কোরআন শরীফ স্পর্শ করে বিয়ের আশ্বাসও দেন আশরাফ, তবে সেই আশ্বাসের কোনো বাস্তবতা ছিল না।


ভুক্তভোগী নারী বলেন, 'বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমাকে একাধিকবার শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। আমি রাজি না হলে তিনি ঘুমের ওষুধ বা নেশাজাতীয় কিছু খেয়ে আমাদের বাসার নিচে পড়ে থাকতেন। এক সময় পরিস্থিতি এমন হয় যে, আমাকে আমার স্বামীকে তালাক দিতে বাধ্য হতে হয়।'


আরও পড়ুন: নারীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ ভিডিও ভাইরাল নিয়ে মুখ খুললেন শরীয়তপুরের ডিসি


তিনি অভিযোগ করেন, জেলা প্রশাসক আশরাফ উদ্দিন তাকে বিভিন্ন সময় প্রাণনাশের হুমকিও দিয়েছেন। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আগামী সোমবার (২৩ জুন) আদালতে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন নির্যাতিতা।


এ বিষয়ে মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল করা হয়, তবে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।


ঘটনার বিস্তারিত জানতে শরীয়তপুর জেলা প্রশাসনের কোনো কর্মকর্তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে অভিযোগের বিষয়ে প্রশাসন কোনো তদন্ত শুরু করেছে কি না, তাও এখনো জানা যায়নি।


এই ঘটনায় এলাকায় এবং প্রশাসনিক মহলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সমাজের বিভিন্ন মহল দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছেন।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন